Advertisement
E-Paper

স্টুডিওর বিদ্যুৎ, জল বন্ধ করতে চায় বন্দর

পি-৫১ হাইড রোডের জমিতে জল ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলে সিইএসসি এবং কলকাতা পুরসভাকে বুধবার চিঠি দিল বন্দর। ফলে তারাতলার ওই জবরদখল করা জমি নিয়ে ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের উপর চাপ আরও বাড়ল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৫

পি-৫১ হাইড রোডের জমিতে জল ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলে সিইএসসি এবং কলকাতা পুরসভাকে বুধবার চিঠি দিল বন্দর। ফলে তারাতলার ওই জবরদখল করা জমি নিয়ে ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের উপর চাপ আরও বাড়ল।

রবিবার সকালে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ওই জমি দখলে নেওয়ার পরে ভেঙ্কটেশের তরফে সেটি পুনর্দখল করা হয়। সোমবার থেকে ওই স্টুডিওয় শ্যুটিংও চলছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে আইনি মোকাবিলায় যাবে বলে ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যেই তাদের মালিকানাভুক্ত অন্যান্য জমি, অর্থাৎ গঙ্গাতীরের মতো লোভনীয় লোকেশনে ভেঙ্কটেশকে এর পরে আর শ্যুটিং করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্দর। এ বার তারা পি-৫১ হাইড রোডের জল আর বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করতে চায়।

বন্দর কর্তাদের বক্তব্য, ‘‘ওই জমি এখন অনধিকার প্রবেশকারীর দখলে। ওখানে জল বা বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কোনও প্রয়োজন নেই। তাই এই সংক্রান্ত নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।’’ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ সিইএসসি এবং কলকাতা পুরসভাকে বিদ্যুৎ ও
জলের সংযোগ কেটে দেওয়ার অনুরোধ করেছে। বন্দরের মুখপাত্র সঞ্জয়কুমার মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আইন মেনে যে সব সংস্থা লিজে জমি নেয়, তাদের ক্ষেত্রেই জল-বিদ্যুৎ সংযোগের এনওসি দেওয়া হয়। কোনও জবরদখলকারীকে তা দেওয়া সম্ভব নয়।’’

কিন্তু ওই স্টুডিওগুলিতে যে সিরিয়ালের শ্যুটিং হচ্ছে, সেখানে বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ কেটে দেওয়া অমানবিক নয় কি? বন্দর মুখপাত্রের জবাব, ‘‘সরকারি সংস্থা আইন মেনে চলে। বেআইনি দখলদারদের দায়িত্ব আইন মোতাবেক বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।’’

তবে বন্দরের অনুরোধ মেনে সিইএসসি এবং পুরসভা পি-৫১ প্লটে তাদের পরিষেবা বন্ধ করবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করেননি পুরসভা বা সিইএসসি-র কর্তারা। এ ব্যাপারে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘বন্দরের এ রকম কোনও চিঠি এখনও আমার কাছে পৌঁছয়নি। চিঠি দেখে আইন মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ সিইএসসি-র এক কর্তাও বলেন, ‘‘বন্দরের চিঠি পেয়েছি। আইনকানুন খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

বন্দর সূত্রের খবর, ১৮৫ কাঠার ওই জমির ১০০ কাঠা জবরদখল করে পাঁচটি স্টুডিও চালাচ্ছে ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। ওখানে বেশ কয়েকটি টিভি সিরিয়ালের শ্যুটিং চলছে। কিন্তু তার জন্য বন্দরকে এক পয়সাও ভাড়া দেয় না ওই প্রযোজক সংস্থা। ওই জমিতে যে স্টুডিও চলছে সরকারি ভাবে তার কোনও খবরও বন্দরের কাছে নেই। বন্দরের দাবি, ১৯৬৯ সালে অ্যাভারি ইন্ডিয়া লিমিটেডের সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তিতে ওই জমি দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে সেই চুক্তি শেষ হয়। তার পর বন্দর জমিটি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। তখনই জানা যায়, ওই জমিতে এলএমজে কনস্ট্রাকশন এবং ভেঙ্কটেশ ফিল্মস বসে গিয়েছে। এই বেআইনি দখলদারদের সরাতে ১১ বছর ধরে আইনি লড়াই চলছে। তার পর মিলেছে উচ্ছেদের আদেশ।

গত রবিবার সেই আদেশই কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু ভেঙ্কটেশের লোকজন তিন ঘণ্টার মধ্যেই জমিটি আবার দখল নিয়ে নেয়। এমতাবস্থায় দিন কয়েকের মধ্যেই পি-৫১ প্লটটি ফের নিজেদের দখলে নিতে যেতে পারে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে জাহাজ মন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেতও মিলেছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত একটি ‘রিট অব ম্যান্ডামাস’-এর শুনানি রয়েছে। ওই দিন বন্দররবিবারের ঘটনা নিয়ে একটি অতিরিক্ত হলফনামা জমা দেবে। বিচারপতির কাছে ফের পুলিশি সহযোগিতার আদেশ চাওয়া হবে।

Port authority Studia tollygunge police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy