মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা মেনে বিধানসভায় সরকার পক্ষের উপ মুখ্য সচেতক পদ তৈরির জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেল।
বিধানসভার কার্যবিধিতে এমন পদের কোনও অস্তিত্ব নেই। এই পদে আগে কেউ কখনও ছিলেনও না। কিন্তু গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই পদের জন্য বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের নাম ঘোষণা করেন। সংস্থানহীন পদে কী ভাবে নিয়োগ
হবে, তা নিয়ে শাসক শিবিরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। অধিবেশন শুরু হলে পদটি তৈরির জন্য বিধানসভার কার্যবিধি সংশোধনের প্রস্তাব আনার চিন্তাভাবনাও চলছিল। তার আগে সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বুধবার উপ মুখ্য
সচেতক পদ তৈরি তাপসবাবুকে নিয়োগ করা হল।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এই মর্মে নির্দেশিকা আসার পরেই এ দিন পরিষদীয় দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিধানসভা সূত্রের খবর। এবং তার পরেই তাপসবাবুকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। যদিও নিয়োগপত্র পাওয়ার পরে এ দিন রাত পর্যন্ত ফোন বা এসএমএসে যোগাযোগ করেও তাপসবাবুর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানান, তাঁর দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
শাসক দলের বিধায়ককে পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য এমন বিজ্ঞপ্তি জারি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। আলোচনায় উঠে আসছে মমতা জমানার প্রথম পর্বে পরিষদীয় সচিব পদে নিয়োগের ঘটনাও। আইনত সংস্থান না থাকা সত্ত্বেও পরিষদীয় সচিব পদে নিয়োগ করে শাসক দলের এক ঝাঁক বিধায়ককে প্রতিমন্ত্রীর সমতুল মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পরিষদীয় সচিব পদটি অসাংবিধানিক বলে কলকাতা হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল। সেই মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
সেই দৃষ্টান্তের পরেও উপ মুখ্য সচেতক পদে নিয়োগের ঘটনায় বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এ তো জন্মের আগে অন্নপ্রাশনের মতো! আগেই ঘোষণা হল তাপসবাবু ওই পদে বসবেন। তার পরে পদ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু
হল! বিধানসভায় এখন এমন আজব কাণ্ডই ঘটে!’’