প্রদীপ সরকার।
তিনি মাঠের মানুষ। ক্রীড়া প্রেমী, ক্রীড়া সংগঠক। খেলার মাঠই তাঁকে শিখিয়েছে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলার অঙ্ক।
সেই অঙ্কেই খড়্গপুরে পাশা পাল্টে দিলেন প্রদীপ সরকার। একদা ‘চাচা’র শহর, পরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘তালুক’ খড়্গপুরে এই প্রথম তৃণমূলের প্রদীপ জ্বলল।
খড়্গপুর বরাবর তৃণমূলের শক্ত ঠাঁই। এ বারও লড়াই ছিল কঠিন। তবে তৃণমূলের অন্দরে একটা স্বস্তি ছিল, একে তো শহরে দলের হাল ধরেছেন শুভেন্দু অধিকারী। দ্বিতীয়ত পুরপ্রধান প্রদীপের নিজস্ব জনপ্রিয়তা। এই জনপ্রিয়তা একটা সময় তাঁকে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বন্ধু করে তুলেছিল। রেলশহরে টিটি-র কাজ করা ধোনি প্রদীপ আয়োজিত টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। ধোনির বায়োপিকেও দেখা গিয়েছে প্রদীপকে। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলে স্টেডিয়াম তৈরির ব্যবস্থা করেছেন। প্রতি বছর পুরসভা আয়োজিত ক্রিকেট টুর্নামেন্টে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সব ক্লাবকে।
এই জনপ্রিয়তার প্রমাণ রাজনীতির ময়দানে আগেই পেয়েছিলেন প্রদীপ। ২০১৫ সালে প্রথম ভোটে জিতেই খড়্গপুরের পুরপ্রধান হন। এ বার বিধানসভায় যাওয়া পাকা করলেন।
রেলশহর প্রদীপকে চেনে খোকন নামে। শুধু খেলার মাঠ নয়, বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠন, ক্লাব, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ দীর্ঘ দিনের। সেই সূত্রে ভোটের মাঠেও যুব সমাজকে পাশে পেয়েছেন, পেয়েছেন মহিলাদের ভোট। প্রদীপ মানছেন, “রাজনীতির লোকের আগে আমাকে শহরের মানুষ ক্রীড়াপ্রেমী হিসাবে চেনে। শুধু ক্রিকেট-ফুটবল নয়, খড়্গপুরে রথ, রাবণপোড়ার মতো শহরের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের সঙ্গে আমি নিজেকে যুক্ত রেখেছি। এতে সব দলের যুবকেরা আমাকে বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছেন।”
পুরপ্রধান হিসাবে কাজেও শহরে দাগ কেটেছেন প্রদীপ। মাফিয়া ভয়ে ভীত শহরে ঢালাও আলো বসেছে। নির্বাচনী স্লোগানেও রব উঠেছে, ‘হিংসা-দ্বেষের অন্ধকারে, দিদির প্রদীপ ঘরে-ঘরে’। তাঁর হাত ধরেই শ্মশানঘাটের সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। এ সব অঙ্কেই বহু ভাষাভাষির শহরে ‘বেটা’ থেকে ‘নেতা’ হয়ে উঠেছেন প্রদীপ। তাঁর কথায়, “খড়্গপুরের মানুষ আমাকে বেটা হিসাবে বিশ্বাস করেছেন। বুঝেছে এই ছেলেটা জিতলে কাজ করবে।’’ মানুষের সেই আস্থাকে কুর্নিশ করেই প্রদীপের আশ্বাস, ‘‘আমি মানুষের বেটা হয়েই থাকব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy