Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বর্ধমানে আরবি পড়ছে, বাড়ির লোকেদের জানিয়েছিল হাকিম

ছেলে বর্ধমানে রিকশা চালায়। কাজের ফাঁকে আরবি ভাষার পাঠ নেয়। শুক্রবার পর্যন্ত তেমনটাই জানতেন বীরভূমের মহম্মদবাজারে দেউচা গ্রামের আব্দুল হাকিমের বাড়ির লোকজন। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ছেলের জড়িত থাকার অভিযোগ শুনে বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁরা। হাকিমের স্ত্রী আলিমাবিবির পরিবারও ভেবে পাচ্ছে না, মেয়ের নাম কী ভাবে বিস্ফোরক তৈরির অভিযোগে জড়াল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৪
Share: Save:

ছেলে বর্ধমানে রিকশা চালায়। কাজের ফাঁকে আরবি ভাষার পাঠ নেয়। শুক্রবার পর্যন্ত তেমনটাই জানতেন বীরভূমের মহম্মদবাজারে দেউচা গ্রামের আব্দুল হাকিমের বাড়ির লোকজন। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ছেলের জড়িত থাকার অভিযোগ শুনে বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁরা। হাকিমের স্ত্রী আলিমাবিবির পরিবারও ভেবে পাচ্ছে না, মেয়ের নাম কী ভাবে বিস্ফোরক তৈরির অভিযোগে জড়াল।

খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণে জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আব্দুল হাকিম। তাঁর স্ত্রী আলিমা এবং ওই ঘটনায় প্রাণ হারানো সাকিল আহমেদের স্ত্রী রাজিয়া বিবি এখন পুলিশের হেফাজতে। দেউচা গ্রামের প্রাক্তন বাসিন্দা হাকিমের বাবা মহম্মদ শাহজামাল স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। রবিবার বিকেলে বাড়ি ফিরে অন্য ছেলেদের কাছে ঘটনা শোনেন তিনি।

শাহজামাল জানান, ২০০৭ সালে মাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণ হয়ে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের মামারবাড়িতে চলে যায় তাঁর মেজো ছেলে হাকিম। বছর তিনেক পরে গ্রামে ফিরে মুদির দোকান করে। কিন্তু বছরখানেক পরেই সে নিখোঁজ হয়। পরে তাঁরা জানতে পারেন, হাকিম বর্ধমানে রিকশা চালায়। শাহজামাল বলেন, “বর্ধমানে গিয়ে ওকে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু ও বলল, আরবি পড়ছে। তাই আবার সেখানে ফিরল।”

হাকিমের স্ত্রী আলিমা বিবির বাড়ি মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বছর চারেক আগে বর্ধমানের নিগুনচটিতে মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয় আলিমাকে। সেই সময়েই তার সঙ্গে হাকিমের পরিচয় ও বিয়ে। তার বাবা সোলেমান শেখ জানান, বলেন, “মেয়ে বেলডাঙায় বোরখা তৈরির দোকানে কাজ করত বলে জানতাম। ওর নাম কী করে এ রকম ঘটনায় জড়াল, বুঝছি না!”

রাজিয়া বিবির নাম বিস্ফোরণ-কাণ্ডে জড়ানোয় চূড়ান্ত অস্বস্তিতে তার বাবা নদিয়ার করিমপুরের বরবাকপুরের বাসিন্দা আজিজুল শেখ। খবর পাওয়ার পর থেকেই বাড়িছাড়া তিনি। তাঁর দাবি, বছর চারেক আগে গ্রামে এসে শ্বশুরকে বাবা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভোটার কার্ড তৈরি করে তাঁর জামাই সাকিল আহমেদ। সেই সূত্রেই বিস্ফোরণের পরে পুলিশ গিয়েছিল আজিজুলের বাড়িতে। তার পর থেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া আজিজুলের দাবি, ২০০৭-এ ফেরিওয়ালা হিসেবে তাঁদের এলাকায় আসা সাকিল নিজেকে কলকাতার লোক বলে পরিচয় দেয়। ভোটার-কার্ড বানানোর পর থেকে মেয়ে-জামাই আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না।

খাগড়াগড়-কাণ্ডে আর এক মৃত স্বপন মণ্ডল ওরফে সুবহানের পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বর্ধমানের পুলিশ তার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের উত্তরপাড়ায় বলে দাবি করছে। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “এ বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য নেই। খোঁজ চালাচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE