সরকারপন্থী চিকিৎসক ও পড়ুয়াদের বাঁচান! এই মর্মে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তা থেকে শুরু করে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ই-মেল করা হয়েছে। চিঠিতে স্বাক্ষরকারীর জায়গায় লেখা ‘কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হসপিটাল, কল্যাণীর পড়ুয়া ও চিকিৎসকেরা’।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চিঠির বক্তব্য হল— আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার পরে চিকিৎসক ও পড়ুয়াদের একাংশ সরকারপন্থীদের উপরে সামাজিক ও প্রশাসনিক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের মানহানি করা হচ্ছে। কলেজ, হাসপাতাল ও হস্টেল থেকে তাঁদের বহিষ্কার করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা প্রাণের ভয় পাচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা ছাড়াও তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, কুণাল ঘোষ প্রমুখের কাছে ওই ই-মেল পাঠিয়ে নিরাপত্তার জন্য হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছিল।
ঘটনাচক্রে, ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হুমকি-চক্র ও তোলাবাজিতে অভিযুক্ত ৪০ জন চিকিৎসক-পড়ুয়াকে জেএনএম থেকে ছ’মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এমন পদক্ষেপের আশঙ্কাতেই ই-মেল করা হয়েছিল বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “এ রকম চিঠি এসেছে বলে জানি। ওই ৪০ জনকে ক্যাম্পাস ছাড়তে বলা হয়েছে, পঠনপাঠনের ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ-সহ অভিযোগ রয়েছে, তাদের ব্যাপারে জেএনএমের অধ্যক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন।”
জেএনএমে হুমকি-প্রথার ‘মাথা’ বলে অভিযুক্ত, তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা অভীক দে-র অনুগত মহম্মদ শেখ অখিল এবং তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটি’র বিচিত্রকান্তি বালা বহিষ্কৃত ৪০ জনের অন্যতম। একাধিক বার ফোন করা হলেও তাঁরা ধরেননি। জেএনএমের অধ্যক্ষ মণিদীপ পাল বলেন, “এই ধরনের চিঠির কথা জানা নেই।” কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, “কেউ এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে, শাস্তি পাক। তবে স্পর্শকাতর ঘটনার গভীর প্রতিক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে কেউ যদি আক্রোশ চরিতার্থ করেন, তা দুর্ভাগ্যজনক। আমার কাছে কয়েক জন এসেছিলেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিশ্চয় বিষয়টি দেখবেন।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)