অনাস্থার চিঠি জমা দিতে দলের নেতাদের নিয়ে দার্জিলিং পুরসভায় গিয়েছিলেন। সেখানেই গ্রেফতার হলেন বিমল গুরুংপন্থী মোর্চার মুখপাত্র বিপি বজগাই। তার পরে নতুন করে ‘পুলিশ গো ব্যাক’ স্লোগান উঠল পাহাড়ে। যেমনটা শোনা গিয়েছিল ২০১৭ সালের আন্দোলনের সময়ে। পর্যটকে ঠাসা পাহাড়ে আবার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। বিমলপন্থী নেতারা তাঁদের সমর্থকদের শান্ত হতে বলার পাশাপাশি বলছেন, হেরেও শিক্ষা হল না বিনয় তামাং ও তৃণমূলের! অন্য দিকে বিনয় ও তৃণমূলের কথায়, পুলিশ নিজের কাজ করেছে, এতে তাদের কিছু করার নেই।
লোকসভা ও বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পরে বিমলপন্থীদের নিশানায় এ বার পাহাড়ের পুরসভাগুলি। এ দিনই দার্জিলিং পুরসভার ৩১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৭ জন একযোগে অনাস্থার দাবি এনেছেন বর্তমান পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে। বিমলপন্থীদের আরও দাবি, ধীরে ধীরে কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিক পুরসভাও দখল করবেন তাঁরা। এই কাউন্সিলরদের নিয়ে দার্জিলিং পুরসভায় যাওয়ার পরেই বজগাইকে গ্রেফতার করা হয়। উপনির্বাচনের আগে সিংমারিতে মোর্চার সিল করে দেওয়া পার্টি অফিসে পতাকা লাগাতে গিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধরের অভিযোগে মামলা হয় বজগাই-সহ কয়েক জনের নামে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘সিংমারির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ যদিও গ্রেফতারির পর পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান বজগাই। পুলিশ ভ্যানে বসে তিনি বলেন, ‘‘অনৈতিক ভাবে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমার পরিবার ও দলের নেতা, কর্মীদের কাছে অনুরোধ, কেউ প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’
বজগাইকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ই পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিমলপন্থী মোর্চার নেতা-কর্মীরা। পুরসভার সামনে রাস্তাও অবরোধ করা হয়। পরে দার্জিলিং সদর থানার সামনেও বিক্ষোভ দেখান। খবর ছড়াতেই থানার সামনে জমা হন সমর্থকরা। কয়েক জন নেতা উত্তেজিত বক্তৃতাও দেন। থানায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নামে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পরিস্থিতি বদলাচ্ছে বুঝতে পেরে আসরে নামেন বিমল শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। উত্তেজিত নেতা-কর্মীদের বুঝিয়ে এলাকায় পাঠান তাঁরা। যুব মোর্চার কার্যকারী সভাপতি নমন রাই সংগঠনের তরফে লিখিত বিবৃতি দিয়ে শান্তি রাখার আবেদন করেন।
বিমলপন্থী মোর্চার কার্যকারী সভাপতি লোপসাং লামা বলেন, ‘‘বিনয় তামাং ও তৃণমূলের যৌথ পরিকল্পনায় আমাদের মুখপাত্রকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ বিনয় বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। কিছু লোক পাহাড়কে অশান্ত করতে চাইছে।’’ তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি এলবি রাই বলেন, ‘‘অপরাধীকে পুলিশ গ্রেফতার করবে, এটাই নিয়ম। দলের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।’’