Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Prophet row

Prophet row: ‘কাউকে কষ্ট দেওয়া ইসলামের শিক্ষা নয়’, শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিলেন পিরজাদা

এই দুঃসময়ে মুসলিম সমাজের বড় অংশের অভিভাবকপ্রতিম অনেকেই প্রতিবাদের ভুল পথের নিন্দায় সরব হয়েছেন।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২২ ০৬:২৯
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে অবরোধ, অশান্তি এবং সেই অজুহাতে বিভেদের রাজনীতির অপচেষ্টাই শেষ সত্য নয়। এই দুঃসময়ে মুসলিম সমাজের বড় অংশের অভিভাবকপ্রতিম অনেকেই প্রতিবাদের ভুল পথের নিন্দায় সরব হয়েছেন। গুটিকয়েকের উস্কানিতে বিক্ষিপ্ত বিশৃঙ্খলার মধ্যেও এই সঙ্কট পর্বই দ্ব্যর্থহীন ভাবে তুলে ধরছে জাতিধর্ম নির্বিশেষে মিলনের বার্তা। যেমন হুগলির ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা হুজুরেরা অনেকেই পশ্চিমবঙ্গবাসীর চোখ খুলতে সরব।

শনিবারই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে কিছু ভিডিয়ো-বার্তা। মুসলিম সমাজের মধ্যে থেকেই তাতে দেশের সংবিধান, আইন এবং সম্প্রীতির পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা স্পষ্ট। ধর্মাচরণের প্রকৃত অর্থ নিয়েও অনেকে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন। পিরজাদা সানাউল্লা সিদ্দিকীর একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বলা হচ্ছে, ‘‘আপনারা কি আইনকে হাতে তুলে দেবেন? আমাদের প্রিয় নবি কখনও অন্য লোককে কষ্ট দেননি। হাসপাতালের রোগী, ডাক্তারেরাও অবরোধে আটকে আছেন। সবাই মিলে জাতিধর্ম নির্বিশেষে দেশকে স্বাধীন করেছি, শান্তিতে বসবাসের জন্য। হাত জোড় করে বলি অবরোধ বন্ধ করেন, আমরা আইনের আওতায় লডাই করি। যিনি অন্যায় করেছেন, তিনি আইনত শাস্তি পান। গোটা দেশ পাশে আছে, বিশ্ব পাশে আছে। হিন্দু ভাইরাও নবিজীকে ভালবাসেন। অবরোধ সরিয়ে নিন। গাড়িগুলো যেতে দেন।’’ সানাউল্লা সাহেবের ভিডিয়ো বার্তাটি সতর্ক করছে, বিভেদকামীদের অপচেষ্টার বিষয়েও। বলা হয়েছে, ‘‘দেশের এক কুলাঙ্গারের জন্য পাঁচটা হিন্দুকে খারাপ বলতে পারি না। ঠিক তেমনই দু’এক জন মুসলিমের কুকীর্তির জন্য দশ জনকে খারাপ বলা যায় না।’’ পরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মুরুব্বিদের কাছে যা শিখেছি তাই বলেছি। বাংলার শান্তি, ভারতের শান্তি সব থেকে বড় কথা। বিভেদকামীদের বিরুদ্ধে আইনের পথেই লড়তে হবে।’’

পিরজাদা সাফেরি সিদ্দিকীও ফুরফুরা শরিফের তালতলা হাটের একটি সভায় শুক্রবার প্রতিবাদের ভুল পথ নিয়ে সতর্ক করেন। তিনি শনিবারও ফোনে বলেন, ‘‘প্রিয় নবি আমাদের ইমান, ইবাদত, ভালবাসা— সব কিছু। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথ অবরোধ করে মানুষকে কষ্ট দেওয়া কখনওই তাঁর শিক্ষা নয়। এ সবে উসকানি দিয়ে কেউ কেউ দেশে হিংসা সৃষ্টি করতে চাইছেন। আইন হাতে তুলে নেবেন না। সংবিধান নষ্ট করবেন না। এটা মানুষের কাজ নয়।’’

নাখোদা মসজিদের ইমাম শাফিক কাশমিও এ দিন বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘প্রতিবাদ করুন, হিংসার আশ্রয় নেবেন না। রাস্তাও আটকাবেন না। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু, মুসলিম মিলেমিশে থাকে। কেউ কাউকে কষ্ট দেবেন না।’’ কাশমি সাহেবের কথায়, ‘‘প্রিয় নবি বলেছেন, রাস্তায় পাথর থাকলে সরিয়ে দাও, তাতে পথচারীদের কষ্ট হবে। ইসলামের শিক্ষা কাউকে কষ্ট দিতে বলে না। আপনারা কেস করুন, এফআইআর করুন। এ সব করবেন না।’’ ফুরফুরা শরিফের হেজবুল্লা সংগঠনের সহসম্পাদক নুরুল ইসলামও বলেছেন, ‘‘মিছিলের নামে ধ্বংস ও মানুষের ক্ষতি ইসলাম অনুমোদন করে না।’’ বেঙ্গল ইমামস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহম্মদ ইয়াহিয়া শুক্রবারই ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, ‘‘আর যেন মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোনও আন্দোলন না হয়।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Prophet row
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE