Advertisement
E-Paper

‘তোমরা সবাই কেমন আছো?’সন্ন্যাসীর কানে এখনও ভাসছে ছেলের কণ্ঠস্বর

পরিবারের লোকজন তখনও চিন্তায়। কেন ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না? সেই সময়েই টিভি পর্দায় ভেসে ওঠে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিকনভয়ে ফিদায়েঁ হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:৫৭
নিহত সুদীপ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র

নিহত সুদীপ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র

তখন বিকেল ৩টে। নদিয়ার তেহট্টের হাঁসপুকুরিয়ার বাড়িতে ফোন করেছিলেন সুদীপ বিশ্বাস। ফোনের এপারে বাবা-মা-বৌদি।

সবে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘কেমন আছো তোমরা সবাই?’ আচমকাই সব স্তব্ধ। কেটে গেল লাইন।

তার পর থেকে সুদীপের ফোন বন্ধ। বারবার চেষ্টা করেও ফোন পাওয়া যাচ্ছে না।

কী হল? এমন তো হয় না? উৎকণ্ঠার মধ্যেইবিকেল গড়িয়ে যায় সন্ধ্যায়। পরিবারের লোকজন তখনও চিন্তায়। কেন ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না? সেই সময়েই টিভি পর্দায় ভেসে ওঠে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিকনভয়ে ফিদায়েঁ হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।

সকালে বাবা সন্ন্যাসী বিশ্বাসের সঙ্গে একবার কথা হয়েছিল। ছেলে সুদীপ সিআরপিএফে কর্মরত। পোস্টিং জম্মু-কাশ্মীরে। সুদীপতখন বাবাকে জানিয়েছিলেন, “জম্মু থেকে শ্রীনগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। ব্যারাকে গিয়ে খেয়ে নেব। চিন্তা কোরো না। তাড়়াতাড়়ি বাড়ি ফিরব।”বিকেলে কয়েকটামাত্রই কথা হয়। টিভিতে খবরটা দেখেই শিউরে ওঠেন সকলে। শুক্রবার দুপুরে সুদীপের জামাইবাবু সমাপ্ত বিশ্বাস বলেন, “তখনই যেন বুকটা ধড়াস করে উঠল। কী করব বুঝতে পারছিলাম না? ওর বাবা-মা, বোনকে সামলানোর চেষ্টা করছি। আর মনে মনে চাইছি যেন খারাপ খবরটা না আসে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত আজ সকাল ন’টা নাগাদ আমাদের কাছে সেই খারাপ খবরটাই এল। সুদীপ আর নেই। জঙ্গি হামলায় মারাগিয়েছে।”

আরও পড়ুন: আগামী বছরই অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু তার আগেই সব শেষ

আরও পড়ুন: হামলার মূল্য চোকাতেই হবে দোষীদের, হুঁশিয়ারি মোদীর, নাম না করে কড়া বার্তা পাকিস্তানকেও

উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর চাকরি পেয়ে গিয়েছিলেন সুদীপ। ছোটবেলা থেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। চার বছর আগে চাকরি পেয়েছিলেন।চাকরিজীবনের প্রথম দিকে জঙ্গলমহলে কর্মরত ছিলেন সুদীপ। কেরলে ট্রেনিংয়ের পর তাঁকে কাশ্মীরে পোস্টিং দেওয়া হয়। ডিসেম্বর মাসে বাড়়ি এসেছিলেন। তখন বিয়ের জন্য দেখাশোনাও চলে। কথাবার্তাও অনেক দূর এগিয়েছিল বলে জানান সমাপ্ত।

হাঁসপুকুরিয়ার বাড়িতে মা আরবাবা থাকেন। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন, সুদীপের মা মমতাদেবী। ছেলে যে আর নেই, বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না তিনি। মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছেন।একমাত্র বোন ঝুম্পার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কাঁদতে কাঁদতেতিনি এ দিন বলেন, ‘‘দাদার ইচ্ছে ছিল একটা ছোট্ট বাড়ি তৈরি করবে। তার পর বিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হল না।’’

সুদীপের উপরই নির্ভরশীল ছিল বিশ্বাস পরিবার। বাবা সন্ন্যাসী বার বার বলছেন, ‘‘ছেলের গলাটা এখনও কানে ভাসছে!’’

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

Pulwama Attack CRPF Tehatta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy