Advertisement
E-Paper

যুদ্ধের দাবি তুলছেন বাড়িতে আসা অতিথিরা, শান্তিতেই আস্থা মিতার

সোমবার বাবলুর ‘পারলৌকিক কাজ’ রয়েছে। রবিবার দিনভর তার প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত ছিলেন বাড়ির সকলে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৮
মিতা সাঁতরা।

মিতা সাঁতরা।

তিন দিনের চেনা ভিড়টা আর নেই। কিন্তু যুদ্ধের দাবিটা আছে। তবু সেই দাবির সামনে রবিবারও নিজের অবস্থান থেকে সরলেন না পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতা।

ফের যুদ্ধের বিপক্ষেই কথা বললেন সদ্য স্বামীহারা। শনিবার তাঁর স্বামীর কফিনবন্দি দেহ আসার আগেই মিতা বলেছিলেন, ‘‘যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়।’’ রবিবার ফের তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধে অনেক মায়ের কোল খালি হয়। সব বড় যুদ্ধের পরে সবাই তো শান্তির জন্য চেষ্টা করেন। সেটা তো যুদ্ধের আগেও করা যায়। সে কথা ভেবেই আমি শান্তির কথা বলেছি।’’

আজ, সোমবার বাবলুর ‘পারলৌকিক কাজ’ রয়েছে। রবিবার দিনভর তার প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত ছিলেন বাড়ির সকলে। তার মধ্যেও বাড়ির উঠোনে রাখা বাবলুর ছবিতে ফুল-মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে গিয়েছেন কেউ কেউ। এসেছেন আত্মীয়-পড়শিরাও। হাওড়া থেকে ভাই এবং স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন একটি চটকলের আধিকারিক মহেশপ্রসাদ আগরওয়াল। বাবলুর ছবিতে মালা দেওয়ার পরে মুষ্টিবদ্ধ ডান হাত উপরে তুলে বললেন, ‘‘প্রতিশোধ চাই। এখনই একটা যুদ্ধ হওয়া দরকার।’’ বাবলুর প্রতিবেশী গোবিন্দ প্রামাণিকের গলাতেও প্রতিশোধের সুর, ‘‘বড় না হলেও শত্রুকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার মতো ছোট যুদ্ধ দরকার।’’

অতিথিদের ওই দাবির কথা শুনেও অবশ্য হেলদোল নেই মিতার। তিন দিন ধরে তিনি অপরিচিতদের সঙ্গে দেখাই করেননি। শনিবার সন্ধ্যায় আসেন স্থানীয় ক্লাবের মাঠে স্বামীকে অন্তিম শ্রদ্ধা জানাতে। তার মধ্যেই জানিয়েছিলেন তাঁর যুদ্ধবিরোধী অবস্থানের কথা। কিন্তু কোন পথে জঙ্গি নিকেশ সম্ভব সে ব্যাপারে এ দিন তিনি আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন?

তবে, যে ভাবে যুদ্ধের জিগির উঠছে, তাতে তাঁর অবস্থান সমালোচনার মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও মিতা অকুতোভয়। তাঁর কথায়, ‘‘সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে আমার। যাঁরা আমার স্বামীর জন্য ভালবাসা-শ্রদ্ধা জানাবেন, তাঁরাই যদি এর পরে আমার সমালোচনা করেন, তার চেয়ে দুর্ভাগ্যের কিছু নেই। আমার বক্তব্য আমি জানিয়েছি। তবে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি সরকারের উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি। সরকারি সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই সকলের পক্ষে ইতিবাচক হবে।’’

এ দিন দুপুরে উলুবেড়িয়া পুরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর অসিরঞ্জন অধিকারীকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে আসেন সিআরপিএফ-এর এক অফিসার। তিনি জানান, অকালমৃত্যুজনিত সুযোগ-সুবিধাগুলি বাবলুর পরিবার যাতে দ্রুত পায়, সে বিষয়েই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সই করানোর জন্য তিনি এসেছেন। অসিরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘পুরসভা সব রকম ছাড়পত্রের ব্যবস্থা করছে।’’

বিকেলে বাবলুর স্মৃতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে মৌনী-মিছিল হয় এলাকায়। নেতৃত্বে ছিলেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়।

Pulwama Attack পুলওয়ামা পুলওয়ামা হামলা Terrorism Terror Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy