নিকাশি নালা উপচে নোংরা জল উঠে আসছে রাস্তায়। সেই নোংরা জল-কাদা মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে পথচারী থেকে স্কুল পড়ুয়াদের। মানবাজার পঞ্চায়েত অফিসের সামনে মুসলমান পাড়ার এই রাস্তা নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তাটির অবস্থার এমনই খারাপ যে এলাকার অন্যত্র মিছিল বের করলেও ওই রাস্তা এড়িয়ে যাচ্ছে ভোট প্রার্থী রাজনৈতিক দলগুলোও।
মানবাজারের বাজার এলাকা থেকে মুসলমান পাড়ায় রাস্তাটি ঢুকেছে। প্রায় ২০০ মিটার দীর্ঘ। কিন্তু নিকাশী ব্যবস্থা এলাকায় কার্যত নেই বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। আবর্জনায় নর্দমা বুজে গিয়েছে। ফলে নোংরা জল নর্দমা উপচে রাস্তায় পড়ছে। বছরের ১২ মাসই ওই রাস্তা জল-কাদায় ভরে থাকছে। বিপাকে পড়ছেন ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী বাসিন্দারা।
মানবাজার উর্দু প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা পিয়ালি সেন বলেন, “আমাদের স্কুলে ৪৫ জন পড়ুয়া রয়েছে। স্কুলে যাতায়াতের পথ ভীষণ নোংরা। নিকাশী নালা পরিষ্কার না হওয়ায় নালার মুখ বন্ধ হয়ে রাস্তার উপর নর্দমার জল আবর্জনা ছড়িয়ে পড়েছে। রোজ পড়ুয়াদের ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে কষ্ট হলেও রাস্তার হাল ফেরেনি।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের স্বাস্থ্যবিধি পড়ানোর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে।” ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া অর্পণ দাস জানায়, একদিন স্কুলে আসার পথে সে পা পিছলে পড়ে যায়। জামাকাপড় ও স্কুল ব্যাগে নোংরা লেগে থাকায় ওই দিন সে আর স্কুল করতে পারেনি। অন্য পড়ুয়া জুবেদা খাতুন, শেখ আরশাদের কথায়, “পিছলে যাওয়ার ভয়ে ওই রাস্তায় পা টিপে টিপে যাতায়াত করতে হয়।”
এলাকার বাসিন্দা শেখ রফিক, শেখ হাসমত বলেন, “২০০ মিটার দূরে মানবাজার পঞ্চায়েত অফিস। এই রাস্তার নিকাশী নালা পরিষ্কার করার দাবিতে আমরা কয়েকবার পঞ্চায়েত প্রধানকে স্মারকলিপি দিয়েছি। প্রধান আশ্বাস দিলেও আজও কাজ হয়নি।” তাঁদের অভিযোগ, রাস্তায় নোংরা রয়েছে বলে নির্বাচনী প্রচারের মিছিলও ওই রাস্তা এড়িয়ে অন্য রাস্তা ধরে প্রচার চালাচ্ছে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, “কিছু দিন আগে একটি রাজনৈতিক দলের মিছিল মানবাজার পরিক্রমা করে। কিন্তু ওই রাস্তায় মিছিল ঢোকেনি। যে রাস্তায় আমরা প্রতিদিন যাতায়াত করতে বাধ্য হই, নির্বাচনী প্রচার মিছিল ওই রাস্তা মাড়ালনা কেন? আমরা কী ভাবে থাকি তা আরও বেশি মানুষ জানতে পারতেন। ওই রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ ইচ্ছে করে ওই রাস্তা এড়িয়ে গিয়েছেন।” যদিও রাজনৈতিক দলের নেতাদের দাবি, ওই রাস্তা দিয়ে মিছিল নিয়ে যেতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই।
মানবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের বাসন্তী মুর্মু বলেন, “নিকাশি সমস্যার কথা জানি। আপাতত ওই খাতে টাকা নেই। তবে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।” বাসিন্দারা অবশ্য জানাচ্ছেন, শুধু আশ্বাসে আর ভোটের চিঁড়ে ভিজবে না। তাঁরা ফল দেখতে চান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy