প্রস্তাবিত খনি এলাকা থেকে কলকাতা যাওয়ার আগে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত দু’বছর করা যায়নি ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ। কিন্তু এ বার সেই সমাবেশ হচ্ছে কলকাতার ধর্মতলাতেই। সেই সমাবেশ সফল করতে বুধবার সকাল থেকে দলে দলে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন জেলা তৃণমূলের নেতা কর্মীরা৷ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চিত্র একই। দিনভর জেলায় এমনই ছবি দেখা গেল।
তৃণমূলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরই ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ উপলক্ষে বিশেষ উদ্দীপনা থাকে কর্মীদের মধ্যে। কিন্তু গত দুবছর করোনার কারণে ভার্চুয়াল সভা হওয়ায় এ বছর সাধারণ কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস অনেক বেশি। তাছাড়া এই কর্মসূচিকে সফল করতে প্রায় এক মাস ধরে জেলা জুড়ে নানান কর্মসূচি করেছেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা৷ শাসক শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এই জেলা থেকে দু'লক্ষ লোক নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে তিনি তিন মহকুমার নেতাদের সঙ্গে, শাসক দলের শাখা সংগঠনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। এ ছাড়া জেলা জুড়ে মিটিং, মিছিল, দেওয়াল লিখন-সহ একগুচ্ছ কর্মসূচি হয়েছে। তারই ফলস্বরূপ এ দিন সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে কর্মীরা রওনা হতে শুরু করেন।
এ দিন দুপুরে সিউড়ি স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল যে হাতে পতাকা নিয়ে দলে দলে সিউড়ি শহর ও সিউড়ি ২ ব্লকের একাধিক এলাকা থেকে তৃণমূল কর্মীরা সিউড়ি স্টেশনে আসেন এবং হুল এক্সপ্রেসে করে কলকাতার দিকে রওনা হন।একই ছবি দেখা গিয়েছে বোলপুর ও রামপুরহাটে। ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি উপলক্ষে বোলপুর স্টেশন চত্বরে ছিল সাজোসাজো রব। সকাল থেকে কেউ দলীয় পতাকা হাতে, কেউ মাথায় প্রতীক বেঁধে স্টেশনে হাজির হন। একে একে বিভিন্ন ট্রেনে করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
সিউড়ি শহর তৃণমূলের নেতারা জানান, সিউড়ি পুর এলাকা থেকে মোট ৫টি বাস, ৩০টি ছোট গাড়ি যাচ্ছে। বাকিরা ট্রেনে যাচ্ছেন। দলীয়ভাবে যে বাস বা গাড়িগুলি করা হয়েছে সেগুলি এ দিন সন্ধ্যার পর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হতে শুরু করে।এ ছাড়া ব্যক্তিগত ভাবেও অনেকে যাবেন। সিউড়ি শহরের সভাপতি মহম্মদ আব্দুল সফি বলেন, ‘‘সিউড়ি শহর থেকে প্রায় ৬০০০ মানুষ কলকাতায় যাচ্ছেন।’’ সাঁইথিয়া পুর এলাকা থেকেও ৬টি বাস, ৩০টি ছোট গাড়ি এবং ট্রেনে করে প্রায় ছ’হাজার কর্মী সমর্থক সমাবেশের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। মহম্মদবাজার এলাকা থেকে ১৪টি বাস, ১৫টি ছোট গাড়ি এবং ট্রেনে করে সমর্থকেরা গিয়েছেন।
মহম্মদবাজার এলাকা থেকে ১৪টি বাস, ১৫টি ছোট গাড়ি এবং ট্রেনে করে কর্মীরা গিয়েছেন। মহম্মদবাজার ব্লকের প্রস্তাবিত ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনি এলাকার আদিবাসী নৃত্য দলের পুরুষ ও মহিলারা ‘উন্নয়নের সঙ্গে আমরা ডেউচা পাঁচামি যুবদল ও নৃত্যদল লেখা’ পোশাক পরে বিকেল তিনটে নাগাদ বাসে কলকাতা রওনা দেন। আদিবাসী নেতা রবিন সরেন, সুনীল সরেন ও কালিপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হিংলো ও ভাঁড়কাটা পঞ্চায়েতের ৭০ জন আদিবাসী মহিলা ও পুরুষ ওই দলে রয়েছেন।
তবে সমাবেশে যেতে এত সংখ্যক বাস বুক করা হয়েছে যে ভোগান্তির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের কারণে গত দু’বছর যেহেতু ভার্চুয়াল সভা হয়েছিল তাই এ বছর উৎসাহ, উদ্দীপনার মধ্যে প্রচুর মানুষের ভিড় হবে। সে জন্য জেলা থেকে পাঁচশোরও বেশি বাস বুক করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রচুর মানুষ ট্রেনে যাবেন। অনুব্রত মণ্ডল নির্দেশ দিয়েছেন যে জেলা থেকে দু'লক্ষ মানুষ নিয়ে যাওয়ার। সেই লক্ষ্য অনুসারে লোক আসছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy