প্রান্তিক আলুচাষিদের সুরক্ষা দিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হিমঘরের ৩০ শতাংশ জায়গা সংরক্ষিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতবারের তুলনায় যা ১০ শতাংশ বেশি। জেলাশাসকদের নজরদারিতে সেই কাজ হবে। দিন কয়েক আগে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বীরভূমেও।
জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার জেলাস্তরের বৈঠক রয়েছে। প্রশাসনের পদস্থকর্তা, হিমঘর মালিক, কৃষি দফতর ও বিপণন দফতরের আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকবেন। আলোচনা শেষে বিডিওদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পৌঁছবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ১ মার্চ থেকে হিমঘরগুলি খোলে। উৎপাদিত আলু যাতে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের হিমঘরজাত করতে বেগ পেতে না হয় তাই আগের বছরের মতো এবারও আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত ৩০ শতাংশ জায়গা ধরে রাখতে হবে হিমঘর মালিকদের, নির্দেশ সরকারের। আগে এলে আগে দেওয়ার ভিত্তিতে ওই জায়গা বণ্টন করতে বলা হয়েছে। এ বার মাথাপিছু একজন প্রান্তিক চাষি ৭০ বস্তা বা ৩৫ কুইন্টাল আলু হিমঘরে মজুত রাখতে পারবেন। গত বছর এই সীমা ছিল মাথাপিছু সর্বোচ্চ ৫০ বস্তা বা ২৫ কুইন্টাল।
তবে, চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রান্তিক আলু চাষির তালিকা প্রতিটি ব্লকের বিডিও তৈরি করবেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে। চাষিকে অবশ্যই কিসান ক্রেডিট কার্ড বা কৃষক বন্ধু সমতুল্য নথি দেখাতে হবে।ওই সময়ের মধ্যে হিমঘরের নির্ধারিত ৩০ শতাংশ জায়গা না ভরলে অবশ্য সরকারের দায়িত্ব থাকবে না।
কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মোট ১৮টি হিমঘর রয়েছে (একটি এ বারই তৈরি হয়েছে)। সেখানে প্রান্তিক চাষিরা মোট কত প্যাকেট আলু রাখতে পারবেন তা আজকের বৈঠকে স্থির হবে। বীরভূম জেলায় চলতি বছরে আনুমানিক ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভাল, আলু তোলা শুরু হয়েছে। তবে জোরকদমে আলু তোলা শুরু হতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, বড় চাষি, মজুতদার এবং ফড়েদের দাপটে প্রান্তিক চাষিরা আলু হিমঘরে রাখার সুযোগ পেতেন না। সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজতেই এই নির্দেশ।
জেলা কৃষি বিপণন আধিকারিক রাজেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রান্তিক চাষিদের উৎপাদিত আলু রাখার সরকারি নির্দেশ তো আছেই। সরকারি নির্দেশে প্রান্তিক চাষিদের অভাবী বিক্রি রোধে তাঁদের থেকে সরাসরি কিলো প্রতি ১০ টাকা দরে আলু কিনছে আমাদের দফতর। জেলায় বোলপুর ও ইলামবাজার দু’টি ‘প্রোকিওরমেন্ট’ সেন্টার রয়েছে। এ ছাড়া চাষিদের থেকে কলকাতার সুফল বাংলা স্টলগুলিতেও আলু কিনে পাঠানো হচ্ছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)