Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Crime

চিকিৎসক খুনে ধৃত ৫

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ২৩ এপ্রিল গভীর রাতে এই খুন হয়েছে। শ্বাসরোধ করেই খুন বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পরে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’’

West bengal Police arrested criminals

ধৃতদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নলহাটি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ০৭:৫৪
Share: Save:

চিকিৎসক খুনে সাফল্য পেল জেলা পুলিশ। ঘটনার ছ’দিন পরে পুলিশি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল। ধৃতদের নাম তারক কর্মকার, অভিষেক সালুই ওরফে বাপি, গোরা খান, রাজেশ শেখ ও সুখেন কর্মকার। এর মধ্যে তারক, অভিষেক, গোরা ও রাজেশের বাড়ি নলহাটিতে। সুখেনের বাড়ি সাঁইথিয়ায়। যদিও খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই খুনের ঘটনার কিনারা করা নিয়ে প্রবল চাপ ছিল জেলা পুলিশের উপরে। কেন খুন হওয়ার ছ’দিন পরেও কাউকে গ্রেফতকার করা গেল না, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলছিলে নিহত চিকিৎসকের ছেলে মলয় চৌধুরী। তিনি প্রথমে সিআইডি, পরে সিবিআই তদন্তেরও দাবি তোলেন।

এই অবস্থায় রবিবার সিউড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় দাবি করলেন, ‘যে পাঁচ জনকে ধরা হয়েছে, তারা ওই খুনের সঙ্গে ‘প্রত্যক্ষ’ ভাবে জড়িত। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘খুনের সঙ্গে এই পাঁচ জন প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত আছেন। তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এই খুনের ষড়যন্ত্র অন্য কেউ করছে কি না সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কয়েকজনের সমস্যা চলছিল সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী কারণে খুন তা এখনও সঠিক ভাবে জানা যায় নি। কারণ, গ্রেফতারের পর এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ২৩ এপ্রিল গভীর রাতে এই খুন হয়েছে। শ্বাসরোধ করেই খুন বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পরে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’’ এলাকাবাসীর একাংশ জানান, তারক ও বাপি চিকিৎসকের বাড়ির নীচে ভাড়া ছিল। এদের সোনার দোকান রয়েছে। বাকি দু’জন গোরা ও রাজেশ সোনার ছিলাইয়ের কাজ করতেন। সাঁইথিয়ার সুখেন প্রায়ই নলহাটিতে আসতেন। তিনিও সোনার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

২৪ এপ্রিল নলহাটি পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে নিজের শোওয়ার ঘরের মেঝেতে হাত, পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকা বৃদ্ধ চিকিৎসক মদনলাল চৌধুরী দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর হাত, পা ও মুখ সেলোটেপ এবং কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল বলে তদন্তকারীরা জানান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ছিল, শ্বাসরোধ করে ওই চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে। খুনের আগে তাঁর উপরে নির্যাতনও হয়ে থাকতে পারে। বৃদ্ধ বাধা দিতে গেলে দুষ্কৃতীরা চেপে ধরে সেলোটেপ দিয়ে হাত, পা বাঁধতে গেলে ধস্তাধস্তিতে পরনের লুঙ্গিটিও ছিঁড়ে যায় বলে অনুমান করেছিলেন তদন্তকারীরা।

চাকরি জীবনে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত মদনলাল চৌধুরী। অবসর নেওয়ার পরে নলহাটিতে একটি নার্সিংহোম ও লজ চালাতেন। শহরের ব্যস্ত এলাকায় একটি সুপারমার্কেটও আছে তাঁর। এ ছাড়া, জমিজমা, অন্য সম্পত্তিও ছিল। মলয় দাবি করেছিলেন, ‘‘জমি সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া বাবা খুন হতে পারেন না।’’

এ দিন পুলিশ সুপার জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (সদর) নেতৃত্বে চারটি দল গঠন করা হয়। কোনও দল মোবাইলের গতিবিধি, কোনও দল নজর ক্যামেরা, আবার কোনও দল চিকিৎসকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন এবং খুনের আগে কারা কারা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন সে বিষয়ে নজর রাখছিল। শনিবার বিকেলে একটি সূত্র পুলিশের হাতে আসে। তার ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পরে এ দিন দুপুরে ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের রামপুরহাট আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতের জন্য আবেদন করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানান।

এ দিন মলয় বলেন, ‘‘পুলিশ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করার খবর শুনে শান্তি পেয়েছি। দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nalhati West Bengal Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE