তছনছ: লন্ডভন্ড বাড়ি।—নিজস্ব চিত্র
মাঝরাতে জানলা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে লুঠপাট চালাল ডাকাতদল। বুধবার পুরুলিয়া শহরের কেতিকা এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, টাকা-গয়না লুঠের পাশাপাশি গৃহকর্তা তপন হালদারকে মারধরও করে দুষ্কৃতীরা। তিনি একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের পুরুলিয়ার সাংবাদিক। ঘটনার পরে পুলিশ তদন্তে নামলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
পুরুলিয়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জগন্নাথ কিশোর কলেজের কাছে তপনবাবুর বাড়ি। বুধবার মাঝ রাতে জানলা ভেঙে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে ঢুকে ঘুম থেকে তুলে তাঁকে মারতে শুরু করেন। তপনবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমি ভিতরের দিকে একটি ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। মনে হল কেউ চুলের মুঠি ধরে আমাকে টেনে তুলল। তখনই অন্ধকার ঘরের মধ্যে ঠাহর করতে পারি, কয়েকজন ঢুকে পড়েছে। আমি ওদের কিছু বলার আগেই মুখে, কানের পাশে, ঘাড়ে, পিঠে ঘুষি মারতে শুরু করে। তারপর হাত দুটো পিছমোড়া করে বেঁধে দেয়।’’ তিনি জানান, দুষ্কৃতীদের তিনি অনুরোধ করতে থাকেন, ঘরে যা আছে তারা নিয়ে যাক। কিন্তু তাঁকে যেন আর না মারে।
পাশের ঘরে তপনবাবুর স্ত্রী জয়ন্তীদেবী বছর পাঁচেকের ছেলেকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। স্বামীর চিৎকারে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। বিছানা থেকে নেমে তিনি ওই ঘরে যেতে গেলে দুষ্কৃতীদের একজন তাঁকে তপনবাবুর পাশে নিয়ে গিয়ে পিছমোড়া করে হাত বেঁধে বসিয়ে দেয়। তাঁর কথায়, ‘‘দুষ্কৃতীদের একজনের হাতে কিছু একটা ছিল। তা উঁচিয়ে ধরে চুপ করে থাকতে বলে।’’ তিনি জানান, এর মধ্যে তাঁদের ছেলেও সেখানে চলে এসেছিল। তাকেও এক দুষ্কৃতী ঘরের ভিতরে বসিয়ে দিয়ে যায়।
জয়ন্তীদেবীর অভিযোগ, ‘‘এরপরেই দুষ্কৃতীরা আলমারি ভেঙে নগদ টাকাপয়সা ও গয়না নিয়ে সদর দরজা ভেঙে বাড়ির পিছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে যায়, চিৎকার করলে ওরা ফিরে আসবে।’’
পরে ওই দম্পতি নিজেরাই কোনওরকমে দড়ির বাঁধন খুলে ফেলেন। তারপর খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন, জানলার লোহার গ্রিল খুলে ওরা ভিতরে ঢুকেছিল। তবে চোখের সামনে এই তাণ্ডব দেখে সদা চঞ্চল ছোট্ট ছেলেটি চুপচাপ হয়ে গিয়েছে। তাই নিয়ে চিন্তিত ওই দম্পতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তপনবাবুর বাড়ির পিছনে একটা মাঠ রয়েছে। সেই মাঠে সন্ধ্যার পরে মদের ঠেক-সহ নানা অসামাজিক কাজকর্ম চলে। তপনবাবু মাঝে মধ্যেই এ সবের প্রতিবাদ করেন। সে কারণেই এই হামলা? তপনবাবু বলেন, ‘‘বলতে পারব না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy