Advertisement
৩০ মার্চ ২০২৩
Teacher

সরস্বতী পুজো হয়নি স্কুলে, তালাবন্দি দুই শিক্ষক

নেতাজির জন্মজয়ন্তী ও স্কুলে সরস্বতী পুজো না করায় দুই সহকারী শিক্ষককে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীদের একাংশ।

দুবরাজপুরে তালা। নিজস্ব চিত্র

দুবরাজপুরে তালা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খাতড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:৩৬
Share: Save:

স্কুলে সরস্বতী পুজো না করায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার দুই স্কুলে।

Advertisement

নেতাজির জন্মজয়ন্তী ও স্কুলে সরস্বতী পুজো না করায় দুই সহকারী শিক্ষককে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীদের একাংশ। শুক্রবার বাঁকুড়া জেলার খাতড়া থানার দুবরাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। ঘটনাস্থলে যান অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (খাতড়া পূর্ব চক্র) কৌশিক ঘোষ ও খাতড়া থানার পুলিশ। স্কুল পরিদর্শকের কাছে মুচলেকা দিয়ে দুপুর দেড়টা নাগাদ মুক্ত হন দুই সহকারী শিক্ষক।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক কানাই মণ্ডল বলেন, ‘‘মা মারা যাওয়ায় ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০ দিন ছুটিতে রয়েছি। ঘটনার খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে দেখি, দুই সহকারী শিক্ষককে তালাবন্দি করে রাখা হয়েছে। ছুটি নেওয়ার সময় দুই শিক্ষককে নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালন ও সরস্বতী পুজো করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সরস্বতী প্রতিমার জন্য মৃৎশিল্পীর কাছে বায়নাও দেওয়া ছিল। কেন তাঁরা দায়িত্ব পালন করলেন না, বুঝতে পারছি না।’’ দুই সহকারী শিক্ষক শ্রীমন্ত কুন্ডু ও সমর হেমব্রম স্বীকার করেন, ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল করবেন না। এই মর্মে তাঁরা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে একটি মুচলেকা দেন।

গ্রামবাসীর তরফে সৌপম মণ্ডল, তন্ময় বারিক, ভগীরথ ঘোষদের বক্তব্য, প্রধান শিক্ষকের প্রতি তাঁদের কোনও ক্ষোভ নেই। তাঁর মা মারা গিয়েছেন। তাই তিনি ছুটিতে আছেন। কিন্তু সহকারী শিক্ষকেরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন নি। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘২৩ জানুয়ারি স্কুলে নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালিত হয়নি। ২৬ জানুয়ারি তাঁরা স্কুলে এসে জাতীয় পতাকা তুলে চলে গিয়েছেন। কিন্তু সরস্বতী পুজো করেননি। পুজোর জন্য গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে এসে ফিরে গিয়েছে।’’ এ দিন ওই দুই সহকারী শিক্ষক স্কুলে এলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তাঁদের তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়। খাতড়া পূর্ব চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কৌশিক ঘোষ বলেন ‘‘দুই সহকারী শিক্ষক মুচলেকা দিয়ে তাঁদের দোষ স্বীকার করেছেন। পুরো বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে।’’

Advertisement

অন্য দিকে, পুরুলিয়া শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের চ্যাটার্জি পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো না করা এবং শ্রেণি কক্ষের মধ্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা রিয়া সূত্রধরের দাবি, ‘‘স্কুলে সরস্বতী পুজোর আয়োজন কেন করা গেল না? প্রজাতন্ত্র দিবস কেন যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়নি? ছাত্রছাত্রীরা এ থেকে কী শিখবে?’’ পিউ সূত্রধরের দাবি, ‘‘স্কুলের শ্রেণি কক্ষে পতাকা উত্তোলনের পুরনো ছবি সমাজ-মাধ্যমে ছড়িয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। এ বার স্কুলে পতাকা উত্তোলনই করা হয়নি।’’ এ ছাড়াও স্কুলে শৌচাগার তালা বন্ধ করে রাখা, মিড-ডে মিলের মান নিয়েও অভিযোগ করেন অভিভাবকেরা।

স্কুলে যান নির্দলীয় পুরপ্রতিনিধি রুমকি কর্মকার। তিনিও বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান ক্লাসঘরে করা মানে রাষ্ট্রের অবমাননা। বাগদেবীর আরাধনা না করাও মানা যায় না।’’ যদিও শিক্ষক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘শিক্ষকদের ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে সরস্বতী পুজো করা যায়নি। তবে প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের মধ্যে জাতীয় পতাকা তোলা হয়েছে।’’ অন্যান্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে তিনি দাবি করেন। পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়কে ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.