E-Paper

পরীক্ষা দিয়ে এসেই রক্তদান

এ বারও যখন নাতির রক্তের প্রয়োজন হয়। তখন সাঁইথিয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার শরণাপন্ন হন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:১৯
রক্ত দিচ্ছে বিষ্ণুপদ সাহা। বৃহস্পতিবার সিউড়ির সদর হাসপাতালে।

রক্ত দিচ্ছে বিষ্ণুপদ সাহা। বৃহস্পতিবার সিউড়ির সদর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে সোজা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। স্কুলের পোশাকেই রক্তদান করল পরীক্ষার্থী বিষ্ণুপদ সাহা। উদ্দেশ্য এক বছর পাঁচেকের শিশুর রক্তের প্রয়োজন মেটানো। পরীক্ষার্থীর এই সামাজিক দায়বদ্ধতা দেখে আপ্লুত সকলেই। তবে বিষ্ণুপদের দাবি, কোনও নজির নয়, নিছক মানবিকতার খাতিরেই তার এই পদক্ষেপ।

সাঁইথিয়া পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পাঁচ বছরের এক ছোট্ট শিশু জন্ম থেকেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। তার দাদু অর্জুন ঠাকুর জানান, তিন থেকে চার সপ্তাহ অন্তর রক্তের প্রয়োজন হয় তাঁর নাতির। কখনও পরিবারের সদস্যরা রক্তদান করেন, আবার কখনও রক্তের জন্য নানা স্থানে খোঁজ চালাতে হয়।

এ বারও যখন নাতির রক্তের প্রয়োজন হয়। তখন সাঁইথিয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার শরণাপন্ন হন তিনি। সেখান থেকেই তাঁকে জানান হয়, সংস্থার এক সদস্য বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর নাতির জন্য রক্ত দেবে। এ দিন হাসপাতালে পৌঁছে তিনি দেখেন, এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নিজের পরীক্ষা শেষ করেই সাঁইথিয়া থেকে সিউড়িতে ছুটে এসেছে রক্ত দিতে।

অর্জুন ঠাকুর বলেন, “যে ভাবে জীবনের অন্যতম বড় পরীক্ষার মাঝেও ওই পরীক্ষার্থী আমার নাতির রক্তের প্রয়োজনে ছুটে এল, তার জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। আমি চাইব যুব সমাজের সকলেই যেন এ ভাবেই অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে আসেন।” বিষ্ণুপদ জানায়, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সে রক্তের প্রয়োজনের কথা জানতে পারেন। পরিচয় না থাকলেও মানবিকতার কারণেই পরীক্ষার শেষে রক্তদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন সে।

সাঁইথিয়া টাউন হাই স্কুলের ছাত্র বিষ্ণুপদের পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল সাঁইথিয়া রাষ্ট্রভাষা হাই স্কুলে। এ দিন শারীরশিক্ষা পরীক্ষা দিয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার গাড়িতে চেপে সিউড়িতে এসে রক্তদান করেন তিনি। আজই আবার তাঁর দর্শনের পরীক্ষা রয়েছে।

বিষ্ণুপদ বলে, “একটি শিশুর প্রয়োজনে তার পাশে থাকতে পেরে আমার খুব ভাল লাগছে। পরীক্ষা না থাকলে হয়তো আরও সকালেই রক্ত দিতে পারতাম। আগামীতে আবার কারও প্রয়োজন হলে আবার আসব।”

সাঁইথিয়ার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অন্যতম সদস্য প্রীতম দাস বলেন, “আমাদের সংস্থার তরফ থেকে আমরা নিয়মিত ভাবে রক্তদান করি। এর আগেও বহু মানুষের জন্য আমরা রক্তদাতা জোগাড় করে দিয়েছি। তবে বিষ্ণুপদ যে ভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মাঝখানে সংস্থার ডাকে সাড়া দিয়ে রক্তদান করল, তাতে আমরা গর্বিত।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suri WB Higher Secondary Exam 2024

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy