Advertisement
E-Paper

অর্ধেক শতাব্দী পরে মাথার উপরে ছাদ

প্রায় পঞ্চাশ বছর পার করে স্থায়ী ক্লাসঘর পেতে চলেছে আড়শার ফুসড়াটাঁড় প্রাথমিক বিদ্যালয়।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৭
এখন যেমন: ফুসড়াটাঁড় প্রাথমিক স্কুলে চলছে পঠনপাঠন। নিজস্ব চিত্র

এখন যেমন: ফুসড়াটাঁড় প্রাথমিক স্কুলে চলছে পঠনপাঠন। নিজস্ব চিত্র

প্রায় পঞ্চাশ বছর পার করে স্থায়ী ক্লাসঘর পেতে চলেছে আড়শার ফুসড়াটাঁড় প্রাথমিক বিদ্যালয়। নির্মাণের জন্য ইট, বালি, পাথর আর রড পড়েছে গ্রামের মাঠে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘ওই গ্রামের মানুষজন প্রশাসনের কাছে সমস্যার কথা জানিয়ে আবেদন করেছিলেন। আবেদন খতিয়ে দেখে স্কুলঘর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।’’

৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পুরুলিয়া থেকে জামশেদপুর যাওয়ার পথে কাঁটাডি কাছে একটা রাস্তা বেঁকে গিয়েছে ডান দিকে। আঁকাবাঁকা জঙ্গলপথ পিঠাতি, ডুংরিডি, রাধানগর, মুদালি ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে অযোধ্যা পাহাড়তলির ফুসড়াটাঁড় গ্রামে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তৈরি হয়েছিল ১৯৬৮ সালে।

তার পরে, ১৯৭১ সালে রাজ্য সরকার স্কুলের অনুমোদন দেয়। ফুসড়াটাঁড়ের বাসিন্দা নন্দলাল হাঁসদা, সূর্যকান্ত মাঝিদের কথায়, ‘‘প্রথমে ক্লাস হত গাছতলায়। ছাত্রছাত্রী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের ঘর তৈরির প্রয়োজন পড়ল। আর শুরু হল আমাদের আবেদনের পালা।’’

গ্রামের বাসিন্দা নন্দলাল হাঁসদার দাবি, কখনও ব্লক প্রশাসন, কখনও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস, কখনও পঞ্চায়েত, কখনও জেলা সদর— যে যেখানে বলেছেন সেখানেই ছুটে গিয়েছেন।

কিন্তু সমস্যা মেটেনি। তিনি জানান, বছর ছয়েক আগে খবর মেলে জমির সমস্যার জন্য স্কুলঘর তৈরি করা যাচ্ছে না। নন্দলালবাবু বলেন, ‘‘২০১৫ সালের এপ্রিলে আমি মোট ১২ ডেসিমেল জমি স্কুলঘর নির্মাণের জন্য জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদকে দান করেছি। জমি হস্তান্তর হলেও কাজ শুরু হতেই এতগুলো দিন লেগে গেল।’’

আড়শা ব্লক প্রশাসনের একটি সূত্র আবার দাবি করছে, গ্রামের স্কুলঘর তৈরির জন্য জমির সমস্যা যে মিটে গিয়েছে সেই খবর এত দিন তাঁদের কাছে ছিল না। গ্রামবাসীর সঙ্গে স্কুলঘর নির্মাণের জন্য তদ্বির করে এসেছেন একটি সংস্থার সদস্য সঞ্জীব কাঞ্জিলাল। তিনি বলেন, ‘‘এ বার আমরা গোটা বিষয়টি লিখিত ভাবে জেলাশাসককে জানিয়েছিলাম। তার পরেই আটকে থাকা ফাইল খুঁজে অবশেষে কাজ শুরু হচ্ছে।’’

বর্তমানে গ্রামের এক প্রান্তে আমগাছের নীচে স্কুল চলে। পড়ুয়ার সংখ্যা কমবেশি পঞ্চাশ। এর আগে ক্লাবঘরে ক্লাস চলত। শিক্ষক আকাশ মণ্ডল জানাচ্ছেন, সব ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে এলে ক্লাবঘরে জায়গা হয় না। তাই বাধ্য হয়েই গাছের নীচে চলে আসতে হয়েছে।

এত দিনে মিটতে চলেছে এই সমস্ত দুর্ভোগ। আশার আলো দেখছেন এলাকার বাসিন্দারা।

বুধবার থেকে স্কুলের কাজ শুরু হতে পারে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি। জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক বিকাশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘‘স্কুলঘর তৈরির জন্য ৪ লক্ষ ৮৬ হাজারের কিছু বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজ শুরু হোক। আরও একটি ঘরের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

এ দিকে, চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়া মালাবতী বেসরা, সুকান্ত বাস্কে, সুমিত্রা হাঁসদা, তৃতীয় শ্রেণীর সোমবারি মুর্মু, সুরেশ মাঝিরা মাঠে ইট, বালি, পাথর দেখে বেজায় খুশি। তারা বলছে, ‘‘এ বার আর তাহলে বৃষ্টি পড়লেই ছুটি নয়।’’

Primary School Purulia School Building
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy