এলাকায় স্কুলছুট বন্ধ করতে তৈরি হয়েছিল জুনিয়র হাইস্কুল। শিক্ষকের অভাবে সেই স্কুলে পড়াশোনা আগেই বন্ধ হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে একমাত্র শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়ায় স্কুল রক্ষণাবেক্ষণেরও কেউ থাকলেন না।
রামপুরহাট ১ ব্লকের অধীন নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের শালবুনি জুনিয়র হাইস্কুল বছর দেড়েক আগে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষকের অভাবে। পড়ুয়াদের অন্য স্কুলে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে স্কুলে একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। ফলে স্কুল কার্যত কর্মীহীন। রামপুরহাট পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবব্রত ঘোষ বলেন, “শিক্ষক না থাকার ফলে এলাকার পাঁচটি জুনিয়র হাই স্কুল বন্ধ হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে তিনটি স্কুল চালু করা হয়েছে। কিন্তু শালবুলি জুনিয়র হাই স্কুলে অতিথি শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে স্কুল আপাতত বন্ধ আছে।’’
গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো বলেন, “গ্রাম থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে নারায়ণপুর। সেখানে হাই স্কুল-সহ বালিকা বিদ্যালয় আছে। কিন্তু গ্রাম থেকে এত দূরে স্কুলে যেতে রাস্তার বেহাল দশায় গ্রামের ছেলেমেয়েদের অসুবিধা হত। সেই কারণে অনেকেই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ার পরে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলত।” লক্ষ্মীকান্ত জানান, এলাকার মেয়েদের শিক্ষালাভের জন্য ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত সদস্য থাকাকালীন তৎকালীন রামপুরহাট ১ বিডিও রূপম বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রামে একটি জুনিয়র হাই স্কুলের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিডিও প্রস্তাবটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠান।
২০১১-১২ সালে অনুমোদন মেলার পরে লক্ষ্মীকান্ত পারিবারিক সম্পত্তির ৮ শতক জায়গা স্কুল নির্মাণের জন্য স্বেচ্ছায় দান করেন। সেই জায়গায় স্কুলের একতলা ভবন নির্মাণ হয়। দু’জন শিক্ষক ও একজন অতিথি শিক্ষক নিযুক্ত হন। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও বছরের পর বছর বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু বছর দেড়েক আগে দু’জন শিক্ষক উৎসশ্রী প্রকল্পে অন্যত্র চলে যান। স্কুলের অতিথি শিক্ষকেরও সময় পেরিয়ে যায়। তারপর থেকে আর স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় স্কুলের পঠন-পাঠন বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি স্কুলের একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। ফলে স্কুল রক্ষণাবেক্ষণ করারও কেউ থাকলেন না।
গ্রামবাসী চৈতন্য মাহাতো, রামনারায়ণ মাহাতো, রণজিৎ রায়, শিবচরণ টুডু জানালেন, তাঁরা চান স্কুলে আবার শিক্ষক নিযুক্ত করে স্কুলটি চালু হোক। এতে এলাকার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার উন্নতি ঘটবে। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জানান, অতিথি শিক্ষক নিযুক্ত করে স্কুলটি চালু করতে শিক্ষা দফতরও আগ্রহী।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)