Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Madhyamik

Madhyamik 2021: নবমের কড়াকড়ির প্রভাব ফলে, দাবি

প্রত্যাশামতো ফলাফল না হওয়ার জন্য নবম শ্রেণিতে মূল্যায়নে কড়াকড়িকে দায়ী করছেন বেশ কিছু কর্তৃপক্ষ।

শুনশান: মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনে বাঁকুড়া জেলা স্কুল চত্বর।

শুনশান: মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনে বাঁকুড়া জেলা স্কুল চত্বর। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৬
Share: Save:

কোনও স্কুলের পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশিত তালিকার শিখর ছুঁয়েছে। অনেক স্কুলের পড়ুয়ারা তার কাছাকাছি। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির তরফে ঘুরে-ফিরে আসছে বক্তব্য—পরীক্ষা হলে ফলাফল আরও ভাল হতে পারত। বেশির ভাগেরই দাবি, নবম শ্রেণিতে মূল্যায়নে কড়াকড়ির প্রভাব পড়েছে ফলাফলে।

বাঁকুড়া জেলা স্কুলে মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৬৬৪। ফলাফলে অখুশি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক কৃষ্ণধন ঘোষ বলেন, ‘‘নবম শ্রেণিতে আমরা একটু কড়াকড়ি করি। যাতে দশমে গিয়ে ছেলেরা আরও মন দিয়ে পড়ে। কিন্তু এ বারে নবম শ্রেণির নম্বরের ভিত্তিতে ফলাফল হওয়ায় নম্বর সে ভাবে ওঠেনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে এটাই মূল্যায়নের ঠিকঠাক পদ্ধতি।’’

বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর ৬৯৭ ছুঁয়েছে। যদিও স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া অধ্বুর্যের কথায়, ‘‘ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। পরীক্ষা হলে অনেকে বেশি নম্বর পেত।’’ ফলাফল নিয়ে খুশি নন বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন কর্তৃপক্ষও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার পতি বলেন, ‘‘সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৬৯১। তবে পরীক্ষা হলে ফলাফল অন্য রকম হত।’’

এ দিকে, বাঁকুড়া গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুমনা ঘোষের বক্তব্য, ‘‘স্কুলের কিছু ছাত্রী নবমের পরীক্ষার সময়ে অসুস্থতার কারণে কম নম্বর পেয়েছিল। তা ছাড়া, এমনিতেই নবমের পরীক্ষায় মূল্যায়নে কড়াকড়ি হয়। সব মিলিয়ে তাই অনেকের ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৬৮৭। পরীক্ষা হলে আরও বেশি নম্বর পেত ছাত্রীরা।’’

গত কয়েকবছর ধরে মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নাম থাকছে বড়জোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। সেখানে এ বারে সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৬৭৯। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বামদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন দু’-তিন জন পড়ুয়া ছিল, যাঁরা পরীক্ষা হলে মেধা-তালিকায় জায়গা করে নিত। সর্বোচ্চ নম্বরও বেশি উঠত। নবম শ্রেণিতে একটু কড়াকড়ি করেই মূল্যায়ন করা হয়। সে জন্যই এমন ফলাফল।’’

বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জীবনানন্দ মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা তাদের যোগ্যতা প্রমাণের আরও অনেক পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে দিতে পারবে। এ মুহূর্তে এটাই ঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়। বিভিন্ন স্কুলে বিভিন্ন প্রশ্নপত্রে নবমের পরীক্ষা হয়। তাই ফলাফলে পার্থক্য হবেই।’’

প্রত্যাশামতো ফলাফল না হওয়ার জন্য নবম শ্রেণিতে মূল্যায়নে কড়াকড়িকে দায়ী করছেন পুরুলিয়ার বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষও।

পুরুলিয়া শহরের চিত্তরঞ্জন বয়েজ় হাইস্কুলের (সর্বোচ্চ নম্বর ৬৮১) প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চট্টোপাধ্যায়, পুরুলিয়া জেলা স্কুলের (সর্বোচ্চ নম্বর ৬৮৬) প্রধান শিক্ষক বারিদবরণ মিশ্র বা হুড়া হাইস্কুলের (সর্বোচ্চ নম্বর ৬৬৭) প্রধান শিক্ষক পিন্টু দে— সকলেরই মত, মাধ্যমিকের জন্য পড়ুয়ারা যাতে বেশি পরিশ্রম করে, তার জন্য বরাবরই নবম শ্রেণির পরীক্ষার মূল্যায়নে কড়াকড়ি করা হয়। করোনা-পরিস্থিতিতে মাধ্যমিকের ফলাফল সেই নবম শ্রেণির মূল্যায়ন-নির্ভর হওয়ায় অনেক পড়ুয়ার ফল মনমতো হয়নি।

পাশাপাশি, নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের মত, সতর্কতা ও স্বাস্থ্য-বিধি মেনে পর্ষদ পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করলে মেধাবী পড়ুয়াদের ফল আরও ভাল হতে পারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE