Advertisement
E-Paper

কাউন্সেলিং হবে অভিযুক্ত পড়ুয়াদের

দোকানের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি কেটে ভিতরে নেমে মালপত্র চুরি করে বেরিয়ে যাচ্ছে কিছু কিশোর! সিসিটিভি-র ফুটেজে এই ছবি দেখে আঁতকে উঠেছিলেন বারিকুল থানার পুলিশকর্মীরা। আর খুদেদের ‘গ্যাংস অফ বারিকুল’-এর ঘটনাটি সোমবার প্রকাশ্যে আসার পরে চিন্তায় পড়েছেন এলাকার লোকজন। নাবালক স্কুলপড়ুয়ারা কী ভাবে এই চুরিতে জড়িয়ে পড়ল, কী ভাবেই কিছু পড়ুয়া স্কুলের হস্টেল থেকে পালিয়ে চুরি করল—এই সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয় অভিভাবকদের মনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৪

দোকানের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি কেটে ভিতরে নেমে মালপত্র চুরি করে বেরিয়ে যাচ্ছে কিছু কিশোর! সিসিটিভি-র ফুটেজে এই ছবি দেখে আঁতকে উঠেছিলেন বারিকুল থানার পুলিশকর্মীরা। আর খুদেদের ‘গ্যাংস অফ বারিকুল’-এর ঘটনাটি সোমবার প্রকাশ্যে আসার পরে চিন্তায় পড়েছেন এলাকার লোকজন। নাবালক স্কুলপড়ুয়ারা কী ভাবে এই চুরিতে জড়িয়ে পড়ল, কী ভাবেই কিছু পড়ুয়া স্কুলের হস্টেল থেকে পালিয়ে চুরি করল—এই সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয় অভিভাবকদের মনে।

ফুলকুসমা বাজারের একটি বৈদ্যুতিন সামগ্রী ও একটি মোবাইলের দোকানে চুরির অভিযোগে স্থানীয় দু’টি স্কুলের ১০ জন ছাত্রকে সোমবার গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতদের তিন জন ষষ্ঠ শ্রেণি, বাকিরা সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। এদের মধ্যে চার জন একটি স্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। চুরি-কাণ্ডের জেরে ওই চার জনকে মঙ্গলবার হস্টেল থেকে বহিষ্কার করেছেন সেই স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাঁকুড়া জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পঙ্কজ সরকার এ দিন বলেন, ‘‘চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া দশ ছাত্রের জন্য যাতে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করানো হয়, তার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলেছি।’’ জেলার শিশুসুরক্ষা আধিকারিককেও ওই ছাত্রদের কাউন্সেলিং করানোর জন্য বলা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা।

ধৃত পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, স্মার্ট ফোনের লোভেই চুরির পথে নেমেছিল তারা। কিন্তু, স্কুলের নজরদারি এড়িয়ে হস্টেল থেকে মাঝরাতে কিছু ছাত্র কী ভাবে বেরিয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সব মহলেই। অনেকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে। নজরদারির অভাবকেই। এই স্কুলের ছাত্রদের অভিভাবকদের একাংশ অভিযোগ করছেন, স্কুল বা হস্টেল, কোথাও ছাত্রদের উপরে সে ভাবে নজরদারি চালান না স্কুল কর্তৃপক্ষ।

হস্টেলে পরিকাঠামোর অভাব থাকার কথা মেনে নিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রভাত ডাঙর। তিনি জানাচ্ছেন, রাতে হস্টেলে নিয়মিত কোনও কর্মী থাকেন না ছাত্রদের দেখভালের জন্য। হস্টেলে সীমানা প্রাচীর বা নিরাপত্তারক্ষীও নেই। হস্টেলের ৬টি ঘরে মোট ৬৫ জন ছাত্র থাকে। রান্না করার জন্য লোক ঠিক করা রয়েছে। তিনি রান্না করেই রাতে বাড়ি চলে যান। এই পরিস্থিতিতে মাঝরাতে ছাত্রেরা বেরিয়ে পড়লে কারও বোঝার সাধ্যি নেই। কেন এমন হাল? প্রভাতবাবুর কথায়, ‘‘স্কুলের শিক্ষকদের অনেককেই বলা হয়েছিল রাতে হস্টেলে থাকার জন্য। কিন্তু কেউ রাজি হননি।’’ এই ঘটনার পরে অবশ্য টনক নড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। হস্টেলের সমস্যার কথা জানিয়ে সীমানা প্রাচীর গড়ে দেওয়া ও রক্ষী মোতায়েন করার দাবি স্কুল শিক্ষা দফতরকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রভাতবাবু।

অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা অবশ্য এত তাড়াতাড়ি যাচ্ছে না। ফুলকুসমা থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরের হামারগড়া গ্রামের বাসিন্দা সুনীল সরেনের ছেলে ওই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করেছে সে। তবে পরিকাঠামোর হাল খারাপ হওয়ায় ছেলেকে হস্টেলে রাখতে সাহস পাননি সুনীলবাবু। তিনি বলেন, “ছাত্রদের হস্টেলে রাতে দেখভালের জন্য এক জনও কর্মী থাকে না। তাই আগেই ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে চলে গিয়েছি।’’ রাইপুরের যুব তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার সিংহের কথায়, “অনেক দিন আগে থেকেই স্কুলের কিছু সমস্যা নিয়ে এলাকায় প্রশ্ন উঠছে। আমরা রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’’

জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “ধৃতেরা জামিন পেয়ে গেলেও তাদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকেও চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হবে, হস্টেলের ছেলেরা কী ভাবে রাতে বেরনোর সাহস পেল।’’

counselling students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy