Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
CPI(Maoist)

CPI(Maoist): শহিদ সপ্তাহ ঘিরে সতর্কতা

‘শহিদ সপ্তাহ’ ঘিরে মাওবাদীরা ফের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে বলে রাজ্য গোয়েন্দাদের একাংশের সূত্রে জানা যাচ্ছে।

বরাবাজারে টহল।

বরাবাজারে টহল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২১ ০৬:২৩
Share: Save:

আজ, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে মাওবাদীদের ‘শহিদ সপ্তাহ’। ২০১২-তে মাওবাদীদের ‘অযোধ্যা স্কোয়াড’ ভেঙে যাওয়ার পরে, জেলায় সে ভাবে মাওবাদী কার্যকলাপ বা গতিবিধি নজরে না এলেও ‘শহিদ সপ্তাহ’ ঘিরে মাওবাদীরা ফের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে বলে রাজ্য গোয়েন্দাদের একাংশের সূত্রে জানা যাচ্ছে। বিশেষত, ‘অযোধ্যা স্কোয়াড’ ভাঙার পরে, অনেকে আত্মসমর্পণ করলেও বা গ্রেফতার হলেও কয়েকজন এখনও অধরা। পাশাপাশি, তৎকালীন ‘লিঙ্কম্যান’-রাও রাজ্য সরকারের আর্থিক প্যাকেজের দাবিতে সরব হয়েছেন। মাওবাদীরা এ পরিস্থিতির সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন বলেও মনে করছেন গোয়েন্দারা।

‘শহিদ সপ্তাহ’ উপলক্ষে জেলার সীমানা লাগোয়া এলাকায় ইতিমধ্যে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। কিছু দিন আগে বান্দোয়ানে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া থানাগুলির পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, ‘‘সমস্ত থানাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, তল্লাশি অভিযানও শুরু হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, বরাবাজারের সিন্দরি ও বাঘমুণ্ডির সুইসায় দু’টি শিবির তৈরি করা হয়েছে। সীমানা এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি, মাওবাদীদের গতিবিধিতে নজর রাখতেও শিবির দু’টি কার্যকর হবে।

সিন্দরির শিবিরটি আগে চালু থাকলেও ২০০৬-এ এলাকার বেড়াদা গ্রামে একটি যাত্রার আসরে হানা দিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও এনভিএফ কর্মীদের জখম করে তিনটি রাইফেল লুট করে মাওবাদীরা। তার পরে, ওই শিবিরটি তুলে দেওয়া হয়। এতে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বরাবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল বলে দাবি। দীর্ঘ ১৫ বছর পরে, শিবিরটি ফের চালু হওয়ায় নিরাপত্তার প্রশ্নে বরাবাজারের পাশাপাশি, লাগোয়া মানবাজার থানা এলাকার জন্যও তা সহায়ক হবে বলে মনে করছে পুলিশ।

এ দিকে, বাঘমুণ্ডির ঝাড়খণ্ড লাগোয়া সুইসায় এত দিন পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নতুন শিবির করা হয়েছে। বাঘমুণ্ডির সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের কম-বেশি ৪২ কিলোমিটারের সীমানা রয়েছে। শুধু সুইসা এলাকাতেই রয়েছে প্রায় ১৯ কিলোমিটারের সীমানা। ও পারে, ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসঁওয়া ও রাঁচী জেলার কিছু এলাকায় অনেক দিন ধরে মাওবাদী গতিবিধির খবর রয়েছে। পাশাপাশি, ওই এলাকায় মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পতিরাম মাঝি ওরফে মহারাজ পরামানিকের নেতৃত্বে শক্তিশালী স্কোয়াড সক্রিয় বলে গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি।

গোয়েন্দাদের অনুমান, এই মহারাজ পরামানিকের নেতৃত্বে ২০১৯-এ সরাইকেলা-খরসঁওয়া জেলার তিরুলডি থানায় হামলা চলেছিল। ওই ঘটনার পরেই বাঘমুণ্ডি থানার মাঠা অঞ্চলের দিগারডি রক্ষী শিবিরটিকে ঢেলে সাজানো হয়। শিবিরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়। দিগারডিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবির থাকায় ওই প্রান্তটি তুলনামূলক সুরক্ষিত হলেও সুইসার দিকে থাকা জেলা পুলিশের ফাঁড়িটি বর্তমান পরিস্থিতিতে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট নয় বলে মনে করছিলেন জেলা পুলিশ কর্তারা। সে ভাবনা থেকে ফাঁড়ির পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবির তৈরি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPI(Maoist)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE