E-Paper

ফের সদ্যোজাতের মৃত্যুতে গাফিলতি, বিক্ষোভ বাঁকুড়ায়

রানিবাঁধের সুরুলিয়ার যুবতী বৃষ্টি বাউরি এ দিন ভোরে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১০:০১
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার পরে, এ বার বাঁকুড়ার খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে শিশু-মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। বুধবার ভোরের ওই ঘটনায় রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান মৃত শিশুর পরিজনেরা। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছিল, কর্তব্যে কোথাও গাফিলতি হয়েছে কি না, তার রিপোর্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছে।’’

রানিবাঁধের সুরুলিয়ার যুবতী বৃষ্টি বাউরি এ দিন ভোরে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন। বৃষ্টির স্বামী দিনু দুলে জানান, স্ত্রীকে জরুরি বিভাগে দেখিয়ে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তখন শুধু এক জন নার্স ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নার্স দেখে বলেন, প্রসব হতে দেরি আছে। হাঁটিয়েই লেবার রুম থেকে স্ত্রীকে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই ঘর থেকে বেরোনোর সময়েই সন্তান প্রসব শুরু হয়ে যায়।’’ দিনু জানান, বারান্দায় বৃষ্টিকে শুইয়ে নার্সকে ডাকা হয়। নার্স আসেন ১০ মিনিট পরে। তিনি শিশুর পা টেনে ঝাঁকুনি দিয়ে বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মিনিট দশেক টানাটানির পরেও বাচ্চা বেরোয়নি। শেষে নিজে থেকেই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়।

এর পরে বারান্দাতেই মা ও শিশুকে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে নালিশ। পরে এক চিকিৎসক দেখে বলেন, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। সন্তানহারা দিনুর আক্ষেপ, ‘‘এটিই আমাদের প্রথম সন্তান। সে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই নার্স, চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির শিকার হল। এখন স্ত্রীকে সুস্থ করাই লক্ষ্য। তার পরে লিখিত অভিযোগ জানাব।’’

সকালেই হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান মৃত শিশুর বাড়ির লোকজন এবং অন্য রোগীর পরিজনেরা। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ জানিয়ে নার্স, চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা। পরে, পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। বৃষ্টিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শিশুর মৃতদেহ পরিবার নিতে অস্বীকার করায় হাসপাতালের তরফেই তার সৎকার করা হয়েছে।

খাতড়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার অসিতকুমার হেমব্রম বলেন, ‘‘ঘটনাটি তদন্ত করে দেখাহচ্ছে। ওই সময় লেবার রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক কিছু ক্ষণের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। এক নার্স ছিলেন। তাঁর ভূমিকা খতিয়েদেখা হচ্ছে।’’

হাসপাতালের নার্সিং সুপার শম্পা মুখোপাধ্যায়ও জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ দিন শিশু-মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান বিজেপির রানিবাঁধ ৪ নম্বর মণ্ডল সভাপতি সংলাপ সাহু। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল সুপারের কাছে আমরা নালিশ জানিয়েছি। ওই পরিবারের পাশে রয়েছি।’’ তৃণমূলের খাতড়া ব্লক সভাপতি তরুণ পাত্র বলেন, ‘‘আমরাও চাই, গোটা ঘটনারতদন্ত হোক।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bankura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy