Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
বিলি হয়নি ফুটবল

অভিযুক্ত পঞ্চায়েত

পঞ্চায়েতের টাকা জনগণের কাজে লাগানো হচ্ছে না। উল্টে, গ্রামের উন্নয়নে আসা সামগ্রী ইটভাটা মালিকের ঘরে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী, গ্রামে একাধিক অবৈধ নির্মাণের ব্যাপারেও পঞ্চায়েতের নজরদারি নেই। সরকার থেকে দেওয়া ফুটবলও পায়নি খেলয়াড়েরা। তৃণমূল পরিচালিত সাঁইথিয়ার দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এ রকমই নানা অভিযোগ তুলে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে এলাকারই একটি আদিবাসী স্বনির্ভর গোষ্ঠী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০০:৫২
Share: Save:

পঞ্চায়েতের টাকা জনগণের কাজে লাগানো হচ্ছে না। উল্টে, গ্রামের উন্নয়নে আসা সামগ্রী ইটভাটা মালিকের ঘরে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী, গ্রামে একাধিক অবৈধ নির্মাণের ব্যাপারেও পঞ্চায়েতের নজরদারি নেই। সরকার থেকে দেওয়া ফুটবলও পায়নি খেলয়াড়েরা। তৃণমূল পরিচালিত সাঁইথিয়ার দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এ রকমই নানা অভিযোগ তুলে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে এলাকারই একটি আদিবাসী স্বনির্ভর গোষ্ঠী। সম্প্রতি এই মর্মে সংশ্লিষ্ট বিডিও-র কাছে অভিযোগও দায়ের করেছে ওই গোষ্ঠী।

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি স্থানীয় কালা গ্রামের রাস্তার ধারে দু’টি বড় শিমুল গাছ কাটার জন্য দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েত বিডিও-র কাছে অনুমতি চেয়েছিল। অনুমতি মিললে সেই গাছ দু’টি কাটার পরে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দাবি, বিনা নিলামে গাছ বিক্রির পাশাপাশি বিক্রির টাকা পঞ্চায়েতের তহবিলে জমাও পড়েনি। ওই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু মারাত্মক অভিযোগ তুলেছে ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠী। এক, পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ নির্মাণ কাজ চলছে। দেখা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত অফিসের কাছেই পশ্চিম দিকে একটি শিল্প গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। এ রকম নির্মাণের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেই। এ সব নির্মাণ বৈধ হলে পঞ্চায়েতের আয় বাড়ত বলেই ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দাবি। দুই, রায়হাট সংসদে ৫৭ নম্বর মাইনর সেচ খাল আছে। এলাকার লোক জনের ওই খাল পারাপারের সুবিধার্থে পঞ্চায়েত থেকে চারটি হিউম পাইপ কেনা হয়। তার মধ্যে দু’টি পাইপ স্থানীয় এক ইটভাটা মালিককে দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে গোষ্ঠীর অভিযোগ। তিন, এলাকার কিছু সংসদে ফুটবল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, কয়েকটি সংসদে ফুটবল না দিয়েই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অভিযোগ।

গত বৃহস্পতিবারই সাঁইথিয়ার বিডিও অতনু ঝুড়ির কাছে এই প্রতিটি অভিযোগই লিখিত ভাবে জানিয়েছে রায়হাট সংসদের ‘সূর্য স্বনির্ভর দল’। দলের নেত্রী তথা দেড়িয়াপুরেরই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান সুকুমনি সোরেন বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের যা কিছু, তা সবই এলাকার মানুষের উন্নয়ন ও ভালর জন্য। পঞ্চায়েতের আয় বাড়লে তা এলাকা উন্নয়নের কাজেই লাগবে। অথচ তা না করে গাছ কেটে বিক্রি করে টাকাটা নিজেদের পকেটে পুরে নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ নির্মাণ চলছে। রাস্তার খাল পারাপারের হিউম পাইপ যথাস্থানে না বসিয়ে তা ইটভাটা মালিককে দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁ অভিযোগ, ‘‘নিশ্চয় এ সব এমনি এমনি দেয়নি। অবশ্যই কোনও না কোনও যোগসাজস আছে।’’ তিনি আরও এলাকায় দিন দিন জল-সঙ্কট বাড়ছে। দিনভর মাঠে ঘাটে দিনমজুরির কাজ করার পরেও মহিলাদের দূর দূরান্ত থেকে জল আনতে যেতে হয়। সে সব দিকে নজর না দিয়ে পঞ্চায়েতের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।

এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট সুধাকর বাগদি মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ফুটবল না দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। তবে, দু’চারটে অবৈধ নির্মাণ যে হচ্ছে না, তা নয়। বাকি বিষয়গুলি আমার জানা নেই। কারণ, এখানে মাসছয়েক হল জয়েন করেছি।’’ অন্য দিকে, পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের লক্ষ্মী হাঁসদা ফোন ধরেননি। তবে, উপপ্রধান উত্তম গড়াইয় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ দিকে, অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সাঁইথিয়ার বিডিও অতনু ঝুড়ি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তার আগে সোমবারই রায়হাট এলাকার জল সমস্যার সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। ওই সমস্যা দূর করতেও দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস তিনি দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Allegation Panchayat office Deriapur Sainthia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE