Advertisement
E-Paper

সিউড়িতে প্রসূতির মৃত্যুতে উত্তেজনা

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম আরতি বসাক (২০)। বাড়ি সাঁইথিয়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০০:২৪
শোকাহত: মেয়ে আরতিকে হারিয়ে তুলসীদেবী। সিউড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।

শোকাহত: মেয়ে আরতিকে হারিয়ে তুলসীদেবী। সিউড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রসূতির মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল সিউড়ি জেলা হাসপাতালে। বুধবার সকালে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম আরতি বসাক (২০)। বাড়ি সাঁইথিয়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ সাঁইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ করার পর সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন ওই প্রসূতি। ঘন্টা দু’য়েক পর অস্ত্রোপচার করা হয়। মৃত এক শিশুপুত্রের জন্ম দেন তিনি। ভোরের দিকে আরতিরও মৃত্যু হয়।

এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতালে চড়াও হন। অভিযোগ, নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে তাঁদের হাতাহাতি হয়। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। আরতিদেবীর স্বামী, গয়নার দোকানের কর্মী সুমিত বসাকের নালিশ, ‘‘প্রসবের পর চিকিৎসা ঠিক মতো না হওয়ায় এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’ তবে চিকিৎসক নন, প্রসূতির পরিবারের আঙুল ওঠে কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে।

আরতিদেবীর বাবা শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘‘সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তির পর মেয়েকে দেখে স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছিলেন অবস্থা ভাল নয়। গর্ভস্থ শিশুকে সম্ভবত বাঁচানোও যাবে না। আমাদের আর্তি ছিল মেয়েকে অন্তত বাঁচান।’’ তিনি জানান, অস্ত্রোপ্রচারের পরও ভাল ছিলেন তাঁর মেয়ে। কিন্তু বেডে দেওয়ার পর সমস্যা শুরু হয়। অভিযোগ, সেখানে কর্তব্যরত নার্সেরা তাতে গুরুত্ব দেননি। শ্যামলবাবুর নালিশ, ‘‘আমার স্ত্রী তুলসীদেবী নার্সদের কাছে মেয়ের অসুবিধার কথা বলতে গিয়ে ধমক খায়। ভোরে মেয়ের মৃত্যু হয়।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের পরিজনেরা মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছেন। লিখিত ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাঁরা কিছু জানাননি।

সাঁইথিয়ায় স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি প্রমোদ বসাক জানান, ময়না তদন্তের আশঙ্কায় লিখিত অভিযোগ করতে চাননি মৃতের পরিজনেরা।

সিউড়ি হাসপাতাল সুপার শোভন দে বলেন, ‘‘কী ভাবে ওই প্রসূতির মৃত্যু হল, তাতে হাসপাতালের কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা জানতে ময়না তদন্ত করা জরুরি ছিল। কিন্তু ওঁরা তাতে রাজি হননি। তবে মৃতের পরিজনেরা মৌখিক ভাবে যে অভিযোগ করেছেন তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

এর আগেও সিউড়ি হাসপতালের প্রসূতি বিভাগে কর্তব্যরত নার্সদের একাংশের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রসূতির শারিরীক অবস্থা ভাল ছিল না। আগে দু’বার তাঁর গর্ভপাত হয়েছিল। সিউড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তাঁর রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল। অস্ত্রোপ্রচার করা ছাড়া উপায় ছিল না। মৃত সন্তান প্রসবের পর অবশ্য ঠিক ছিলেন তিনি। হঠাৎ পরিস্থিতির অবনতি হয়।

একই কথা বলছেন সিএমওএইচ। তিনি বলেন, ‘‘ময়না তদন্ত হলেই কারণ স্পষ্ট হত। আমিও ওঁদের সেই অনুরোধ করেছিলাম। তবে প্রসূতি মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।’’

তবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রসূতির চিকিত্সা করেছিলেন ইসলামপুর হাসপাতালের চিকিত্সক নিখিলচন্দ্র ভক্ত। তিনি বলেন, ‘‘রোগী রাত পর্যন্ত সুস্থই ছিলেন। আমি রাতেও দেখে গিয়েছিলাম। ভোর পাঁচটা নাগাদ তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় আমাকে খবর দেওয়া হয়। ভেন্টিলেশনে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। আমাদের দিক থেকে চেষ্টার ত্রুটি ছিল না।’’

medical negligence Suri সিউড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy