পুরুলিয়ার ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে। নিজস্ব চিত্র
ভীমরাও রামজি অম্বেডকরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় জেলায় জেলায়। ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম মুখ অম্বেডকরের মূর্তি এ দিন কোথাও প্রতিষ্ঠিত হয়। আবার কোথাও তাঁর জীবনী নিয়ে আলোচনা চলে। কোথাও তাঁকে স্মরণ করে গুণীজন সংবর্ধনার আয়োজনও করা হয়।
পুরুলিয়ার অম্বেডকর জাগৃতি সমিতির মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘পুরুলিয়া ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে এ দিন অম্বেডকরের একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।’’ অম্বেডকরের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন বাদল রাম। উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খান, চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বিভাসরঞ্জন দাস, আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখপাত্র অজিত মাহাতো, সমাজসেবী নবেন্দু মাহালি, তফসিলি জাতি বাউরি কল্যাণ সমিতির জেলা সভাপতি আনন্দময় বাউরি প্রমুখ। সমিতির পরিচালনায় এ দিন পুরুলিয়া শহরে র্যালি বেরিয়েছিল।
আলোচনা সভায় উঠে আসে ভারতীয় সংবিধান তৈরিতে অম্বেডকরের ভূমিকা, তাঁর জীবনযাত্রার কথা। কিন্তু, বর্তমান প্রজন্মের পড়ুয়ারা তাঁর সম্পর্কে কম জানেন। পিছিয়ে পড়া জনজাতিদের জন্য যে উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন, আজও তা সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক।
এ দিন বিকেলে পুরুলিয়া শহরের মুন্সেফডাঙা শিশু উদ্যানে পুরুলিয়া জেলা তফসিলি জাতি বাউরি কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানে সংবিধান রচয়িতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। ‘পুরুলিয়া জেলা আদিবাসী হরিজন ওবিসি মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের জন্ম হল এ দিন। শনিবার পুরুলিয়া শহরের একটি ধর্মশালায় সংগঠনের কমিটি গঠিত হয়েছে। সংগঠনের তরফে গোপাল দাস জানান, এই সংগঠন আদিবাসী, হরিজন-সহ যে সমস্ত মানুষ অবিচারের শিকার হবেন, তাঁদের স্বার্থে কাজ করবে। সংগঠনের সমস্ত ব্লক কমিটি গড়া হলে তারপর জেলা সম্মেলনে হবে বলে জানানো হয়।
বরাবাজারের লাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা এ দিন সকালে অম্বেডকরের প্রতিকৃতি নিয়ে গ্রাম প্রদক্ষিণ করেন। প্রধান শিক্ষক শরৎ পরামানিক বলেন, ‘‘স্কুলে অম্বেডকরের জীবনী ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে।’’
বান্দোয়ানে জেলায় বড় আকারে একটি অনুষ্ঠান হয়। বান্দোয়ান-পুরুলিয়া রাস্তায় বান্দোয়ানের দুর্গাশঙ্কর সভাগৃহে অনুষ্ঠানটি হয়। সান্তালি লিটারারি ফোরামের উদ্যোগে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ও ঝাড়খণ্ড থেকে আসা গুণীজনদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ফোরামের পক্ষে চাকরিসূত্রে আসানসোলের বাসিন্দা কবি অরুণকুমার সোরেন বলেন, ‘‘দুমকার বাসিন্দা লেখক সৌভেন্দ্রশেখর হাঁসদা, অভিনেত্রী ডগরমণি টুডু, গায়ক নরেন হাঁসদা, গল্পকার বিশাখা মাঝি, কাজলি সোরেন, প্রাবন্ধিক গোমস্তাপ্রসাদ সোরেন প্রমুখকে সম্মানজ্ঞাপন
করা হয়।
অম্বেডকরের জীবনী নিয়ে আলোচনা হয়। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাঁওতালি লেখক সাহিত্যিকদের ভিড়ে সভাগৃহ উপচে পড়েছিল। সাঁওতালি পত্রপত্রিকার স্টলে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়ারাও ভিড় করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy