Advertisement
E-Paper

সভার আগে পথে টক্কর হোর্ডিংয়ের

এ দিন রাস্তায় নেমে এই কাজের তদারক করতে দেখা গিয়েছে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি রথীন্দ্রনাথ মাহাতোকে। তিনি দাবি করেন, ‘‘দলের শহিদ দিবস ২১ জুলাইয়ের সভার প্রচারের জন্যই এই হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। এখানে অনেক হিন্দিভাষি মানুষও থাকেন। তাই বাংলা ছাড়াও হিন্দিতে লেখা রয়েছে।’’

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০২:৩১
প্রস্তুতি: পুরুলিয়া শহরের রাঁচী রোডে বিদ্যুতের খুঁটিতে অমিত ও মমতার হোর্ডিং। শিমুলিয়ায় সভাস্থল সাজানোর শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রস্তুতি: পুরুলিয়া শহরের রাঁচী রোডে বিদ্যুতের খুঁটিতে অমিত ও মমতার হোর্ডিং। শিমুলিয়ায় সভাস্থল সাজানোর শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। ছবি: সুজিত মাহাতো

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই একই মাঠে সভা করার কথা আগেই ঘোষণা করেছে তৃণমূল। এ বার টক্কর হোর্ডিংয়েও। আজ বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় অমিত সভা করতে আসছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি যে পথে যাবেন, তার পাশেই বিদ্যুতের খুঁটি, গাছে তাঁর ছবি দেওয়া হোর্ডিং মঙ্গলবার টাঙিয়েছিলেন দলের কর্মীরা। বুধবার ঠিক সেই সব খুঁটিতেই বিজেপি নেতাদের হোর্ডিংয়ের উপরে হিন্দি ও বাংলায় লেখা দলনেত্রী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হোর্ডিং টাঙালেন তৃণমূল কর্মীরা। এই হোর্ডিং-তর্জায় অমিতের সভার আগের দিন তেতে উঠল পুরুলিয়া।

বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার তারাপীঠে পুজো দেবেন অমিত। দুপুরে তাঁকে নিয়ে হেলিকপ্টার পুরুলিয়ার সৈনিক স্কুলের হেলিপ্যাডে নামবে। সেখান থেকে তিনি পুরুলিয়া ১ ব্লকের লাগদা গ্রামে বুথ কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাবেন। দুপুর ৩টে নাগাদ তাঁর শিমুলিয়া ময়দানের সভামঞ্চে ওঠার কথা।

লাগদা থেকে শিমুলিয়া সভামঞ্চের দূরত্ব মেরেকেটে আট কিলোমিটার। ওই রাস্তার পাশে অমিতের সঙ্গেই দলের রাজ্য পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গী, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হোর্ডিং লাগানো হয়েছিল। এ দিন দুপুর থেকেই সেই সব খুঁটি ও গাছে ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের প্রতীক’ লেখা হোর্ডিং টাঙানো হয়।

এ দিন রাস্তায় নেমে এই কাজের তদারক করতে দেখা গিয়েছে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি রথীন্দ্রনাথ মাহাতোকে। তিনি দাবি করেন, ‘‘দলের শহিদ দিবস ২১ জুলাইয়ের সভার প্রচারের জন্যই এই হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। এখানে অনেক হিন্দিভাষি মানুষও থাকেন। তাই বাংলা ছাড়াও হিন্দিতে লেখা রয়েছে।’’ যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে স্বাগত জানাতে তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর ভাইপোর ছবি দেওয়া হোর্ডিং পড়ে, মন্দ কি। এটাই তো এ রাজ্যের আসল সংস্কৃতি।’’

যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলছেন, ‘‘বিজেপির পাল্টা হোর্ডিং কেন টাঙাতে যাব? ২১ জুলাইয়ের সভা তো আছেই। রবিবারও বিজেপির কুৎসার জবাব দিতে আমরা বিরাট জনসভার আয়োজন করেছি। তারও প্রচার চলছে।’’ তবে দল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে এই জেলায় বিজেপির উত্থানের পরে জমি ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। তাই প্রচার থেকে সভা এমনকী হোর্ডিং দেওয়ার ক্ষেত্রেও এক ইঞ্চি জমি বিজেপিকে ছাড়তে চাইছে না তারা।

মঙ্গলবার দলের রাজ্যের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সফর বাতিল হলেও বিজেপি নেতা মুকুল রায় জেলায় এসে হেলিপ্যাড থেকে লাগদা গ্রামে গিয়ে বুথ কমিটির বৈঠকের জায়গা সবই দেখে গিয়েছেন। উল্লেখ্য, লাগাদা গ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর বাড়ি যে ব্লকে, সেই পুরুলিয়া ১ ব্লকের মধ্যেই পড়ে। আর অমিতের সভাস্থল পুরুলিয়া ১ ব্লকের শিমুলিয়া ময়দানে হলেও সেই এলাকাটি বলরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতাধীন।

এই বলরামপুরেই পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই বিজেপি তৃণমূলকে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে। ভোটের আগে জগন্নাথ টুডু ও ভোটের পরে ত্রিলোচন মাহাতো এবং দুলাল কুমারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে খুন বলে দাবি করে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতি বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় আসছেন।

বুধবার জেলার বিজেপি শীর্ষ নেতাদের অনেককে দেখা গিয়েছে শিমুলিয়া ময়দানে সভাস্থলের কাজকর্ম দেখভাল করতে। বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই প্যান্ডেল বাঁধা হচ্ছে।

দলের ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি সুভাষ মাহাতো ফোনে বিভিন্ন ব্লকের কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছিলেন, কোথায় কোথায় গাড়ি রাখতে হবে। সভাস্থলের আশপাশে বসানো হচ্ছে বেশ কয়েকটি এলইডি স্ক্রিন। জেলা সভাপতি দাবি করেন, ‘‘দুই লক্ষাধিক মানুষ সভায় আসবেন। বাস, ম্যাটাডোর, ছোট গাড়ি সব মিলিয়ে লোক আসবেন। লাগোয়া ঝাড়খণ্ড থেকেও লোকজন আসবেন।’’

এ দিকে এই সভার আগে সোমবার রাত থেকেই ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া থানাগুলিতে রাস্তায় তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। গাড়ি থামিয়ে, ব্যাগপত্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিজেপি সভাপতির দাবি, ‘‘নিরাপত্তার জন্য সীমানায় পুলিশ তল্লাশি করতেই পারে। কিন্তু, তল্লাশির নামে বিজেপি কর্মীদের সভায় আসা আটকানোর চেষ্টা হলে ফল কিন্তু উল্টো হতে পারে।’’ পুলিশ অবশ্য এই তল্লাশিকে রুটিন বলেই ব্যাখ্যা করেছে।

Amit Shah BJP Dilip Ghosh অমিত শাহ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy