E-Paper

এলাকার মাটিতে সোনা, সৌমিত্রের দাবিতে বিতর্ক

রিপোর্টে উল্লেখ, বাঁকুড়া ছাড়াও, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের কিছু জায়গায় প্রাথমিক সমীক্ষায় (জি-৪) সোনা মিললেও মিলতে পারে।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:২৭
বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। ফাইল চিত্র।

তাঁর দেশের বাড়ির এলাকায় মাটির নীচে সোনা রয়েছে, সমাজমাধ্যমে এমন দাবি করে বিতর্কের মুখে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী জি কিসান রেড্ডি ভারতীয় ভূবৈজ্ঞানিক সর্বেক্ষণ (জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া)-এর গত পাঁচ বছরে রাজ্যের সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করেছেন। মঙ্গলবার রাতে সমাজমাধ্যমে সে রিপোর্টের ছবি দিয়ে বাঁকুড়ার মাটিতে সোনার সম্ভাবনা জানিয়ে গর্ব প্রকাশ করেছেন সৌমিত্র। যদিও ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মাটিতে ধাতু বা খনিজের অস্তিত্ব মিললেই যে সেখানে তা প্রচুর পরিমাণে মজুত রয়েছে, এমন নয়। তাই নিশ্চিত না হয়ে সাংসদের এমন প্রচারে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

রিপোর্টে উল্লেখ, বাঁকুড়া ছাড়াও, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের কিছু জায়গায় প্রাথমিক সমীক্ষায় (জি-৪) সোনা মিললেও মিলতে পারে। ভূতত্ত্ববিদেরা জানাচ্ছেন, জিএসআই-এর খনিজ সমীক্ষার নানা ‘গ্রেড’ (স্তর) রয়েছে। গ্রেড ফোর (জি-৪) হল প্রাথমিক সমীক্ষা। তবে কোনও এলাকায় ধাতু বা খনিজের সংগ্রহ রয়েছে বলার আগে, খুঁটিয়ে বহুস্তরীয় সমীক্ষা করতে হয় এবং কী পরিমাণে, কী অবস্থায় সে ধাতু বা খনিজ রয়েছে, বিচার করতে হয়। এক ভূবিজ্ঞানীর মতে, ‘‘আগুপিছু না জেনে প্রাথমিক সমীক্ষার তথ্য ছড়ালে বিভ্রান্তি বাড়বে। সোনার মতো মূল্যবান ধাতুর ক্ষেত্রে এ নিয়ে সতর্কতা এবং বিচক্ষণতা বিশেষ জরুরি।’’

স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের নিমাই মাজি ও সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের প্রধান মানিক মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকার বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুরি, কৃষিকাজের উপরে নির্ভরশীল। সাংসদের কথায় উৎসাহিত হয়ে কেউ সোনার আশায় মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করলে সমস্যা হবে।’’ তবে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, জেলার কোথাও মাটির তলায় সোনা থাকার কথা তাদের কেউ জানায়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সাংসদের বাড়ির এলাকায় আলাদা করে নিরাপত্তা বাড়ানোর পরিস্থিতি হয়নি।’’

এমন তথ্য প্রচারের আগে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল না কি? সৌমিত্রের দাবি, “আমি শুধু একটা তথ্য জানিয়েছি। সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ অতীতে গরুর দুধে সোনা থাকার দাবি করে কটাক্ষের শিকার হন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘সৌমিত্র কী করে সোনার খবর জানলেন, জানি না। যদি এ ভাবে সব জায়গায় সম্পদ পাওয়া যায়, তা হলে দেশের ভাল হত।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘সৌমিত্রের বক্তব্য ভুল ভাবে উপস্থাপিত করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bishnupur bankura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy