বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে মদের বোতল। বিষ্ণুপুরের নিজস্ব চিত্র।
বিষ্ণুপুর শহরের যত্রতত্র বসছিল মদের ঠেক। রাস্তার পাশে প্রকাশ্যে বেআইনি ভাবে বিক্রি হচ্ছিল দিশি মদ। শহরের গোপন ঠেকে তৈরি হচ্ছিল চোলাই। ফলে কিছুদিন ধরেই অসামাজিক নানা ঘটনায় বিব্রত হচ্ছিল প্রশাসন। উল্টোরথের শোভাযাত্রায় কিছু মদ্যপ যুবকের তান্ডবও দেখতে হয় বিষ্ণুপুর শহরকে। সম্প্রতি সেই কারণেই শহরের মেয়েরা লাঠি-ঝাঁটা হাতে প্রতিবাদে নামে পথে। বৃহস্পতিবার সে সব মদের ঠেকে অভিযান চালালেন বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত। ৪টি ঠেকে হানা দিয়ে এক মহিলা সহ-দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন বিষ্ণুপুর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর রথা বাউরির ছেলে গৌতম বাউরি।
অভিযান শুরু হয় শহরের বালিধাবড়া এলাকা থেকে। স্কুলের ছেলেমেয়েরা যে রাস্তা ধরে রোজ আসা যাওয়া করে। সেই রাস্তার পাশে বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি হচ্ছে এমন অভিযোগ নানা সূত্রে পেয়েছিলেন মহকুমাশাসক। প্রথমে সেখানেই অভিযান চালিয়ে ভিতর থেকে বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে গ্রেফতার করা হয় রবি লোহার নামে এক ব্যক্তিকে। উদ্ধার হয় প্রচুর দিশি মদের বোতল। একই ভাবে মল্লরাজাদের প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি, পাথরের রথের ঠিক উল্টোদিকের ঝুপড়ি বাড়িতে বসে দেশি মদ বিক্রি করতেন বুলু বাউরি। তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্ধার হয়, বেআইনি ভাবে বিক্রির জন্য রাখা প্রচুর বোতল।
এ দিনের অভিযানে মহকুমাশাসকের সঙ্গে ছিলেন ওসি আবগারি, পুলিশ ও মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরা। এ দিন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে এই অভিযান। গৌতম বাউরিকে গ্রেফতার করা হয় মাধবগঞ্জ বদিরপুকুর এলাকায় তাঁর বাড়ি থেকে। উদ্ধার হয়েছে এক পেটি দেশি মদের বোতল-সহ বেশ কিছু বিলিতি মদের বোতলও। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিনা লাইসেন্সে বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি করছিলেন তিনি।
গৌতম হাতেনাতেই ধরা পড়েন। মহকুমাশাসক তাঁর কাছে মদ বিক্রির বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কিছুই দেখাতে পারেননি। সব শেষে অভিযান চলে কৃষ্ণগঞ্জের বাউরি পাড়ায়। সেখানে কাউকে ধরা না গেলেও চোলাই তৈরির একটি ঠেক ভেঙে দেওয়া হয়। আবগারি ওসি(বিষ্ণুপুর) না থাকায় এ দিন অভিযানে ছিলেন সোনামুখীর আবগারি ওসি শ্যামাদাস মণ্ডল। তিনি বলেন, “এ দিনের অভিযানে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কিছু বেআইনি পথে বিক্রির জন্য আসা মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”
মহকুমাশাসক বলেন, “অবৈধ ভাবে যত্রতত্র মদ বিক্রি ও চোলাই তৈরি বন্ধ করতে প্রয়োজনে ফের অভিযানে নামা হবে। আবগারি দফতরকে এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে”। এ দিকে ফরওয়ার্ড ব্লকের এক সময়ের কাউন্সিলর রথা বাউরির ছেলে গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
দলের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মানিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “রথা আমাদের দলের একজন সমর্থক। তবে ওর ছেলের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। বেআইনি পথে মদ বিক্রির মতো অভিযোগে তাঁকে ধরা হলে আমরা চাইব আইনি পথেই ওর শাস্তি হোক”।
ঘটনার কথা শুনে রথা বলেন, “ছেলে যে বেআইনি ভাবে মদের ব্যবসা করে আমি জানতাম না। ওকে ধরে নিয়ে গেছে শুনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy