ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহার দাবিকে ঘিরে অশান্তির প্রেক্ষিতে সম্প্রীতি রক্ষায় ফের বার্তা দিলেন অনুব্রত মণ্ডল। নলহাটির পরে এ বার খয়রাশোলে।
বুধবার বিকেলে খয়রাশোলে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন এবং সাংগঠনিক আলোচনা করতে এসেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত। সেখানেই তিনি বার্তা দেন, হিন্দু-মুসলমান না করে প্রথমে মানুষ হওয়া প্রয়োজন।রুদ্ধদ্বার কক্ষে তো বটেই, পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েও সংশোধিত ওয়াকফ নিয়ে আইন নিয়ে বার্তা দিয়েছেন অনুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘যা বলার আমি বলেছি। হিন্দু-মুসলমান বিভাজন না করে মানুষ হতে হবে। ওয়াকফ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখছেন। চিন্তা করার কারণ নেই।’’
গত সোমবারও নলহাটি পুর-শহরে, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া একটি বেসরকারি অনুষ্ঠান ভবনে তৃণমূলের কর্মী সমাবেশে দলীয় কর্মীদের প্রতি অনুব্রত বার্তা দিয়েছিলেন, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ মিছিল থেকে বীরভূমে যেন কোথাও অশান্তি বা হানাহানি না হয়। বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দেখছেন। তিনি আমাদের রাজ্যে ওই আইন চালু হতে দেবেন না বলে আশ্বস্ত করেছেন। সেখানে আমাদের মধ্যে হানাহানি করে কী লাভ!’’
দুবরাজপুর বিধানসভার কেন্দ্রের অংশ খয়রাশোল ব্লকে ২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে অনেক পিছিয়ে থাকলেও গত বছরের লোকসভা নির্বাচনে এগিয়ে থেকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু, তার পরও ব্লকের ১৩৫টি বুথের ৮০টিতে পিছিয়ে আছে শাসকদল। গোষ্ঠী কোন্দলও নিয়মিত মাথাচাড়া দিচ্ছে ওই ব্লকে। সম্প্রতিক অতীতে একটি খুন এবং দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজির ঘটনার নেপথ্যেও দলের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেথে।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ব্লকের কোন বুথ কী অবস্থায় রয়েছে, সে বিষয়ে ধারণা পেতেই এ দিন সাংগঠনিক বৈঠক করেন অনুব্রত। সব বুথ সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি, ব্লক কমিটি এবং ব্লক কোর কমিটির সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। দল সূত্রে জানা গিয়েছে, কী ভাবে এগোতে হবে, তা ওই ব্লকের নেতা-কর্মীদের বলে দিয়েছেন কেষ্ট। পাশাপাশি ওয়াকফ নিয়ে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার বার্তাও দেন। অনুব্রতের সঙ্গী ছিলেন জেলা কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা সাম্প্রতিক অতীতে খুন ও বোমবাজির ঘটনা নিয়ে কিছু বলেছেন কি না, জানতে চাওয়ায় অনুব্রতের মন্তব্য, ‘‘আমি দল করি বলে তো খুন করার অধিকার নেই। পুলিশ পুরোটা দেখছে।’’ দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, জেলা সভাপতির এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়েই বার্তা স্পষ্ট। নিজেদের মধ্যে কোন্দল ভুলে, খুনোখুনির রাজনীতি ছেড়ে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)