Advertisement
E-Paper

এসএমএসে হাজিরা চাই

মহকুমাশাসক (খাতড়া) রাজু মিশ্র জানান, প্রাথমিক থেকে উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা-সহ দু’টি ব্লকের প্রায় ৪০০টি সরকারি স্কুলে এসএমএসের মাধ্যমে তথ্য জানানোর পদ্ধতি চালু হয়েছে

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০৭:০০
ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

ছাত্রদের হাজিরা শিক্ষক দেখেন। কিন্তু, শিক্ষকেরা কি ঠিক সময়ে স্কুলে আসেন? দেখবে কে? বাঁকুড়ায় তা দেখতে শুরু করল জেলা প্রশাসন। শিক্ষকদের স্কুলে আসা ও স্কুল থেকে যাওয়া সংক্রান্ত খুঁটিনাটি এ বার রোজ দু’দফায় জেলা প্রশাসনকে এসএমএস-এ জানাতে হবে প্রধান শিক্ষককে। শুক্রবার প্রথম ধাপে এই খবর দেওয়া শুরু হল খাতড়া ও রানিবাঁধ ব্লকের সব ক’টি স্কুলে। এ বার জেলার বাকি স্কুলেও তা চালু হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।

বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “প্রাথমিক ভাবে ওই দু’টি ব্লকেই এসএমএসের মাধ্যমে শিক্ষকদের উপস্থিতির তথ্য জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলার সব ক’টি ব্লকেই ওই পদ্ধতি শীঘ্রই চালু করতে চলেছি আমরা।” মহকুমাশাসক (খাতড়া) রাজু মিশ্র জানান, প্রাথমিক থেকে উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা-সহ দু’টি ব্লকের প্রায় ৪০০টি সরকারি স্কুলে এসএমএসের মাধ্যমে তথ্য জানানোর পদ্ধতি চালু হয়েছে। আমরা নজর রাখব।

বস্তুত, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে স্কুলে অনিয়মিত আসার অভিযোগ নতুন নয়। প্রায়ই বিভিন্ন স্কুলে গ্রামবাসীদের এ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তাই এই উদ্যোগে খুশি তাঁরা। আবার অনিয়মিত আসা যাওয়া করা শিক্ষকদের বাগে আনতে যে সব প্রধান শিক্ষক নাকাল হচ্ছিলেন, তাঁরাও প্রশাসনের নজর পড়ায় স্বস্তি পেয়েছেন।

ঘটনা হল, জেলাশাসকের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই বালি পরিবহণের সময় একই ভাবে প্রশাসনের চালু করা একটি বিশেষ নম্বরে এসএমএস করে গাড়ির নম্বর, বালির পরিমাণের মতো বিভিন্ন তথ্য জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জেলার রেশন ডিলারদের কাছে মজুত খাদ্যদ্রব্যের তথ্য জানতেও বিশেষ পোর্টাল চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনিক কর্মীদের অফিসে হাজিরার সঠিক তথ্য জানতে দফতরগুলিতে চালু হয়েছে বায়োমেট্রিক হাজিরাও। এ বার স্কুলের শিক্ষকদের হাজিরার খবর রাখতেও এসএমএস প্রক্রিয়া চালু করা হল।

খাতড়ার মহকুমাশাসক বলেন, “অনেক সময়ই আমরা স্কুলে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি কিছু শিক্ষক উপস্থিত থাকেন না। প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে বলা হয়, তাঁরা স্কুলেরই কাজে বাইরে গিয়েছেন। এ বার থেকে কত শিক্ষক স্কুলে উপস্থিত, কত জন আবেদন করে ছুটি নিয়েছেন, কত জন শিক্ষক না জানিয়ে স্কুলে আসেননি, স্কুলের কাজে কত জন বাইরে গিয়েছেন— মূলত এই সব তথ্য এসএমএসে জানাতে হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে তথ্য ঠিক রয়েছে কি না তা যাচাই করতে পরিদর্শনও চলবে বলে জানানো হয়েছে। জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের (মাধ্যমিক) এক আধিকারিক বলেন, “দফতরে একটিই মাত্র গাড়ি। তা নিয়ে জেলা জুড়ে নিয়মিত স্কুলে ঘোরা সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রশাসনের এই উদ্যোগে আমাদের দফতরেরও সুবিধাই হবে।”

যদিও প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে শিক্ষক মহলে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। এবিটিএ-র জেলা সহ সম্পাদক আশিস পান্ডে বলেন, “স্কুলে স্কুলে শিক্ষকের অভাব। রুটিন মাফিক ক্লাস করানো যাচ্ছে না। প্রধান শিক্ষকেরা মিড-ডে মিল সামলানো ও সুশৃঙ্খল ভাবে স্কুল চালাতে গিয়েই হাঁফিয়ে উঠছেন। তার উপরে আবার এই এসএমএসের বোঝা!” তাঁর মতে, প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নয়নে নজর দিলে কাজের কাজ হত। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি গৌতম দাস অবশ্য বলেন, “এসএমএস করতে আর কতক্ষণ সময় লাগে? এতে বাড়তি বোঝা মোটেও চাপবে না, বরং শিক্ষকদের নিয়মানুবর্তিতায় সতর্কতা বাড়বে।”

Academics Administration Student Teacher
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy