Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

কিশোর খুনে ধৃত জেঠিমা

সম্পত্তির কারণেই সাহিলকে খুন  করা হয়েছে। অসুস্থতার জেরে মৃত্যু হয়েছিল সাহিলের বাবার।

নিহত সাহিল শেখ।

নিহত সাহিল শেখ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মুরারই শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৪
Share: Save:

সাত মাস আগে খুন হয়েছিল মুরারইয়ের ভাদীশ্বরের বালক সাহিল শেখ। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে বুধবার রাতে সাহিলের জেঠিমাকে গ্রেফতার করা হল। পুলিশ জানায়, ধৃত ছবিনা বেগমকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজত পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের শেষ দিন দুপুরে নিখোঁজ হয় বছর নয়েকের সাহিল। ১ জানুয়ারি পুলিশ কুকুর নিয়ে এলাকায় তল্লাশি চালানো হলেও ওই কিশোরের হদিস মেলেনি। তা নিয়ে সে দিন সন্ধ্যেয় থানা ঘেরাও করেন এলাকাবাসী। ২ জানুয়ারি সকালে স্থানীয় মসজিদ লাগোয়া গলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় সাহিলে মৃতদেহের খোঁজ মেলে। কী ভাবে ওই দেহ সেখানে গেল তা নিয়ে ধন্দ ছড়ায়। পঞ্চম শ্রেণির সাহিলের খুনের ২৭ দিন পরে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় তার জেঠু হাইতুল শেখের। মুরারই স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেললাইনে তাঁর দেহের হদিস মেলে। ৩ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন হাইতুল। সাহিলের পরপরই তার জেঠুর মৃত্যু নিয়ে ধন্দে পড়েছিলেন তদন্তকারীরা।

প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, সম্পত্তির কারণেই সাহিলকে খুন করা হয়েছে। অসুস্থতার জেরে মৃত্যু হয়েছিল সাহিলের বাবার। সাহিলের মা মুসলেমা বিবি মাড়গ্রামের একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে চাকরি করতেন। ছেলেকে নিয়ে তিনি থাকতেন বাপের বাড়িতে। পরে তিনি ঠিক করেন, ছেলেকে নিয়ে থাকবেন শ্বশুরবাড়িতেই। চাকরিতে বদলি নিয়ে মুরারইয়ের আদরাপাড়ায় চলে আসেন তারা। পুলিশর দাবি, সম্পত্তি ভাগ হয়ে যাবে, সেই আশঙ্কায় ছিল ছবিনা বিবি। পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ হওয়ার দিন সাহিলকে কয়েক জন পড়শি তার জেঠিমার বাড়িতে ঢুকতে দেখেছিলেন। ওই মহিলার ফোনের কল-লিস্ট ও কথায় অসংলগ্নতা পাওয়ার পর থেকেই তার উপরে নজর রেখেছিল মুরারই থানার পুলিশ।

সরকারি আইনজীবী সৈকত হাটি বলেন, ‘‘দেওরের ছেলেকে খুনের ঘটনায় জেঠিমার যোগসাজস পেয়েছে পুলিশ। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা করছে।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, সাহিলের পরিবারের অন্য লোকেদের উপরেও নজর রাখা হয়েছিল। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতেই শেষে সাহিলের জেঠিমাকে গ্রেফতার করা হয়।

তবে সাহিলের ঠাকুমা নেজের বানু বিবির দাবি, ‘‘আমার বৌমা নির্দোষ। ছবিনার দুই ছেলে রয়েছে। ওদের বাবা মারা গিয়েছে। মাকেও পুলিশ ধরে নিয়ে গেল।’’ তিনি আরও জানান, সাহিলের মৃত্যুর পরপরেই তার মা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাঁর কোনও খোঁজ তিনি জানেন না। সাহিলের মা মুসলেমা বিবির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Property Dispute Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE