Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শৌচালয়ে পাঠাতে মাঠে পাহারা

বড়রা, নীলডি ও জোরাডি পঞ্চায়েতকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্মল হিসাবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রঘুনাথপুর ২ ব্লক প্রশাসন। বিডিও সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, শুধু প্রচারে চিঁড়ে ভিজবে না বুঝে তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। ভোরে এবং সন্ধ্যায় তাঁরা টহল দিতে বেরোচ্ছেন।

সজাগ: মাঠে শৌচকর্ম করতে বারণ করছেন কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

সজাগ: মাঠে শৌচকর্ম করতে বারণ করছেন কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৯:৩০
Share: Save:

সকাল-সন্ধ্যা দল বেঁধে চলছে মাঠ পাহারা। পঞ্চায়েত এলাকাকে নির্মল করে তুলতে কোমর বেঁধে নেমেছে প্রশাসন।

বড়রা, নীলডি ও জোরাডি পঞ্চায়েতকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্মল হিসাবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রঘুনাথপুর ২ ব্লক প্রশাসন। বিডিও সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, শুধু প্রচারে চিঁড়ে ভিজবে না বুঝে তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। ভোরে এবং সন্ধ্যায় তাঁরা টহল দিতে বেরোচ্ছেন। খোলা মাঠে, পুকুরের পাড়ে শৌচ করতে আসা লোকজনকে বোঝাচ্ছেন। মাস খানেক ধরে এমনটা চলছে। ফলও মিলছে বলে দাবি সুরজিতের। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই এখন বাড়ির শৌচালয় ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।’’

জেলা জুড়েই নির্মল বাংলা মিশন প্রকল্পে গতি আনতে সচেষ্ট হয়েছে প্রশাসন। তবে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশই মানছেন, এখনও পর্যন্ত ওই প্রকল্পে বড়সড় সাফল্যের নজির নেই। বস্তুত, নির্মল বাংলা মিশন প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি শৌচালয় তৈরি করার বন্দোবস্ত হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রেই শৌচালয় থাকলেও তা ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে উঠছে না। সেই কথা মাথায় রেখেই নির্মল ঘোষণার আগে মাঠে নেমেছে রঘুনাথপুর ২ ব্লক প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্মল বাংলা মিশন ও একশো দিনের কাজ প্রকল্পে রঘুনাথপুর ২ ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতে শৌচালয় তৈরি করা হচ্ছে। বড়রা পঞ্চায়েতে শৌচালয় হয়েছে ১৩৫৪টি। জোরাডিতে ২৬০০টি। নীলডিতে ৪৪৫৮টি। কিন্তু শুধু তৈরি হলেই হল না, ব্যবহারও নিশ্চিত করা দরকার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পাহারার কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মর্নিং অ্যান্ড ইভিনিং ফলোআপ’। বিডিও জানান, পাহারার দলে রয়েছেন আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েতের কর্মী, নির্মল বাংলা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য এবং সর্বোপরি গ্রামের সাধারণ মানুষজন। দু’দফায় তাঁরা টহল দিতে বেরোচ্ছেন। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত একবার। আবার বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। দুপুরে বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন তাঁরা। তাদের বলা হচ্ছে বাড়িতে বড়দের সচেতন করতে।

বড়রা পঞ্চায়েতের উজ্জল গ়ড়াই, জোরাডি পঞ্চায়েতের বংশীধর মাহাতো, নীলডি পঞ্চায়েতের অধরচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘প্রথমটা সমস্যা হচ্ছিল। অনেকেই বিরক্ত হচ্ছিলেন। কয়েকজন ঝামেলাও করেন। তবে ধীরে ধীরে সবাই বুঝতে শুরু করেছেন।’’

তাঁদের দাবি, গ্রামের অনেকেই খোলা মাঠে শৌচ করতে অভ্যস্ত। সেই অভ্যাসটাই কাটাতে চাইছেন তাঁরা। অভ্যাস বদলও হচ্ছে। বিশেষত, পড়ুয়াদের মধ্যে শৌচালয় ব্যবহারের অভ্যাস চোখে পড়ার মতো বেড়েছে বলে তাঁদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raghunathpur Toilet Awareness Programme
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE