E-Paper

টোলের টাকায় দুর্নীতি, অভিযোগ

বাসুদেব ঘোষ 

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৭
বোলুপুরের একটি টোল আদায়ের কেন্দ্র।

বোলুপুরের একটি টোল আদায়ের কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র ।

বৃহস্পতিবার টোল চাওয়া নিয়ে বচসার জেরে কলকাতা হাই কোর্টের এক মহিলা আইনজীবীকে যৌন হেনস্থা ও তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল বীরভূমে। ঘটনাটি ঘটে বীরভূমের একটি থানা এলাকায় থাকা টোল প্লাজ়ার কাছে। তবে এ বারই প্রথম নয়, বীরভূমে টোল আদায় নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ ওঠে। বিরোধীদের অভিযোগ, অধিকাংশ টোলই বেআইনি। এগুলি থেকে অর্থ শাসক দলের কাছে যায়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

বোলপুর শহরের ছ'টি জায়গায় পুরসভা টোল আদায় করে। কোনও গাড়ি ৩০ টাকা, কোনও গাড়ি ৫০ টাকা, দশ চাকার লরি পিছু ৮৫ টাকা, আর ছোট ট্রাকে ৪০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এই টাকা আদায়ের ক্ষেত্রেও নানা সময় বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনেক সময়ে দেখা যাচ্ছে যিনি রসিদগুলি দিয়ে টাকা তুলছেন রসিদে তাঁর কোনও সই নেই। যে গাড়ির থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে সে গাড়ির নম্বরেরও উল্লেখ থাকছে না।

এ দিনও এমনই একটি টোল প্লাজ়ার কর্মী সিলাচি হাজরা বলেন, “পুরসভার নির্দেশ মেনেই টোল আদায় করি।” এই টোল আদায়ের সঙ্গে জেলার শাসক দলের অনেক নেতাদেরও যোগ রয়েছে বলেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। গরু পাচার মামলায় সিবিআই-এর হাতে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরে বেশ কয়েকটি টোল প্লাজ়া বন্ধ হয়ে যেতে দেখা যায়। তবে কিছু দিন পরে আবারও সেগুলি খোলে। অভিযোগ, সম্প্রতি অডিয়ো কাণ্ডে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট) থানায় হাজিরা দেন এমনই একজন টোল আদায়কারীর গাড়িতে। তিনি বালি কারবারিও ছিলেন।

স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এই টোল আদায় করা হয় মূলত শহরের রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্য। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘এই টোল পুরসভার অনুমোদিত হলেও পুরোটা তৃণমূলের নেতারা নিয়ন্ত্রণ করে। এখান থেকে অবৈধ ভাবে টাকা রোজগার করা হচ্ছে। তৃণমূল যত দিন থাকবে, অরাজকতা চলতে থাকবে।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘অবৈধ ভাবেই জেলার অধিকাংশ টোল চলছে। এর থেকে যে উপার্জন তাতে শহরের উন্নয়ন হচ্ছে না। শাসক দলের উন্নয়নে কাজে লাগছে সেই টাকা।’’

বোলপুরের পুরপ্রাধন পর্ণা ঘোষ বলেন, “টোলগুলি আইন মেনেই চলছে। সমস্ত কাগজ রয়েছে। আমি চার বছর পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছি। তার আগে কী ভাবে কী হয়েছে বলতে পারব না।” তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিরোধীদের অভিযোগ মিথ্যা। পুর-এলাকায় যে টোল ট্যাক্স আদায় হয়, তা পুরসভার নিজস্ব তহবিলে জমা হয় উন্নয়ন-কাজের জন্য। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। বিরোধীরা মিথ্যা কথা বলছে কেবল বাজার গরম করার জন্য।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bolpur Toll Tax

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy