Advertisement
E-Paper

ট্যাবলেট নয়, অভাব সচেতনতার

আয়রন ট্যাবলেট নয়, অভাব রয়েছে সচেতনতার— এমনই দাবি করছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ। এ জন্যে তাঁরা স্বাস্থকর্মীদের একাংশের পাশাপাশি গর্ভবতী ও প্রসূতিদের গাফিলতিকেও দায়ী করছেন।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:০৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আয়রন ট্যাবলেট নয়, অভাব রয়েছে সচেতনতার— এমনই দাবি করছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ। এ জন্যে তাঁরা স্বাস্থকর্মীদের একাংশের পাশাপাশি গর্ভবতী ও প্রসূতিদের গাফিলতিকেও দায়ী করছেন।

ওই স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য— জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ সমিতি, রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা এবং রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ থেকে প্রচারিত নিরাপদ মাতৃত্বের বই ‘আমি মা হতে চলেছি’ স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রত্যেক গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের কাছে থাকা দরকার। কিন্তু তাঁদের অনেকেই ওই বইয়ের কথা জানেন না।স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই বইটিতে প্রাক্‌-প্রসব পরীক্ষা, প্রসবের আগে পরীক্ষা, টিটেনাস টিকাকরন, আয়রণ ও ফলিক অ্যাসিডের (আইএফএ) উপকারিতা, ভিটামিন ডি যুক্ত ক্যালসিয়াম বড়ি, কৃমিনাশক ওষুধের কথা লেখা রয়েছে।

রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ডেপুটি সিএমওএইচ ত্রিদিব মুস্তাফি জানান, সুস্থ-সবল শিশুর জন্ম সুনিশ্চিত করতে ওই বই জেলার প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিলি করার জন্য দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, জেলার দু’টি স্বাস্থ্যজেলায় গর্ভবতী এবং প্রসুতি মায়েদের জন্য আয়রন ট্যাবলেট জোগানের অভাব নেই। গর্ভাবস্থার চতুর্থ মাস থেকে প্রসবের পরে ছ’মাস পর্যন্ত প্রতি দিন একটি করে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড বড়ি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সে সব ট্যাবলেট বিতরণও করে সরকার। এ ছাড়া কেউ রক্তাল্পতায় ভুগলে প্রতি দিন দু’টি করে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার কথা।

স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ জানান, সচেতনতার অভাবেই কিছু ক্ষেত্রে গর্ভবতী এবং প্রসূতিরা স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ মেনে ওই ট্যাবলেট নিতে চান না। বা নিলেও সব ট্যাবলেট নিয়ম মেনে খান না। তাঁদের বোঝানোর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের গাফিলতির কথা মানার পাশাপাশি, গর্ভবতী ও প্রসূতিদের অনীহাও থাকে বলে মতপ্রকাশ করেছেন ওই স্বাস্থ্যকর্তারা।

ট্যাবলেটের জোগানের অভাবের কথা না মানলেও, বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার ‘ডিস্ট্রিক্ট পাবলিক হেল্‌থ নার্সিং অফিসার’ শোভা গুনরি বলেন, ‘‘নজরদারির অভাব কিছুটা রয়েছে। তা ছাড়া রয়েছে সচেতনতার অভাবও। যার ফলে খুব কম সংখ্যায় হলেও, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েরা ওই ট্যাবলেট নিয়মিত খাচ্ছেন না।’’

বৃহস্পতিবার রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সে কথারই সত্যতা মিলল। নলহাটি পুরসভার শিউড়াপাহাড়ির ১৮ বছরের রেহেনা খাতুন প্রথম সন্তানের স্বাভাবিক প্রসব করে বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরছেন। তিনি জানান, স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া আয়রন ট্যাবলেট গর্ভাবস্থার চার মাস থেকে ১৮০ দিন পর্যন্ত একটা করে প্রতি দিন খেয়েছেন। হাসপাতালের নার্সরা আগামী ছ’মাস তাঁকে প্রতি দিন ওই ট্যাবলেট খেতে বলেছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরের তরফে বিতরণ করা কোনও বই পাননি। রামপুরহাট থানার সইপুর গ্রামের রাখি লেট, মাড়গ্রামের তপন গ্রামের লালবানু বিবিও জানান, আয়রন ট্যাবলেট তাঁরা পেয়েছেন। প্রতি দিন একটি করে খেয়েছেনও। ছুটি হওয়ার পরেও ছ’মাস ওই ট্যাবলেট তাঁদের খেতে বলা হয়েছে।

প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর গ্রামের কল্বেশ্বরী সাহা বলে, ‘‘দিদিরা দিলেও সব ট্যাবলেট খেতে পারিনি।’’ ওই বিভাগেই চিকিৎসাধীন আরও কয়েক জনের বক্তব্য ছিল একই।

রামপুরহাট ১ ব্লকের আশাকর্মী— আখিড়া গ্রামের রুপালি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পাখুড়িয়া গ্রামের রেইমা খাতুন জানান, বাড়িতে বাড়িতে প্রয়োজনমতো আয়রন ট্যাবলেট নিয়মিত তাঁরা দিয়ে আসেন।

রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ডেপুটি সিএমওএইচ ত্রিদিব মুস্তাফি বলেন, ‘‘আয়রন ট্যাবলেটের জোগানে কোনও সমস্যা নেই। তবে সচেতনতার অভাব রয়েছে কয়েকটি জায়গায়। তা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’

Pregnant Women Awareness Iron Tablet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy