Advertisement
E-Paper

চলন্ত ট্রেনে প্রসব, স্টেশনে মিলে গেল ডাক্তারও

রাতের ডাউন চক্রধরপুর-হাওড়া ফাস্ট প্যাসেঞ্জার। গার্ডের কেবিনের আগের কামরার যাত্রী ছিলেন ঝাড়খণ্ডের কাঁড়রার বধূ লক্ষ্মী গুপ্ত। সঙ্গী স্বামী, বাবা, মা এবং বছর পাঁচেকের মেয়ে শিবানী।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১১
মা-শিশুর সঙ্গে সুভাষবাবু। নিজস্ব চিত্র

মা-শিশুর সঙ্গে সুভাষবাবু। নিজস্ব চিত্র

বাপের বাড়ি ফিরছিলেন এক আসন্নপ্রসবা। চেনা পরিবেশে, চেনা মানুষের যত্নে নবজাতকে পৃথিবীর প্রথম আলো দেখাবেন। সব কিছু ঠিক করাই ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিসেব মতো কিছুই হল না। চলন্ত ট্রেনেই ভূমিষ্ঠ হল সন্তান, রবিবার রাতে পুরুলিয়া স্টেশনে ঢোকার আগে।

রাতের ডাউন চক্রধরপুর-হাওড়া ফাস্ট প্যাসেঞ্জার। গার্ডের কেবিনের আগের কামরার যাত্রী ছিলেন ঝাড়খণ্ডের কাঁড়রার বধূ লক্ষ্মী গুপ্ত। সঙ্গী স্বামী, বাবা, মা এবং বছর পাঁচেকের মেয়ে শিবানী। দ্বিতীয় সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে লক্ষ্মীর গন্তব্য বাঁকুড়া শহরের বাপের বাড়ি। পুরুলিয়া স্টেশনে ট্রেন ঢোকার আগেই প্রসব বেদনা প্রবল হয়। পরিজনেরা তাঁকে ঘিরে আড়াল করেন। সাহায্যে এগিয়ে আসেন এক মহিলা সহযাত্রী।

জন্ম হয় একটি পুত্রসন্তানের।

এ দিকে যাত্রীদের থেকে খবর পৌঁছয় গার্ডের কাছে। পুরুলিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার সঞ্জয়কুমার মণ্ডল জানান, ট্রেন আসার আগেই কন্ট্রোলরুম থেকে তাঁদের কাছে খবর এসে গিয়েছিল। রেলের চিকিৎসক, নার্স সমস্ত বন্দোবস্ত করে অপেক্ষা করছিলেন। ট্রেন ঢুকতেই ওই বধূর কাছে পৌঁছে যান তাঁরা। স্টেশনে থমকে থাকে ট্রেন।

এ দিকে তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়ালকে পুরুলিয়া থেকে ফেরার ট্রেনে তুলতে স্টেশনে হাজির ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার। সুভাষবাবু নিজে এক জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনিও খবর পেয়ে সেখানে যান। রেলের চিকিৎসক অমিত সরকার বলেন, ‘‘মহিলার প্রসব হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নাড়ি তখনও লেগে ছিল।’’

লক্ষ্মীর মা মীনাবালা চৌধুরী জানান, আত্মীয়ের মমতায় লক্ষ্মীকে আগলে রেখেছিলেন রেলকর্মী মীনাক্ষি পিল্লাই। ছোটাছুটি করে স্ট্রেচার আর অ্যাম্বুল্যান্সের বন্দোবস্ত করেন শিবু সূত্রধর, জয়শঙ্কর প্রসাদরা। দুই চিকিৎসকের তৎপরতায় মা ও শিশুকে পাঠানো হয় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। সোমবার সকালে হাসপাতালে নবজাতককে কোলে নিয়ে লক্ষ্মী বলেন, ‘‘ভাল আছি। সবাই আপনজনের আন্তরিকতায় আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। মনে হচ্ছে ট্রেনটাই আমার কতদিনের চেনা বাড়ি।’’

এ দিন হাসপাতালে নবজাতক এবং মা-কে দেখতে গিয়েছিলেন সুভাষবাবু। লক্ষ্মী এবং তাঁর মায়ের কৃতজ্ঞতার উত্তরে বলেছেন, ‘‘ঘটনাচক্রে আমি তখন স্টেশনে ছিলাম। চিকিৎসক হিসাবে নিজের কর্তব্যটুকু করেছি মাত্র।’’ তবে লক্ষ্মী পণ করে বসেছিলেন, ডাক্তারবাবুকেই তাঁর ছেলের নাম দিতে হবে। সুভাষবাবু নাম রেখেছেন— দীনদয়াল।

Purulia Train Delivery পুরুলিয়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy