বাংলার বাড়ি তথা আবাস যোজনার কাজে গতি আনতে তৎপরতা বাড়াল রাজ্য সরকার। সূত্রের দাবি, রাজ্য সরকারের টাকায় বাড়ি তৈরি করা না হলে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেবে ব্লক প্রশাসন। রাজ্য থেকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরে নানা কারণে অনেকেই কাজ এখনও পর্যন্ত শুরু করতে পারেননি। ইতিমধ্যে গ্রামে গ্রামে ঘুরে দ্রুত কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিচ্ছেন বিডিও-রা।
শুক্রবার পুরুলিয়া ২ ব্লকের আগয়া নড়রা পঞ্চায়েতের বড়াসিনি গ্রামে গিয়ে তিন জন উপভোক্তাকে টাকা পেয়েও কেন তাঁরা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি, সে জন্য নোটিস দিয়েছেন ওই ব্লকের বিডিও বাপী ধর।
বিডিও বলেন, ‘‘এলাকা ঘুরে ঘুরে যাচাই করার কাজ চলছে। আবাস প্রাপকদের বাড়ি তৈরির কাজ যে অবস্থায় রয়েছে তা নির্দিষ্ট অ্যাপে ছবি তুলে পাঠাতে হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই বাড়ি তৈরির কাজ এখনও পর্যন্ত শুরু করেননি। তাঁদের এ দিন নোটিস দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে সাত দিনের মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে। অন্যথায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
টাকা পেয়েও কেন বাড়ি তৈরি করছেন না? বিডিও-র দাবি, কেউ কেউ জমি সংক্রান্ত শরিকি বিবাদের জেরে এখও কাজ শুরু করতে পারেননি। তাঁদের সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। তাঁরা কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।
বিডিও (বাঘমুণ্ডি) আর্য তা বলেন, ‘‘বেশির ভাগ উপভোক্তাই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কিছুজন হয়তো এখনও শুরু করতে পারেননি। তাঁদেরও দ্রুত বাড়ি তৈরি করতে বলা হয়েছে।’’ বিডিও (বান্দোয়ান) রুদ্রাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বালির সমস্যার কারণে অনেকেই শুরু করতে পারেননি বলে আমাদের জানাচ্ছেন। তাঁদের বলা হয়েছে বালি পেলেই কাজ শুরু করতে।’’
বেশ কিছু পরিযায়ী শ্রমিক বাইরে থাকায় তাঁদের বাড়ি তৈরির কাজ এখনও শুরু হয়নি। তাঁদেরও ব্লক থেকে ফোন করে কাজ শুরু করতে বলা হচ্ছে। বিডিও (বলরামপুর) সৌগত চৌধুরী বলেন, ‘‘অধিকাংশ জায়গাতেই বাড়ি কাজ চলছে। ব্লকের ২০ জন মতো উপভোক্তা আছেন, যাঁরা এখনও পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারেননি। তাঁরা বাইরে কাজ করেন। তাঁদের ব্লক থেকে ফোন করে দ্রুত বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। তবে টাকা নিয়ে বাড়ি তৈরি করবেন না এমন মানসিকতা হলে কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না।’’
তবে বালির জোগান কম এবং দর খুব বেশি থাকায় অনেকেই এখনও পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারেননি। পুরুলিয়া ১ ব্লকের রুদড়া গ্রামের বাসিন্দা মালাবতী মাহাতো, শিবনাথ মাহাতো প্রমুখ বলেন, ‘‘বাড়ি তৈরির জন্য বালি পাচ্ছি না। কেউ কেউ আবার এক ট্রাক্টর বালির জন্য পাঁচ হাজার টাকা চাইছেন। ওই টাকায় বালি কিনতে গেলে সরকারি সহায়তার অর্ধেক টাকাই বালির জন্য খরচ হয়ে যাবে।’’
অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) রাজেশ রাঠৌর বলেন, ‘‘আমাদের বেশ কিছু বৈধ বালি ঘাট চালু রয়েছে। আরও কিছু ঘাট চালু হয়ে যাবে। আশাকরি, জেলায় বালির সমস্যা মিটে যাবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)