Advertisement
E-Paper

মনোনয়ন জমায় বাঁকুড়ায় বামেদের থেকে এগিয়ে বিজেপি

মনোনয়ন জমা করা যে শেষ দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল কমিশন, সেটা পেরিয়ে যাওয়ার পরে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে দুই দলই। তার পরেও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জমা পড়েছে তাদের প্রার্থীদের কিছু মনোনয়ন। হিসাব কষে দেখা যাচ্ছে, সেখানে সিপিএমের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।

মনোনয়ন জমা করা যে শেষ দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল কমিশন, সেটা পেরিয়ে যাওয়ার পরে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। চলছে হাইকোর্টে।

তবে বিজেপি ও সিপিএম সূত্রে জানা যাচ্ছে, গ্রামপঞ্চায়েত স্তরে বামফ্রন্ট জেলা জুড়ে ৫৯৮টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র এলাকাটিকে বিজেপি চিহ্নিত করে ‘বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা’ হিসাবে। শুধু সেখানেই তারা ৬৬৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। বাকি থাকে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র। তার মধ্যে ওন্দা, গঙ্গাজলঘাটি ও বাঁকুড়া ২ ব্লকের একাংশে বিজেপির কিছু প্রার্থী রয়েছেন।

পঞ্চায়েত সমিতিতে বামফ্রন্ট জেলা জুড়ে ১২৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আর বিজেপি বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলাতেই প্রার্থী দিয়েছে ১৪০টি আসনে। জেলা পরিষদে অবশ্য দুই দলই ১৪টি করে প্রার্থী দিয়েছে।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই হিসেব থেকেই এক প্রকার বোঝা যাচ্ছে, গ্রামাঞ্চলের তৃণমূল স্তরে বামেদের থেকেও বিজেপির শক্তি বাড়ছে। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “গ্রামাঞ্চলে প্রার্থী ঠিক করতে গিয়ে সিপিএম এ বার অনেক জায়গাতেই ধাক্কা খেয়েছে। অনেকেই ওদের হয়ে দাঁড়াতে চাননি। বহু এলাকায় তাই বাইরে থেকে প্রার্থী এনে দিতে হয়েছে ওদের।”

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের গোড়া থেকেই বিরোধী দলগুলি শাসকদলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে আসছে। বিডিও অফিস, এসডিও অফিসের সামনে সশস্ত্র বাহিনী জমায়েত করে বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিবেকানন্দবাবু বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিপিএমের চেয়েও বিজেপির উপরেই বেশি ভরসা করছেন। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কিছু জায়গায় শাসকদলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছি।’’

বিজেপির এই দাবি মানতে চাননি জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, জেলা জুড়ে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য থাকলেও সন্ত্রাসের জেরেই আটকে পড়েছেন তাঁরা। দলের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “সিপিএমের নেতা আর প্রার্থীদের সবাই চেনেন। তাই আমাদের সহজেই চিহ্নিত করে আটকে দিয়েছে। বিজেপির ক্ষেত্রে সেই অসুবিধা ছিল না, কারন ওদের কেউ সে ভাবে চেনেই না। ফলে এর মধ্যেও বেশ কিছু মনোনয়ন জমা করতে পেরেছে ওরা।”

যদিও আপাতত পরিস্থিতিতে প্রার্থী দেওয়ার থেকেও ভোট পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন ধরে রাখতে পারাটাই দুই বিরোধী দলের মাথাব্যথার কারণ বলে জানা যাচ্ছে। দু’-দলই অভিযোগ তুলছে, মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য তাদের প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে; হচ্ছে হামলাও। বিবেকানন্দবাবু বলেন, “তৃণমূল, পুলিশ ও প্রশাসন একসঙ্গে ভোট করাতে নেমেছে। মনোনয়নেই যা পরিস্থিতি দেখলাম তাতে ভোটের দিনও পুলিশ শাসকদলকে সুবিধা করে দিতে অবাধে বুথ জ্যাম করার সুযোগ করে দেবে বলে আমরা ধারণা।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কিঙ্কর পোশাকেরও একই বক্তব্য। ভোটের দিন কোনও বাধা এলে তা রোখার জন্য সাধারণ মানুষকে এক জোট করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি ও সিপিএমের নেতারা। সেই ব্যাপারে দুই দলের কৌশলও মোটামুটি এক। গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়া।

কিঙ্করবাবু বলেন, “দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর কয়েক জন সদস্যকে এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। নিজেদের এলাকার বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন তাঁরা। মানুষকে বলছেন একজোট হতে। যাতে ভোটের দিন গ্রামে কোনও ভাবেই কেউ অশান্তি বাধাতে না পারে।’’ বিবেকানন্দবাবু বলেন, “আমাদের প্রতিটি বিধানসভাভিত্তিক একজন করে অবজার্ভার রয়েছেন। এ ছাড়াও প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতিতে দলের শক্তি কেন্দ্রও আছে। অবজার্ভার ও শক্তিকেন্দ্রের পরিচালকেরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের কাছে শাসকদলের মাতব্বরির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আবেদন করছেন।”

তবে তৃণমূলের দাবি, হার নিশ্চিত জেনেই এই সমস্ত করছে বিজেপি ও সিপিএম। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খান বলেন, “রাজ্য সরকারের উন্নয়নের জোয়ার দেখে গ্রামের প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। ভোটে বিরোধীদের জামানত জব্দ হবে। সেটা বুঝে আগে ভাগেই সন্ত্রাস হবে বলে অভিযোগ তুলছে ওরা।”

CPM BJP West Bengal Panchayat Election 2018 সিপিএম বিজেপি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy