Advertisement
E-Paper

মহম্মদবাজারের সেকেড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসকে ৪ আসনে সমর্থন সিপিএমের

একসময়ের দখলে থাকা পঞ্চায়েতে এ বার নিজেদের প্রার্থী-ই নেই। এই অবস্থায় শাসকদলকে বেগ দিতে মহম্মদবাজারের সেকেড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের চারটি আসনের কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থনের কথা জানাল সিপিএম।

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ০১:১৭

একসময়ের দখলে থাকা পঞ্চায়েতে এ বার নিজেদের প্রার্থী-ই নেই। এই অবস্থায় শাসকদলকে বেগ দিতে মহম্মদবাজারের সেকেড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের চারটি আসনের কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থনের কথা জানাল সিপিএম।

সেকেড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৪টি। বিপক্ষ প্রার্থী সাত। ওই এলাকার দীঘলগ্রামের চারটি সংসদে তৃণমূল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের কালাম শেখ, সামসিন শেখ, আফিলা বিবি ও আসরফা বিবিকে সমর্থন রয়েছে সিপিএম। স্থানীয় নেতা তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রভাস মাল বলছেন, ‘‘এটাই নীতিগত সিদ্ধান্ত।’’ পঞ্চায়েত সমিতির আসনে কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ হুসমানুদ আলিকেও সমর্থন করছে সিপিএম। দলের নিচুতলার কর্মী, সমর্থকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, নীতি থাকতেই পারে। তবে পুরানো ক্ষোভ থেকেই কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থন জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ভোটে ১৪ আসনের এই পঞ্চায়েতে সিপিএম একক ভাবে আট ও শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক একটি— মোট ৯টি আসন পেয়েছিল। তৃণমূল পেয়েছিল পাঁচটি আসন। বোর্ডগঠন করে সিপিএম। গত ২০১৬ সালের জুন মাসে আনাস্থা এনে পঞ্চায়েতের দখল নেয় শাসকদল। নির্বাচিত পঞ্চায়েত কেন এ ভাবে দখল হবে, ক্ষোভের মূলে সেটাই। শাসকদলের অবশ্য দাবি ছিল, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে সিপিএম এলাকা থেকে মুছে গিয়েছে। বাম শিবিরের পাল্টা অভিযোগ ছিল, ‘‘অনৈতিক ভাবে পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। অনাস্থা, ভোটাভুটি সব লোকদেখানো। ভয় ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করে এমনটা করছে শাসকদল।’’

এই পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের একটিতেও বামেরা মনোনয়ন করতে পারেনি। লড়াইয়ে আছেন, কংগ্রেসের চার প্রার্থী, বিজেপির এক ও দুই নির্দল প্রার্থী। কেন মনোনয়ন জমা করা গেল না, সেই প্রশ্নেও বাম নেতৃত্ব তৃণমূলের গা-জোয়ারিকেই দায়ি করেছেন। নেতৃত্বের দাবি, মনোনয়ন পর্বে গত মাসের ৭ তারিখ মহম্মদবাজারে শাসকদলের ‘বাধা টপকে’ কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়া গেলেও তাড়াহুড়োয় সে দিন সেকেড্ডায় মনোনয়ন জমা করা যায়নি।
পরেও সুযোগ মেলেনি। নেতারা খোলাখুলি বলছেন, ‘‘তৃণমূলকে এ ভাবে জমি ছেড়ে দেওয়া যাবে না দেখেই কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনের রাস্তা নেওয়া হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই পঞ্চায়েতে কিছুটা হলেও কংগ্রেসের জমি রয়েছে। একবার পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। এখনও দীঘলগ্রামের চার কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়া সেটাই প্রমাণ করে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা আব্বাসউদ্দিন বলছেন, ‘‘দীঘলগ্রামের চারটি আসন ও একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’’ বামেদের সমর্থন যে কাজে লাগবে, একান্তে তা-ও মেনে নিয়েছেন তিনি। বলছেন, ‘‘যে ভাবে বামেদের হাত থেকে তৃণমূল পঞ্চায়েত রাশ কেড়ে নিয়েছে, সেটা ভাল ভাবে নেননি এলাকার মানুষ। সে জন্য বামদের সমর্থকেরা আগেই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’

পঞ্চায়েত সমিতির আসনে কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ হুসমানুদ আলি ওরফে হুসমান, গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা শেখ কালামরা বলছেন, ‘‘বিরোধী ভোট ভাগাভাগি রুখতে বামেদের সমর্থন অবশ্যই কাজে লাগবে।’’ তৃণমূলের আবার দাবি, শাসকদলের বিপক্ষে গোটা ব্লক জুড়েই এই কৌশল নিয়েছে বিরোধীরা। এখানে বাম, বিজেপি-কংগ্রেস বলে কিছু নেই। যে যেখানে শক্তিশালী সেখানে তাকে সমর্থন করছে অন্যরা। গোটা ব্লকের অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির আসনে সেই ছবি। মহম্মদবাজারের তৃণমূল ব্লক সভাপতি গৌতম মণ্ডল বলছেন, ‘‘সেকেড্ডা আমাদের দখলেই রয়েছে। সাতটিতে তো প্রতিযোগিতাই নেই। সেকাড্ডায় দিঘলগ্রামের চারটি সংসদে ব্যতিক্রমী কিছু হলেও ফলাফল বদলাবে না।’’

সিপিএম নেতা প্রভাস মাল বলছেন, ‘‘ফল বিষয় না। লড়াই হোক, সেটাই লক্ষ্য। তাই সমর্থন করছি আমরা।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 Congress CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy