নুরুল ইসলাম
মিতবাক, হাসিখুশি সাড়ে পাঁচ ফুটের মানুষটি আলাদা ভাবে চোখে পড়ার মতো নন। কিন্তু, শাসকদলের এই নেতাই সিউড়ি ২ ব্লকের শেষ কথা বলে মানেন বিরোধীরাও। তৃণমূল কর্মীরা একান্তে মানে, ‘‘ওঁর সৌজন্যেই এক সময়ের দাপুটে সিপিএম বা বর্তমানে চর্চিত বিজেপি— বিরোধীদের কারও কোনও ‘অস্তিত্ব’ নেই।’’ তিনি নুরুল ইসলাম।
গত পঞ্চায়েত ভোটের ফল ও এ বার ভোটের মনোনয়ন পর্ব শেষে যে পরিসংখ্যান উঠে এসেছে সেখানেও বিরোধী না থাকারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। ২০১৩ সালে ৬৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের একটিতে জয়ী হয়েছিল সিপিএম। ১৫টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনও শাসকদলের দখলে ছিল। এ বার এক জন বিরোধী প্রার্থীও মনোনয়ন জমা দেননি। বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, ‘‘উন্নয়নের বাধা ডেঙিয়ে কী ভাবে প্রার্থী দেব? গোটা ব্লক জুড়ে চাপা সন্ত্রাসে ৬৬, ১২০ জন ভোটদানের অধিকার থেকেই বঞ্চিত হলেন।’’
নুরুল অবশ্য বলছেন, ‘‘ব্লক জুড়ে উন্নয়ন হয়েছে, এটা জলের মতো স্পষ্ট। কিন্তু, কেউ বাধা দিয়েছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে।’’ একটু থেমে যোগ করছেন, ‘‘একটাও অভিযোগ আছে নাকি! একটা নাম বিরোধীরা বলুন। অন্য কোথায় কী হয়েছে জানি না। এই ব্লকে এমন একটি ঘটনাও নেই।’’ দলের নেতাকর্মী জানাচ্ছেন, নুরুল এমনই। দুর্দান্ত সংগঠক। জনসংযোগও তেমন। কখনও মাথা-গরম করতে দেখা যায় না। কথা কম বলেন। কিন্তু, যা বলেন গুছিয়ে। অবিনাশপুর, বনশঙ্কা, দমদামা, কেন্দুয়া, কোমা এবং পুরন্দরপুর ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যাই ঘটুক, সবটা জানেন দলের ব্লক সভাপতি। সমস্যা সমাধানের চটজলদি দাওয়াইও তাঁর হতে। এটাই ওঁর ক্যারিশমা।
বহু কাল রাজনীতি করছেন নুরুল। এক সময় যুব কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি ছিলেন। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই ব্লক সভাপতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বামেদের যত শক্তিক্ষয় হয়েছে, গোটা ব্লকজুড়ে আধিপত্য কায়েম করেছেন ওই নেতা। কী ভাবে এতটা পথ এলেন? নুরুল বলছেন, ‘‘এটা তো খুব সহজ। সাধারণ মানুষের পাশে থাকা। দলের নেতাদের কথা মেনে চলা। সঙ্গে সরকারের জনমুখী প্রকল্প তো রয়েইছে। সেই কারণে বামদের থেকে সরে এসেছেন মানুষ। বিজেপিতে যাওয়ারও কোনও প্রয়োজন নেই।’’ বিরোধীরা হাসছেন। বলছেন, ‘‘আসল ছবি তো বোঝা যাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে।’’ যা শুনে নুরুল বলছেন, ‘‘কিছু তো বিরোধীদের বলতেই হবে, তাই না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy