মঞ্জুর স্বামী চাষাবাদ করেন। বাড়িতে তাঁর দুই হাইস্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সকলে আমাকে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার জন্য ধরায় তা ফেলতে পারিনি। তবে পরিবারের সম্মতি নিয়েই প্রার্থী হয়েছি।’’ জেতার ব্যাপারে অবশ্য মঞ্জুদেবী আত্মবিশ্বাসী।
এক বাড়িতে থাকলেও মেজ জা আশা ও ছোট জা জারুর হেঁশেল আলাদা। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দুই জা সংসারের কাজ সামলাতে ব্যস্ত। দেখে বোঝার উপায় নেই, তাঁরা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন।
আশার স্বামী চাষাবাদের পাশাপাশি ছোট মুদির দোকান চালান। তাঁদেরও দুই ছেলেমেয়ে স্কুলে পড়ে। শ্বশুরবাড়িতে না থাকলেও আশার বাপের বাড়িতে অবশ্য রাজনীতির চর্চা রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বরাবাজারে আমার বাপের বাড়ি। দাদা আগে কংগ্রেস সমর্থক ছিলেন, এখন বিজেপি করেন। তাই আমাকে যখন বিজেপি থেকে প্রার্থী হতে বলল, ঠিক করলাম দাঁড়িয়েই পড়ি। এটা তো নতুন অভিজ্ঞতা।’’
তাঁর কথাবার্তার মাঝে পাশে এসে দাঁড়ালেন কংগ্রেসের প্রার্থী ছোট জা জারু। তাঁর স্বামীও চাষাবাদ করেন। দু’টি ছোট মেয়ের পরে তাঁর ন’মাসের একটি ছেলে রয়েছে। সেই ছেলেকে খাওয়াচ্ছিলেন তিনি। জারু বলেন, ‘‘আমি কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছি। শীঘ্রই প্রচারে নামব।’’
তখন সংসার সামলাবেন কী ভাবে? তিন জা জানান, সংসারের কাজ সামলেই প্রচারে বেরোবেন। আর জারুর ছোট্ট ছেলেকে কে দেখবে? মেজজা আশা বলেন, ‘‘জারু যখন প্রচারে যাবে, তখন ওর ছোট্ট ছেলেটাকে আমিই দেখব। ভোটের লডাইটা বাইরে। বাড়ির মধ্যে তাকে টেনে আনব কেন?’’
আড়শা পঞ্চায়েতে গতবারে প্রথমে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল ও সিপিএম। পরে অনাস্থা আসার পরে শেষ দু’বছরে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম। রুগড়ি আসনে জিতেছিল কংগ্রেসই। এ বার কী আশা করছেন নেতারা?
আড়শার বাসিন্দা তৃণমূলের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সুষেণচন্দ্র মাঝি বলেন, ‘‘রুগড়ি সংসদের আসনে তিন জায়ের লড়াই নিয়ে এলাকায় জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে ওই আসনে আমরাই জিতব।’’ আড়শা ব্লক কংগ্রেস নেতা সলিলকুমার মাঝিরও দাবি, ‘‘এলাকায় আমাদের সংগঠন এখনও ভাল। জয় নিয়ে তাই চিন্তা নেই।’’
আর বিজেপির আড়শার মণ্ডল সভাপতি সেবাদাস গোপেরও সেই একই দাবি।
ভোট দেবেন কাকে? ভাঙতে নারাজ পরিবারের সদস্যেরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘ভোট কাকে দেব, সে কথা কি পাঁচকান করার?’’