Advertisement
E-Paper

ভোটের মুখে সংঘর্ষ চলছে দু’জেলাতেই

রঘুনাথপুর ২ ব্লকের চিতরমা গ্রামে রবিবার বিকেলে এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে পুঞ্চাতেও বিজেপি প্রার্থীর এজেন্টের বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধরে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০০:১৭
খণ্ডচিত্র: অশান্তি এড়াতে সশস্ত্র বাহিনীর টহল বাঁকুড়ার পোয়াবাগান গ্রামে।

খণ্ডচিত্র: অশান্তি এড়াতে সশস্ত্র বাহিনীর টহল বাঁকুড়ার পোয়াবাগান গ্রামে।

নির্বাচনের মুখেও রাজনৈতিক সংঘর্ষ বন্ধ হল না দুই জেলায়।

রঘুনাথপুর ২ ব্লকের চিতরমা গ্রামে রবিবার বিকেলে এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে পুঞ্চাতেও বিজেপি প্রার্থীর এজেন্টের বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধরে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। জখম হন তিন জন। আবার, বেলিয়াতোড়ের ভালুকাপাহাড়ি গ্রামে শাসকদলের এক কর্মী বোমার ঘায়ে জখম হয়েছেন। সেখানে অভিযুক্ত বিজেপি।

এ দিন বিকেলে চিতরমা গ্রামের দলীয় কার্যালয়ের অদূরে কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলছিলেন বিজেপির সক্রিয় কর্মী পরেশ মুদি। দলের মণ্ডল সভাপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বিনাপ্ররোচনায় তৃণমূলের কর্মীরা এসে রড ও লাঠি নিয়ে পরেশের উপরে চড়াও হয়। দলীয় কর্মীরাই পরেশকে উদ্ধার করে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান।’’ রঘুনাথপুর ২ ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি স্বপন মেহেতা দাবি করেন, ‘‘চিতরমা গ্রামে একটা গোলমালের ঘটনা ঘটেছিল। তবে তার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।”

শনিবার রাতে পুঞ্চার ধাদকি গ্রামে বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির এক প্রার্থীর এজেন্ট রাজেশ পালের বাড়িতে এক দল দুষ্কৃতী চড়াও হয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। ধান ব্যবসায়ী রাজেশ পাল জানিয়েছেন, শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে তাঁরা ঘুমানোর তোড়জোড় করছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গ্রামেরই কয়েকজন তৃণমূল কর্মী দরজায় ধাক্কা মেরে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ওদের হাতে লাঠি ও লোহার রড ছিল। কী দরকার জানতে চাওয়ায় ওরা আমাকে ঘিরে ধরে বলে, ‘খুব বড় নেতা হয়েছিস। বিজেপি করলে জন্মের মতো পার্টি করা ঘুচিয়ে দেব’। এই বলে ধাক্কা মেরে আমাকে ফেলে দিয়ে লাঠি পেটা করতে থাকে।’’ তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী পাল বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়।

রাজেশের মা কনকলতা পাল অন্য ঘরে শুয়েছিলেন। গোলমাল শুনে তিনি ছুটে আসেন। ছেলে এবং বৌমাকে মারধর করতে দেখে তিনি ওদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। রাজেশবাবুর অভিযোগ, ‘‘ওরা আমার বৃদ্ধা মাকেও রেহাই দেয়নি। তাঁকেও ঠেলে ফেলে দেয়। মা পড়ে গিয়ে আর উঠতে পারেননি।’’ বাড়িতে গোলমালের জেরে পড়শিরা ছুটে আসেন। তখন দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। রবিবার সকালে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। দুষ্কৃতীরা গোলমালের ফাঁকে ব্যবসার জন্যে বাড়িতে রাখা কিছু টাকাও নিয়ে গিয়েছে বলে তাঁর দাবি।

বিজেপির পুঞ্চা ব্লক সভাপতি জনপ্রিয় ঘোষ বলেন, ‘‘শনিবার রাতেই জখম তিন জনকে পুঞ্চা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়েছে। আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।’’ এ দিন সকালে বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা রাজেশের বাড়িতে যান। তৃণমূলের কর্মীরাও এলাকায় জমায়েত করেন। গোলমালের আঁচ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে দু’পক্ষকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়। জনপ্রিয় বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’ তবে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, ওই ঘটনায় আমাদের দলের কেউ যুক্ত নয়। সম্ভবত ওঁদের দলীয় কোন্দলেই হামলা হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় বেলিয়াতোড়ের ভালুকাপাহাড়ি গ্রামে বোমাবাজিতে জখম তৃণমূল কর্মী অবনী ঘোষকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই এলাকা গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের অন্তর্গত।

গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী তথা ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণ বড়ুর অভিযোগ, “গ্রামের হরিমন্দিরে জনা কুড়ি তৃণমূল কর্মী বসেছিলেন। হঠাৎ বোমা ফাটার শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি দু’টি মোটরবাইকে আসা মুখে রুমাল বাঁধা দুষ্কৃতীরা আমাদের লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ছে। বোমার স্‌প্লিন্টারের আঘাতে আমাদের কর্মী অবনী আহত হন।’’ তাঁর দাবি, হামলার আগে এলাকায় বিজেপি মিছিল করে। সেই মিছিলেই ওই দুষ্কৃতীরা ছিল।

অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির বড়জোড়া ২ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি সঞ্জয় পাল দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগে আমাদের ফাঁসাতে চাইছে। বরং আমাদের কর্মীরা দলীয় পতাকা টাঙানোর সময়ে তৃণমূলের ছেলেরাই শাসানি দেয়। পরে গ্রামের এক প্রান্তে দু’টি বোমা ফাটায় ওরা। ওদের কেউ আহত হয়নি।”

পুলিশ জানিয়েছে, তৃণমূলের তরফে বোমাবাজির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy