Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Bidyut Chakraborty

মোদীকে চিঠির পরেই শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে তোপ বিদ্যুতের, ‘কুমিরের কান্না’ বলে কটাক্ষ

বৃহস্পতিবারই বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন উপাচার্য। ন’পাতার ওই চিঠিতে উপাসনা গৃহের ইতিহাস নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন বিদ্যুৎ।

Picture of Bidyut Chakrabarty.

বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৩ ০২:১০
Share: Save:

বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহে বসে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ‘রাজনৈতিক মন্তব্য’ করা নিয়ে ক্ষোভ উগরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। তার পর ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি, আবারও ট্রাস্ট-সহ প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের আক্রমণ করলেন উপাচার্য। ট্রাস্টের বক্তব্যকে ‘কুমিরের কান্না’ বলে কটাক্ষ করে সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যুৎ। পাল্টা জবাব দিয়েছে ট্রাস্টও।

বৃহস্পতিবারই বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন উপাচার্য। ন’পাতার ওই চিঠিতে উপাসনা গৃহের ইতিহাস নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন বিদ্যুৎ। সেই সঙ্গেই বিশ্বভারতীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কর্মী-আধিকারিকদের গরহাজিরারও সমালোচনা করেছেন তিনি। কর্মী-আধিকারিকদের কুম্ভকর্ণের সঙ্গে তুলনা করে বিদ্যুৎ লিখেছেন, ‘‘আমি জানি না, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়মিত বার্তাতে কুম্ভকর্ণেরা জেগে উঠবেন কি না। জেগে উঠলে গুরুদেব সত্যিই খুশি হবেন।’’ তাঁর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলির পুনর্নির্মাণের জন্য সাহায্য চাওয়া হলেও কেউ অর্থ সাহায্যে এগিয়ে আসেননি।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে ট্রাস্টের অভিযোগ, উপাসনা গৃহে বসে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কথাবার্তা বলেছেন উপাচার্য। যা নীতিবিরুদ্ধ। চিঠিতে বিদ্যুতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জিও জানানো হয়েছে। ট্রাস্টের এই বক্তব্যকে ‘কুমিরের কান্না’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিদ্যুৎ। ট্রাস্টের সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও উপাচার্যের বার বার উপাসনা গৃহে চলে আসা নিয়েও যে প্রশ্ন উঠেছে, তার প্রেক্ষিতে খোলা চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘বিভ্রান্তি দূর করে বলি, উপাচার্যকে ট্রাস্টি হতেই হবে, এমন কোথাও উল্লেখ নেই। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি ট্রাস্টের সদস্য হব না। কারণ, ট্রাস্টের বেশ কয়েক জন সদস্য দুর্নীতি ও জালিয়াতিতে অভিযুক্ত।’’

পাল্টা জবাবে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, ‘‘এর থেকে প্রমাণিত, উপাচার্য প্রতিহিংসাপরায়ণ ব্যক্তি। কারণ, এর আগে কখনওই শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট নিয়ে তিনি উচ্চবাচ্য করেননি। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখতেই ওঁর ঘুম ভেঙেছে। তাই ওঁর বিষয়ে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।’’

খোলা চিঠিতে নাম না করে অমর্ত্য সেনের প্রসঙ্গও এনেছেন বিদ্যুৎ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের জমি বিবাদ নিয়ে উপাচার্যের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমার লক্ষ্য, জমি হাঙরদের কাছ থেকে জমি পুনরুদ্ধার করা। বিশ্বব্যাপী স্বনামধন্য যে সব মানুষ অতিরিক্ত জমি উপভোগ করছেন, তাঁদেরও জমি ফেরত দিতে হবে। তাঁরা ভাল ভাবে ফেরত দিলে স্বাগত জানাব। নয়তো আইন প্রয়োগ করে তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, এর জন্য দেশে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বিশ্বভারতীর চারপাশে যে অশুভ শক্তিগুলি মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, তাঁদের প্রভাব ক্ষণস্থায়ী।‌ কেউ যদি মনে করেন, বিশ্বভারতী তাঁদের লালন-পালনের জায়গা, তা হলে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bidyut Chakraborty santiniketan Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE