E-Paper

সমাজমাধ্যমে প্রচারে জোর বাড়াচ্ছে শাসক, বিরোধীও

সাম্প্রতিক পুরসভা ভোট ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় কার্যত ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। পরপর দু’টি নির্বাচনে জিতে অনেকটাই চাঙ্গা শাসকদলের নেতা-কর্মীরা।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৩৯
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আসন্ন লোকসভা ভোটে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। লক্ষ্য পূরণে স্বেচ্ছাসেবক-সহ দলের নেতা-কর্মীদের সমাজমাধ্যমে আরও বেশি করে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তার পরে সমাজমাধ্যমে ‘বিকশিত ভারত’, রামমন্দিরের উদ্বোধন-সহ নানা বিষয়ে প্রচারে সক্রিয় হতে বার্তা পৌঁছতে শুরু করেছে দলের একেবারে নিচু স্তর পর্যন্ত।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্য সফরে এসে দলের সমাজমাধ্যমের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে আলোচনায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা ও অমিত শাহ সমাজমাধ্যমে তৃণমূলের ‘দুর্নীতির’ বিরুদ্ধে আগ্রাসী প্রচারের পরামর্শ দেন। প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবককে ‘নমো’ অ্যাপ ডাউনলোডের নির্দেশ দেওয়া হয়। রামমন্দিরের উদ্বোধনের পরে তা নিয়েও সমাজমাধ্যমে সর্বাত্মক প্রচার চালাতে বার্তা দেওয়া হয়েছে।

বিজেপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, ‘আইটি সেল’ মূলত দলের সাংগঠনিক কাজকর্মের দিকটা দেখভাল করে। আর ‘সোশ্যাল মিডিয়া সেল’ অন্য বিষয়ে সার্বিক প্রচার চালিয়ে কেন্দ্র সরকার ও দলের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরির কাজ করে। দলের রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানান, গত লোকসভা ভোটের আগে তাঁদের ‘সোশ্যাল মিডিয়া সেল’ যে ভাবে আগ্রাসী প্রচার চালিয়েছিল, তার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি তৃণমূলের ‘আইটি সেল’। ওই ভোটে পুরুলিয়ায় তৃণমূলকে দু’লক্ষের বেশি ভোটে হারানোর মূলে অন্য বিষয়ের সঙ্গে সমাজমাধ্যমের স্বেচ্ছাসেবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

এ বারে পরিস্থিতি যদিও আলাদা। সাম্প্রতিক পুরসভা ভোট ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় কার্যত ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। পরপর দু’টি নির্বাচনে জিতে অনেকটাই চাঙ্গা শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। সেই প্রেক্ষিতে এ বারে বিজেপির ‘সোশ্যাল মিডিয়া সেল’-এর ভূমিকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, মত দলীয় নেতৃত্বের। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা বলেন, “কয়লা, বালি, পাথর পাচার থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্র। আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। অনেকে জেলবন্দিও। প্রচারে আমরা সেই বিষয়টিকে একেবারে নিচুতলা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চাইছি।”

বিবেক আরও জানান, তাঁরা চাইছেন দলের সমাজমাধ্যমের স্বেচ্ছাসেবকেরা আরও বেশি করে প্রচারে সময় দিক। তিনি বলেন, “নমো অ্যাপ ছাড়াও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ‘সরল’ অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন নেতা-কর্মীরা। ওই অ্যাপে কারা কোন ক্ষেত্রে কী কর্মসূচি করছেন, তার বিশদ বিবরণ নথিবদ্ধ করা যায়। এতে বোঝা সম্ভব হবে কোন এলাকায় দলের কাজকর্ম কী ভাবে এগোচ্ছে।” তিনি জানান, এক দিকে রাজ্য সরকারের দুর্নীতি আর অন্য দিকে, ন’বছরে কেন্দ্র সরকারের জনহিতকর কার্যকলাপ ও বিকশিত ভারতের মতো বিষয়গুলি নিয়ে সার্বিক প্রচারে নামার রূপরেখা তৈরি।”

সমাজমাধ্যমের লড়াইয়ে পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। দলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, সমাজমাধ্যমে দলের কার্যকলাপ ও মুখ্যমন্ত্রীর জনহিতকর প্রকল্প নিয়ে ধারাবাহিক প্রচারের সুফল মিলেছে পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে। তারই ধারাবাহিকতায় লোকসভা নির্বাচনের আগে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই এগোনো হচ্ছে।

তাঁর কথায়, “যে কোনও ভোটের আগেই বিজেপি সমাজমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে লোকজনকে বিভ্রান্ত করে। আমরা সমাজমাধ্যমেই পাল্টা প্রচার করে সত্য সামনে আনব। কী ভাবে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতিতে গরিব, নিম্ন ও মধ্যবিত্তেরা সঙ্কটে পড়ছেন, তা নিয়ে মূলত প্রচার চালাবে তৃণমূল। সঙ্গে তুলে ধরা হবে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কী ভাবে নানা প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকার মানুষের পাশে থাকছে, তার বিশদ বিবরণ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP purulia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy