রাজপথে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ, শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বিজেপি-র নিচুতলার ক্ষোভের আঁচ পৌঁছল কলকাতার রাজপথেও।
বীরভূম থেকে কয়েকশো নেতা-কর্মী শুক্রবার কলকাতার মুরলীধর সেন লেনে, রাজ্য বিজেপি-র সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন, দাবি তুললেন, জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলকে অপসারণের। ঘটনাচক্রে এ দিনই নবনির্বাচিত মণ্ডল সভাপতিদের সম্মতিক্রমে নিজের আসন টিকিয়ে রেখেছেন শ্যামাপদবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘আমি প্রথমেই জেলা কমিটি গঠন করব এবং সংগঠনকে মজবুত করতে এই মাসের মধ্যেই মণ্ডল সম্মেলন সম্পন্ন করব।’’
জেলা সভাপতি সংগঠন মজবুতের কথা বললেও পদ হারানো দলীয় কর্মীদের কলকাতা অভিযানকে ঘিরে দলের দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এসেছে। ২৬ নভেম্বর সিউড়িতে জেলার ৪৯ জন মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষিত হয়। আগে যাঁরা ওই পদে দায়িত্ব ছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগকে সরিয়ে নতুনদের নিয়ে আসায়, ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছিল। ২৯ তারিখ প্রকাশ্যে শ্যামাপদবাবুকে ‘পদ থেকে সরানোর’ দাবি তুলে মিছিল করেন দলের পদচ্যুত নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, জেলা সভাপতি নিজের স্বার্থে নিজের পছন্দের লোকজনেদের মণ্ডল সভাপতি পদে বসিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে এসেছেন। অথচ যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে দল করেছেন, তাঁদেরকে পদে রাখা হয়নি।
বিজেপি সূত্রের খবর, আগের ৪০টি মণ্ডলের ৩৩ জন সভাপতিকেই সরানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারই রামপুরহাটে এমন কয়েক জন বিক্ষুব্ধ প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতিদের নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করেন শ্যামাপদবাবু। তার পরেও সমস্যা মেটেনি। পদচ্যুতদের বড় অংশই এ দিন কলকাতায় দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান। বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেই দলে বক্রেশ্বর মণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি জয়ন্ত আচার্য, বিষ্ণু লেট, মহম্মদবাজার ‘বি’-এর জগন্নাথ মণ্ডল, ইলামবাজার ‘এ’ ও ‘বি’-র প্রাক্তন মণ্ডল সভপতি শিবদাস ঘড়ুই, অভিজিৎ খাঁ, বোলপুর টাউনের সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা ছিলেন।
শ্যামপদবাবুর বক্তব্য, ‘‘যা কিছু হয়েছে, দলের গঠনতন্ত্র মেনে, নির্দিষ্ট নিয়ম কানুনের মধ্যে। নাম করছি না, তবে দলের কিছু নেতার ইন্ধনেই এমনটা ঘটেছে। তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা হবে।’’ তিনি জানান, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক পদে তিন বছরের বেশি কেউ আসীন থাকতে পারেন না। ব্যতিক্রম আছে, যদি না কেউ খুব ভাল কাজ করে থাকেন। রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের একটা চিঠি পেয়েছি। তাতে কোথাও শ্যামাপদবাবুকে সরানোর দাবি করা হয়নি। বরং জেলার তিন মণ্ডল সভাপতিকে নিয়ে ওঁদের ক্ষোভ। ওই তিন জনকে সরানোর দাবি করেছেন। সেটা পরে ভেবে দেখা হবে।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূলের উস্কানিতেও এ দিনের বিক্ষোভ হয়ে থাকতে পারে। তবে, বিক্ষোভকারীদের বোঝাতে তাঁদের ‘তিন মিনিট’ লেগেছে।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘অন্য দলের বিষয়ে বিশেষ কিছু বলা উচিত নয়। তবে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা এখন বিজেপিতে। ফলে ওই দলে কোনও অনুশাসন নেই। সেই ছবিটাই স্পষ্ট হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy