E-Paper

সেনার সাফল্যে মন্দিরে পুজো, মিষ্টিমুখ পদ্মের

দল সূত্রের খবর, বুধবার কলকাতায় বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলার শীর্ষ নেতারা থাকায় পাকিস্তানে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাতের ঘটনায় উচ্ছ্বাস জানিয়ে সে ভাবে রাস্তায় নামতে পারেনি দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৫ ০৯:৩৮
পুরুলিয়ার বড়কালী মন্দিরে পুজো দিলেন বিজেপি কর্মীরা।

পুরুলিয়ার বড়কালী মন্দিরে পুজো দিলেন বিজেপি কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

পাকিস্তানে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত এখনও ‘শেষ’ হয়নি। পাকিস্তান বাড়াবাড়ি করলে ফের প্রত্যুত্তর দেবে ভারতীয় সেনা। তাই সেনাবাহিনীর সাফল্য প্রার্থনা করে ও সেনার মঙ্গল কামনা করে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।

দল সূত্রের খবর, বুধবার কলকাতায় বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলার শীর্ষ নেতারা থাকায় পাকিস্তানে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাতের ঘটনায় উচ্ছ্বাস জানিয়ে সে ভাবে রাস্তায় নামতে পারেনি দল। পরিবর্তে এ দিন নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। পুরুলিয়ার বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর মাহাতো জানান, জেলার সমস্ত মণ্ডলেই মন্দিরে পুজো হয়েছে। পুরুলিয়া শহরের কালীমন্দির, আড়শার দেউলঘাটার মন্দির, পুঞ্চার বুধপুরে শিবমন্দির, বলরামপুরের রামমন্দিরে পুজো দেওয়া হয়। শঙ্কর বলেন, ‘‘পাকিস্তানে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরে এ দিনও পাকিস্তানের এয়ার রেডার ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। তাই সেনাবাহিনীর সাফল্য কামনা করে, তাদের মঙ্গল কামনায় মন্দিরে মন্দিরে পুজো দেওয়া হয়।’’ বুধবার রাতে বাঁকুড়ার ভৈরবস্থানে দলের কর্মীদের নিয়ে বাজি ফাটিয়ে, মিষ্টি বিতরণ করেন বিজেপির বিধায়ক নীলাদ্রীশেখর দানা। সেনাদের আরও শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহাযজ্ঞ হল খাতড়ায়।

রাজনৈতিক মহলের মতে, পাকিস্তানে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাতকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে বিজেপি সক্রিয় ভাবে মাঠে নেমেছে। পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ের উপরে জঙ্গি হামলার পরে ভারতীয় সেনা সার্জিকাল স্ট্রাইক করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় ‘নতুন ভারত’ জবাব দিতে জানে— এই প্রচার করে তার সুবিধা পরবর্তী নির্বাচনে অনেকটাই ঘরে তুলতে পেরেছিল বিজেপি। এ বারও পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে তৈরি হওয়া আবেগকে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে সুকৌশলে কাজে লাগাতে মাঠে নেমেছে বিজেপি।

যদিও বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শঙ্করের দাবি, ‘‘সেনার মঙ্গল কামনায় দলমত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলকেই শামিল হতে আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেক সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা অর্থহীন।”

বিজেপির এই কর্মসূচি নিয়ে কিছুটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের মধ্যে। মানবাজারের প্রাক্তন সেনাকর্মী নিতাইচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘সেনার সাফল্য কামনা করে পুজোর ঘটনা সেনার মনোবল বাড়াবে। কারা পুজো দিচ্ছেন, তাঁরা কোন দলের, তা বিচার্য নয়।” আবার বাঁকুড়ার এক প্রাক্তন সেনাকর্মী বলেন, ‘‘শুধু এখন নয়, অতীতেও যারা দেশের ক্ষমতায় থেকেছে তারা সবাই সেনার সাফল্যকে নিজেদের দলীয় সাফল্য বলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।’’ তবে ওই প্রাক্তন সেনাকর্মী মনে করাচ্ছেন, দেশের সেনাবাহিনীতে এখন অনেক আধুনীক মানের অস্ত্রসম্ভার আছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে সেনাকে আধুনীক অস্ত্র সম্ভারে সজ্জিত করার কাজ সরকারই করে। তাই সেনার সাফল্যের পিছনে সরকারের ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India Pakistan Operation Sindoor Pahalgam

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy