Advertisement
E-Paper

ভোটের খরচ, টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ

জেলা বিজেপির বিশ্বস্ত সূত্র জানাচ্ছে, গত ২৪ জানুয়ারি, রবিবার নানুরের লক্ষ্মীতলায় বেশ কিছু কর্মীর হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন জেলার দুই সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায় এবং অষ্টম মণ্ডল।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৭:১৭
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নির্বাচনের কাজে টাকা খরচ করেও কেন সেই টাকা ফেরত পেলেন না—এই প্রশ্ন তুলে গত লোকসভা নির্বাচনের মাস কয়েক পরে দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের একাংশের হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল। সেই একই দাবিতে সম্প্রতি দলের দুই জেলা নেতাকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলা বিজেপির বিশ্বস্ত সূত্র জানাচ্ছে, গত ২৪ জানুয়ারি, রবিবার নানুরের লক্ষ্মীতলায় বেশ কিছু কর্মীর হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন জেলার দুই সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায় এবং অষ্টম মণ্ডল। গালিগালাজ করার পাশাপাশি ওই দুই নেতার কলারেও হাত পড়েছিল বলে সূত্রের খবর। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা, প্রাক্তন জেলা সভাপতি অর্জুন সাহা প্রমুখ। অষ্টম মণ্ডলের বিরুদ্ধে একাধিক অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে সামাজিক মাধ্যমেও সরব হয়েছেন স্থানীয় কিছু বিজেপি কর্মী। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন ঘটনা যে দলের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন নয়, তা মানছেন দলের একাংশই।
বিজেপি-র নিচুতলার কর্মীদের একাংশের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে স্থানীয় নিজেপি কর্মীরা নিজেদের পকেটের পয়সা খরচ করে দেওয়াল লিখন থেকে প্রচার সবটাই করেছেন। দলের তরফে বুথে খরচের জন্য যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকা অনেককেই দেওয়া হয়নি। ওই টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে। এই নিয়ে অনেক কর্মীর মনেই ক্ষোভ চরমে উঠেছে। দীর্ঘদিন কেটে গেলেও যাঁদের জন্য টাকা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ, তাঁদের উপরে ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে বলে জানাচ্ছেন একাধিক কর্মী।
যদিও ২৪ তারিখ এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি দলের জেলা সভাপতির। কিন্তু, সেদিন সন্ধ্যায় একটা কিছু যে ঘটেছে, সেটা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন দলের দুই সাধারণ সম্পাদকই। অষ্টম বলছেন, ‘‘এগুলো সব অপপ্রচার। আমাকে কোনও হেনস্থা করা হয়নি। তবে বড় দলে মানুষের ভুলভ্রান্তি থাকে। সে দিন সামান্য উচ্চবাচ্য হয়েছে।’’ তবে, কী নিয়ে উচ্চবাচ্য, তা ভাঙতে চাননি অষ্টম।
অন্য দিকে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের খরচ নয়, নরেন্দ্র মোদীর বোলপুর সফরের সময় এই অঞ্চল থেকে দলীয় কর্মীরা নিজেদের টাকা খরচ করে বাস নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই টাকা পাওয়া যায়নি। সেটা রামকৃষ্ণ রায় বা শ্যামাপদ মণ্ডল জেলা সভাপতি থাকাকালীনও মেলেনি।’’ তাঁর দাবি, নতুন জেলা সভাপতি হয়েছেন। স্থানীয়েরা সেই জন্যই সে দিন এসেছিলেন। অতনুর আরও দাবি, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের খরচের বিষয় এটা নয়। কারণ, লোকসভা নির্বাচনের খরচ বাবদ টাকা প্রার্থীর হাতেই এসেছিল। এ ব্যাপারে যা বলার প্রার্থী ও মণ্ডল সভাপতি বলবেন।’’
অতনুর এই দাবির সঙ্গে সহমত নন লোকসভা ভোটে বোলপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রামপ্রসাদ দাস। তাঁর বক্তব্য, “মোদীজির সভায় বাসের জন্য নয়, নির্বাচনের অন্য কাজে টাকা খরচ করেও নানুর ও কীর্ণাহারের বহু নিচু তলার কর্মী টাকা পাননি। তাঁদের অধিকাংশই তফসিলি জাতিভুক্ত মানুষ। ২৪ তারিখের ক্ষোভের কারণ ছিল সেটাই।’’ তফসিলি মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি হিসেবে তিনি চান, কেন ওই কর্মীরা টাকা পাননি, তার উপযুক্ত তদন্ত হওয়া উচিত দলের তরফেই।
এখানেই শেষ নয়, অতনুর বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন রামপ্রসাদ। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, যদি বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থী দুধকুমারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়ে থাকে, তাহলে কর্মীরা আপনার কাছে এসে সাধারণ সম্পাদকের কৈফিয়ত চাইবেন কেন। রামপ্রসাদের দাবি, ‘‘এর কারণ, দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে ৬৮ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা আহ্বায়ক অতনু চট্টোপাধ্যায়ের হাতে আমি নিজে তুলে দিয়েছিলাম। তিনি আজও সেই টাকার হিসাব দেননি।’’
এই অভিযোগের বিষয়ে অতনুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘ওঁরা দলের গুরুত্বপূর্ণ কার্যকর্তা। নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ভাবেই পালন করছেন।’’

BJP Birbhum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy