Advertisement
E-Paper

বিজয় মিছিলেই বোমা, জখম তৃণমূলকর্মী

ভোটের ফল বেরিয়েছে প্রায় দু’সপ্তাহ হল। কিন্তু, রাজনৈতিক গোলমালের বিরাম নেই বাঁকুড়ায়। এক দিকে, বিজয় মিছিল করার সময় নিজেদেরই বোমা ফেটে আহত হলেন এক তৃণমূল কর্মী। অন্য দিকে, দলীয় প্রার্থীর এজেন্ট হওয়ার ‘অপরাধে’ মারধর করা হল এক কংগ্রেস কর্মীকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৬ ০২:৪২
তৃণমূলের কর্মী তৈমুর ভাঙ্গি

তৃণমূলের কর্মী তৈমুর ভাঙ্গি

ভোটের ফল বেরিয়েছে প্রায় দু’সপ্তাহ হল। কিন্তু, রাজনৈতিক গোলমালের বিরাম নেই বাঁকুড়ায়।

এক দিকে, বিজয় মিছিল করার সময় নিজেদেরই বোমা ফেটে আহত হলেন এক তৃণমূল কর্মী। অন্য দিকে, দলীয় প্রার্থীর এজেন্ট হওয়ার ‘অপরাধে’ মারধর করা হল এক কংগ্রেস কর্মীকে। দু’টি ঘটনা বিষ্ণুপুর ও তালড্যাংরার। এমনিতে তৃণমূল এ বার হেরে গিয়েছে বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। জয়ী হয়েছেন জোটের কংগ্রেস প্রার্থী তুষারকান্তি ভট্টাচার্য। কিন্তু, রাজ্যে ফের ক্ষমতায় আসার আনন্দে বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুর থানার বাঁকাদহে বিজয় মিছিল করে অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস।

দল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সেই মিছিলেই বোমা ফেটে হাতে মারাত্মক চোট পান তৃণমূলের কর্মী তৈমুর ভাঙ্গির। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে প্রথমে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল ও পরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের দাবি, যেহেতু জোট প্রার্থী জিতেছেন, তাই বিরোধী সমর্থকদের সন্ত্রস্ত করে রাখার উদ্দ্যেশ্যেই এ দিন বোমা নিয়ে মিছিল করে তৃণমূল। নিজেদের আনা বোমা ফেটেই জখম হন তাদের কর্মী। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারবাবুর দাবি, ‘‘এ দিনই রাজপুর গ্রামে আমার এক নির্বাচনী বুথ এজেন্ট হোসেন খানকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে তৃণমূলের গুন্ডারা। আবার এ দিনই বাঁকাদহে বোমা নিয়ে বিজয় মিছিলও করল ওরা। ভয় খাওয়াতে গিয়ে বোমা ফেটে নিজেদের কর্মীই আক্রান্ত হল! এ সব বন্ধ করার আবেদন জানিয়েও কাজ হয়নি। রোজই আক্রান্ত হচ্ছেন আমাদের কর্মীরা। পুলিশকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছি।’’

কংগ্রেস কর্মী হোসেন খান।

যদিও তৃণমূলের বাঁকাদহ অঞ্চল কমিটির সভাপতি অম্বিকা বসাকের দাবি, মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে গাছবোমা ফেটে ওই কর্মী জখম হয়েছেন। এর পিছনে কাউকে ভয় পাওয়ানোর উদ্দেশ্য ছিল না। এ দিন দুপুরে তৈমুরকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলের বাঁকাদহ অঞ্চল কমিটির সম্পাদক শুকুর আলি খান। তিনি বলেন, ‘‘ওই কর্মীর বাড়ি ভালুকা গ্রামে। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাজি ফেটে ডান হাতের তালুর ক্ষতি হয়েছে। এখান থেকে রেফার করা হয়েছে বাঁকুড়ায়। দলের পক্ষে আমরা আক্রান্ত কর্মীর সঙ্গে রয়েছি।’’ হাসপাতাল সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, জোরালো বিস্ফোরণ ছাড়া হাতের তালুর এত বড়ো ক্ষতি হয় না। তবে, এই ঘটনার কথা জানা নেই বলে জানিয়েছেন এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) বিবেক বর্মা।

অন্য দিকে, তালড্যাংরার রাজপুর গ্রামের ঘটনায় আহত কংগ্রেস কর্মীও বিষ্ণুপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খবর পেয়ে এ দিন তাঁকে দেখতে আসেন তুষারকান্তিবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কি জঙ্গলের রাজত্বে বাস করছি? বিরোধী দল করলেই এ ভাবে মার খেতে হবে? ভোটের দিন আমাকে বেলেড়ার একটি বুথে মারার চেষ্টা হয়েছিল। এ বার জিতেছি বলে আমাদের কর্মীদেরও লাগাতার শাসানো ও মারধর করা চলছে। আমি জেলা পুলিশের কর্তাদের জানিয়েছি। এ সব বন্ধ না হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’’

হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি ষাটোর্ধ্ব হোসেন খানের অভিযোগ, ‘‘আমি কেন তুষারবাবুর বুথ এজেন্ট হয়েছিলাম, সে প্রশ্ন তুলে গ্রামের একটা চায়ের দোকান থেকে ডেকে পাঠিয়ে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে গ্রামেরই জনা ছয়েক তৃণমূল কর্মী। আমার মাথায় পিস্তল বাঁট দিয়েও মারা হয়। দু’হাতই এখন তুলতে পারছি না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

—নিজস্ব চিত্র

Bombing TMC victory rally
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy