Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Kali Puja 2021

Kali Puja 2021: ‘সবুজ’ বাজি কী, ধন্দে বিক্রেতারাই

আমজনতার অনেকেরও প্রশ্ন, পরিবেশবান্ধব বাজি বা সবুজ বাজি কাকে বলে? কোথায় তা পাওয়া যাবে?

রঙিন বাজির ধোঁয়ায় দূষণ।

রঙিন বাজির ধোঁয়ায় দূষণ। ফাইল চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০৬
Share: Save:

ভেষজ আবিরের সঙ্গে তাঁরা তবু হালে পরিচিত হয়েছেন। কিন্তু, ‘সবুজ’ বাজি নামে কিছু আদপে দেখেননি জেলার বিক্রেতাদের অনেকে। জেলার বাজারে এমন কিছু আদৌ এসেছে কি না তাও জানেন না এঁদের অনেকে। ফলে ঝক্কি এড়াতে কেউ বাজি বিক্রি করাই ছেড়েছেন আবার কেউ শুধু প্রদীপ, মোমবাতি রাখছেন দোকানে। তাঁরা বলছেন, ‘‘ঝামেলায় কী দরকার।’’

করোনা সংক্রমণ ও বায়ু দূষণের কথা মাথায় রেখে গত বছর কালীপুজো, দিওয়ালি, ছটপুজোয় সমস্ত রকমের বাজি নিষিদ্ধ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ বার কালীপুজোয় রাত ৮-১০টা, দু’ঘণ্টা বাজি পোড়ানোয় ছাড় দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ।

শুধু কালীপুজো নয়, ছট, বড়দিনেও বাজি পোড়ানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে, শুধু পরিবেশবান্ধব ‘সবুজ’ বাজি ছাড়া আর কোনও প্রকার বাজি পোড়ানো যাবে না বলে পরিস্কার বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।

ধন্দ সেই সবুজ বাজি নিয়েই। বিভ্রান্ত বাজি বিক্রেতারাও। আমজনতার অনেকেরও প্রশ্ন, পরিবেশবান্ধব বাজি বা সবুজ বাজি কাকে বলে? কোথায় তা পাওয়া যাবে? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এমন নানা প্রশ্নের মধ্যেই লুকিয়ে চুরিয়ে কোথাও কোথাও বাজি বিক্রি চলছেই। এমন আবহে আগামী দিনে শব্দবাজির দৌরত্ম্য বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা সচেতন নাগরিকদের অনেকের। এমনিতে ‘সবুজ’ বাজি পোড়ানো বা ফাটানোয় ছাড় দেওয়ার পিছনে যুক্তি হল, বিশেষ ভাবে নির্মিত ওই বাজি ফাটালে শব্দ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে। লিথিয়াম বেরিয়াম লেড ও আর্সেনিকের মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক কম ব্যবহারের ফলে বাতাসে অন্তত ৩০-৩৫ শতাংশ কম দূষণ ছড়ায়।

কিন্তু, সেই নির্দেশিকার বাস্তবায়ন নিয়েই প্রশ্ন। পরিবেশ কর্মীদের কথায়, ‘‘কে পরিবেশ বান্ধব ‘সবুজ’ বাজি পোড়াচ্ছে আর কে সাধারণ সেটা ধরবে কে?’’ একই প্রশ্ন উঠেছে বাজি বিক্রির ক্ষেত্রে। সব জায়গায় পুলিশ, প্রশাসনের নজরদারি কি সম্ভব? পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘গতবার বাজি পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। তার পরেও কী হয়েছে সেটা আমরা দেখেছি। এবার ছাড় পেলে কী হবে সহজেই অনুমেয়। তা ছাড়া সোনার পাথরবাটি বলে যেমন কিছু হয় না, তেমনই সবুজ শব্দ বাজি বলে কিছু হয় না। বাজি পোড়ালে বাতাসে বিষ ছড়াবেই।’’

বোলপুরে ৪০ বছর ধরে বাজি বিক্রি করছেন গুরুচরণ চন্দ্র। তিনি বলছেন, ‘‘নতুন নিয়ম শুনেছি। দুর্গাপুজোয় বাজির কিছুটা বেচাকেনা হলেও কালীপুজোয় হবে কি না বুঝতে পারছি না।’’ সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক বাজি বিক্রেতা বলছেন, ‘‘শব্দবাজি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই চুরি করে বাজি বিক্রি করা ছেড়ে দিয়েছি। কে আর সবুজ, লাল বাজির ঝামেলায় জড়ায়।’’ তবে নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও যে ফুলঝুরি, রংমশাল, চরকি, কালীপটকা, শেল, চকোলেট বোমা লুকিয়ে চুরিয়ে বিক্রি হচ্ছে না সেটা তাঁরা জোর দিয়ে বলছেন না।

এমনিতে জেলায় দুর্গাপুজোর তুলনায় কালীপুজোয় বাজি ফাটানোর হিড়িক কিছু কম। তবে দেদার শব্দবাজি ও আতসবাজি ফেটেছে এ বারের পুজোয়। এ বার কী রোখা যাবে? জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলছেন, ‘‘আমরা নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। নাকা চেকিং চলছে। নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE