Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নির্যাতিতাকে হোমে রাখতে চায় চাইল্ড লাইন

বরাবাজারে সাধুর আশ্রমে নির্যাতিতা কিশোরীকে হোমে আশ্রয় দিতে আগ্রহী হল জেলা চাইল্ড লাইন। চাইল্ড লাইনের দুই কর্তা সোমবার কিশোরীর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাছে ওই প্রস্তাব দেন। কিশোরীকে সব রকমের সুরক্ষা দেওয়া হবে বলেও তাঁরা জানান। যদিও এ দিন কিশোরী বাড়িতে ছিল না। তার মা চাইল্ড লাইনকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাকে মামার বাড়িতে রেখে আসা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বরাবাজার শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০১:১২
Share: Save:

বরাবাজারে সাধুর আশ্রমে নির্যাতিতা কিশোরীকে হোমে আশ্রয় দিতে আগ্রহী হল জেলা চাইল্ড লাইন।
চাইল্ড লাইনের দুই কর্তা সোমবার কিশোরীর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাছে ওই প্রস্তাব দেন। কিশোরীকে সব রকমের সুরক্ষা দেওয়া হবে বলেও তাঁরা জানান। যদিও এ দিন কিশোরী বাড়িতে ছিল না। তার মা চাইল্ড লাইনকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাকে মামার বাড়িতে রেখে আসা হয়েছে। জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটার দীপঙ্কর সরকার এ দিন বলেন, ‘‘আমরা কিশোরীর মাকে বুঝিয়েছি, তিনি চাইলে আমরা কিশোরীকে হোমে রেখে সমস্ত দায়িত্ব নেব। তিনি যে কোনও দিন মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসতে পারবেন। কিছু দিন পরে বাড়িও নিয়ে আসতে পারেন। যাতাযাতের খরচও চাইল্ড লাইনের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।’’ চাইল্ড লাইনের প্রস্তাবে কিশোরীর পরিবার আপ্লুত। তবে, তার মা বলেন, ‘‘মেয়ে এখন বাইরে রয়েছে। ফিরলে ওর সঙ্গে কথা বলেই আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’
প্রসঙ্গত, বরাবাজার থানা এলাকার একটি গ্রামের বাসিন্দা চোদ্দো বছরের এক কিশোরী গত বৃহস্পতিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। তার অভিযোগ ছিল, সে বিগত কয়েক মাস ধরে বরাবাজারের মুরাডি আশ্রমে ছিল। সেখানে সাধু জগন্নাথ দাস তাকে কারণে অকারণে মারধর করত। এমনকী, তার সঙ্গে ওই সাধু কণ্ঠি ও মালা বদলও করেন বলে কিশোরীর অভিযোগ। এক দিন সাধুর হাতে বাঁশ দিয়ে বেদম মার খাওয়ার পরে ওই কিশোরী আশ্রম ছেড়ে পালয়। স্থানীয় একটি মহিলা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় সে বরাবাজার থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরের দিন রাতে মুরাডি আশ্রমের ওই সাধুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গত শনিবার থেকে পুরুলিয়া আদালত ধৃত জগন্নাথকে ১৪ দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

এ দিন সকালে জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটার দীপঙ্কর সরকার এবং সদস্য ধর্না মুখোপাধ্যায়, দু’জনেই কিশোরীর বাড়িতে যান। মেয়েটি না থাকলেও পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পরে সংবাদমাধ্যমকে তাঁরা বলেন, কিশোরীর মায়ের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি, অভিযুক্ত সাধু গ্রেফতার হলেও তারা পুরোপুরি ভয়মুক্ত হননি। এ কারণেই মেয়েকে মামাবাড়িতে রেখে আসতে হয়েছে।’’ ঝর্নাদেবী জানান, চাইল্ড লাইন ওই কিশোরীর সুরক্ষার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস কিশোরীর মাকে দিয়েছে। এ দিকে, কিশোরীর খুড়তুতো দাদা চাইল্ড লাইনের কর্তাদের জানান, তাঁর জেঠিমা দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ। জ্যাঠামশাই কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। তার জন্যই সংসার টানতে জেঠিমার কষ্ট হচ্ছিল। তিনি ভেবেছিলেন, ওই আশ্রমে বোনের আশ্রয় জুটলে চিন্তা দূর হবে। কিন্তু, তার বদলে আশ্রমে বোনের উপরে যে এ ভাবে অকথ্য অত্যাচার চালানো হবে, তা তাঁরা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।

তবে, ঝর্ণাদেবীরা এ দিন স্পষ্টই বলেন, ‘‘আমরা কিশোরীর পরিবারকে জানিয়েছি, ভয়ের কোনও কারণ নেই। কিশোরীর সুরক্ষার জন্য যে কোনও সময় আমাদের সঙ্গে ওঁদের যোগাযোগ করতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE