Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ের খবর পেয়েই হানা চাইল্ড লাইনের

বিয়ের অনুষ্ঠানের সব আয়োজনই সারা। রান্নাও চলছিল। আত্মীয়েরাও কয়েকজন হাজির। বুধবার রাতেই বিয়ের কথা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিবাঁধ শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৬ ০২:২৩
Share: Save:

বিয়ের অনুষ্ঠানের সব আয়োজনই সারা। রান্নাও চলছিল। আত্মীয়েরাও কয়েকজন হাজির। বুধবার রাতেই বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু ভরদুপুরে পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা গিয়ে জানালেন, বিয়ে দেওয়া যাবে না। কারণ পাত্রী এখনও নাবালিকা!

রানিবাঁধ থানার মালবেড়া গ্রামের ঘটনা। ওই নাবালিকার বাবা জেলা চাইল্ড লাইনের কাছে আপাতত তাঁর মেয়ের বিয়ে বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে লিখিত মুচলেকা দিয়েছেন। এ নিয়ে গত পাঁচ দিনে বাঁকুড়া জেলায় আট নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন।

বাঁকুড়া জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর সজল শীল বলেন, “রানিবাঁধের মালবেড়া গ্রামে এ দিন এক নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হবে বলে খবর পাওয়া যায়। এলাকার এক যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় চলছিল। মেয়েটি স্থানীয় হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। চাইল্ড লাইনের দুই প্রতিনিধি ও রানিবাঁধ থানার পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে মেয়েটির পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বন্ধ করেছেন। ১৮ বছরের আগে ওই মেয়ের বিয়ে দেওয়া হবে না বলে লিখিত মুচলেকা দিয়েছে তার বাবা।” ওই কিশোরীর বাবা অবশ্য দাবি করেন, “ভাল পাত্র পেয়েছিলাম বলে দুই পরিবারের সম্মতিতে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিলাম। প্রশাসনের কথা মেনে এখন আর মেয়ের বিয়ে দেব না।”

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতেই বিয়ের অনুষ্ঠানের তোড়জোড় চলছিল। কিছু আত্মীয়ও বাড়িতে চলে এসেছিলেন। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার জন্য রান্নাবান্না হয়ে গিয়েছিল। তারই মধ্যে পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। পরিবারের লোকেরা জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য প্যান্ডেল খাটানো হয়েছিল। রাতের ভোজের জন্য যাবতীয় আয়োজনও সারা হয়ে গিয়েছিল। তাই পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা বিয়ে বন্ধের প্রস্তাব দিলে তাঁরা আকাশ থেকে পড়েন। বিয়ে বন্ধ করা হবে না বলে তাঁরা প্রথমে বেঁকে বসেন। তখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে তাঁদের জানানো হয়। তাতে সুর কিছুটা নরম হয়। ঘণ্টাখানেক বোঝানোর পরে তাঁরা শেষে বিয়ে বন্ধে রাজি হন। মেয়ের এক দাদা বলেন, ‘‘আমরা গরিব বলে আত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা চেয়েচিন্তে বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু একেবারে শেয মুহূর্তে বিয়ে বন্ধ হওয়ায় সর্বনাশ হয়ে গেল।’’

জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর দাবি করেন, বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। তাই প্রত্যন্ত গ্রামে নাবালিকার বিয়ে হলে এখন গ্রামের মানুষই তাঁদের খবর দিচ্ছেন। ফলে নাবালিকাদের বিয়ে রোখা যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child marriage Police Phone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE